মহুয়া দত্ত
সব্যসাচী চক্রবর্তী মানে ফেলুদা এবং ওয়াইল্ড লাইফ। দুটো যেন পরিপূরক হয়ে গিয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। তিনি প্রকৃতিপ্রেমী, এটাও আর অজানা নয়। তিনি ভাল ছবি তোলেন তা-ও জানা। তাহলে জানা নয় কোনটা? তাঁর তোলা ছবি এবার প্রদর্শনী হচ্ছে। না, এই নিয়ে তিনি কথা বলতে চান না। কারণ শুধু তিনি নন, প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীদের উপর স্থিরচিত্র প্রদর্শনীতে তাঁর মতো বেশ কয়েকজন প্রকৃতিপ্রেমীর তোলা ছবিও প্রদর্শিত হবে। জানালেন শমীক ঘোষ। আমরা যদিও কোনও সংগঠনের নাম নয়, তবে আমরা বলতে একটা প্রকৃতি প্রেমীর দল, যাঁরা বিভিন্ন পেশার মানুষ হয়েও একত্রিত হয়েছেন প্রকৃতির টানে। প্রকৃতিপ্রেমী এই মানুষগুলো নিজেদের কাজের বাইরে সময় পেলেই বেরিয়ে পড়েন প্রকৃতির কোলে। সেখানে তাঁরা ছবি তোলেন, তবে না, মোবাইল ক্যামেরায় নয়, প্রপার ছবি তোলার ক্যামেরায়। তাঁদের তোলা সেই কিছু ছবি নিয়ে প্রথমবার হচ্ছে এই প্রদর্শনী। এই বিষয়ে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শমীক-কে। তাই তাঁর থেকেই জেনে নেওয়া কেন, কীভাবে এই প্রদর্শনীর কথা ভাবা হয়েছে।
প্রকৃতিপ্রেমী দলের অন্যতম সদস্য শমীক বললেন, “কয়েকজন বন্ধু মিলে শহুরে বন্ধন ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি প্রকৃতির বুকে। কখনও বিপজ্জনক আদিম সবুজ অরণ্য, তো কখনও তুষারবৃত পাহাড়, তালিকায় রয়েছে সোনালী মরুভূমিও। সেখানে গিয়ে তোলা হয় অনেক ছবি। সেই ছবিগুলোর পিছনে থাকে অনেক গল্প। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সেই গল্পগুলোকেই তুলে ধরতে চাই আমরা। সকলের কাছে বার্তা পৌঁছোনো যে পৃথিবীটা শুধু মানুষের নয়, বাকি জীবদেরও বসবাসের জন্য। সেটা কোথাও গিয়ে মানুষ ভুলতে বসেছেন। আমাদের এমনটাই মনে হয়”।
২১ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর, দুপুর ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সাউথ গ্যালারিতে হবে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী-র স্থিরচিত্র প্রদর্শনী। সব্যসাচী চক্রবর্তী ছাড়াও এই প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন তাঁর ছেলে অভিনেতা গৌরব চক্রবর্তী, রয়েছেন হীরক সেনগুপ্ত, চিত্রভানু বসু, চন্দন সেন, প্রসেনজিৎ ঘোষ, নিষ্ঠা দে প্রমুখের মতো আরও কিছু প্রকৃতি প্রেমী বেশ কিছু মানুষ। প্রায় মাস তিনেক ধরে এই প্রদর্শনীর কাজ চলছে। কতগুলো ছবি, কোন ছবি নিয়ে হবে এই প্রদর্শনী তার বাছাই পর্ব চলেছে তিন মাস ধরে।
প্রদর্শিত ছবি কি বিক্রি করা হবে? শমীক জানিয়েছেন যে বিক্রি হবে না। কারণ দলের সকলের টাকা নয়, আসল উদ্দেশ্য হলো মানুষের কাছে বার্তা দেওয়া প্রকৃতিকে ভালবাসার। অন্য প্রাণীদের ভালবাসতে শেখানো। সব্যসাচী চক্রবর্তীর ভাষায়, ‘ছবি তুলে, প্রদর্শনী করে, সচেতনতা বাড়াতে চাই, ভালবাসা বাড়াতে চাই’ ।