অনলাইন ক্লাসে ব্যস্ত গায়ক রূপঙ্কর বাগচী (Rupankar Bagchi)। হঠাৎই এক প্রবীণার ফোন। এই দুঃসময়ে রূপঙ্কর এবং তাঁর পরিবারের কুশল জানতে চাইলেন সেই প্রবীণা। সাবধানে থাকার পরামর্শ দিলেন। মাস তিনেক আগেও এই প্রবীণাই ফোনে কুশল সংবাদ নিয়েছিলেন রূপঙ্করের। এই প্রবীণা এক প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। তাঁর এই ব্যবহারে আপ্লুত রূপঙ্কর ঘটনাটি শেয়ার করেছেন ফেসবুকে। প্রবীণা হলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
এ বিষয়ে রূপঙ্কর TV9 বাংলাকে বললেন, “সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রবল যোগাযোগ রয়েছে, তেমন তো নয়। মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হয়। খুব কম অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছে। উনি স্নেহ করেন আমাকে। ফোনে জানতে চান কেমন আছি, কী করছি। আমার স্ত্রী, মেয়ের কথা জানতে চান। আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছে। ওঁর কাছে তো আমরা সন্তানের মতো। ওঁর জুনিয়র। আমরা কতবার ওঁর খোঁজ নিতে পারি? উনি ঠিক নিজের সময় বের করে খবর নিচ্ছেন। যখন কথা বলছেন, তখন মনে হচ্ছে, নিকট আত্মীয়। মায়ের মতো, খবর নিচ্ছেন। কেমন আছ, খাওয়া দাওয়া করছ কি না। আর কোনও সিনিয়রের কাছ থেকে কখনও এই ব্যবহার পাইনি। আমরা সিনিয়র হওয়ার পর জুনিয়রদের খবর নেব কি না, জানি না। অথবা এখনই কি জুনিয়রদের বা পাশের সহকর্মীর খবর নিই?”
ফেসবুকে রূপঙ্কর লিখেছেন, ‘মাস তিনেক আগে একদিন সকালে একটা ফোন এলো,আমি তখন বাজারে পটলের দরে ব্যস্ত। এক প্রবীণা উৎকণ্ঠিত হয়ে আমার এবং আমার পরিবারের আর সকলের কুশল জানতে চাইলেন। আমি মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করছি কি না, অপ্রয়োজনে বেরোচ্ছি কি না ইত্যাদি। আজ সকালে আমি অনলাইন ক্লাস করাচ্ছিলাম, আবার সেই প্রবীণার ফোন। আবার আমার বিষয়ে জানলেন, আমার স্ত্রী ও কন্যা কেমন আছেন জানতে চাইলেন। বার বার সতর্ক করলেন যেন আমি বাড়ি থেকে না বের হই। বেরোলে যেন অন্যদের থেকে ছ’ফিট দুরত্ব বজায় রাখি। আমি ওঁর কুশল জানতে চাইলে উনি বললেন, ‘আমার কথা ছাড়। তোমাদের অনেক কিছু দেওয়ার আছে বাংলা সঙ্গীত জগৎকে। সাবধানে থেকো। দুটি ঘটনাতেই আমি হতচকিত হয়ে আমি কয়েক মুহুর্ত স্থানুবৎ হয়ে গেলাম। প্রবীণা আর কেউ নন। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আপনাকে আমার প্রণাম জানাই।’
করোনা আতঙ্ক এবং লকডাউনের জেরে আপাতত সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ। কবে পরিস্থিতি ঠিক হবে, কেউ জানেন না। রূপঙ্কর মনে করেন, করোনা ঠিক হয়ে গেলেও বিনোদন দুনিয়ার স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। তাঁর কথায়, “দ্বিতীয় ওয়েভটা অনেক বেশি এফেক্টিভ। স্টুডিওতে গিয়ে কাজ করাও ডিফিকাল্ট এখন। ফান্ডিংও ভয়ঙ্কর খারাপ অবস্থায়। সব ভ্যাকসিনেশন কমপ্লিট না হলে ঠিক হবে বলে মনে হয় না। কালচারাল ফিল্ড তো ফান্ডিংয়ের উপর নির্ভর করে। মানুষের মাথায় ছাদ থাকলে, খাবার থাকলে, পরনের কাপড় থাকলে তবে তো বই পড়বে বা সিনেমা দেখবে, গান শুনবে। এখন তো সেগুলোই চ্যালেঞ্জের জায়গায় চলে গিয়েছে। আমার মনে হয় এন্টারটেনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির রিভাউভ করতে করোনা চলে গেলেও পাঁচ, ছ’বছর সময় লাগবে।”
আরও পড়ুন, ‘জুন আন্টি’কে দর্শকের মার! কী প্রতিক্রিয়া দিলেন ঊষসী?