মঙ্গলবারের রাত তখন প্রায় ১২টা ছুঁয়েছে। খবরটা প্রথম টিভিনাইন বাংলার তরফেই পান সঙ্গীত জগতের আর এক নক্ষত্র শঙ্কর মহাদেবন। ‘কেকে মারা গিয়েছেন’ শুনতেই গলা ফাটানো অবাক চিৎকার ‘হোয়াট…’, ভেসে এল ফোনের অপর প্রান্ত থেকে। শঙ্কর চুপ। ফের জিজ্ঞাসা “আপনা কেকে? মানে আমাদের কেকে?” তাঁকে ‘হ্যাঁ’ বললেও কিছুতেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না খবরটা। একটানা বলে চলেন, “আপনি ঠিক জানেন? কী বলছেন এসব? আমাদের কেকে? মানে সিঙ্গার কেকে? ও নেই! কী করে? হাউ? কী হয়েছে?”
তাঁকে জানানো হয় মঙ্গলবারেই থমকে গিয়েছে গায়কের দীর্ঘদিনের পথ চলা। শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিথর দেহ রাখা রয়েছে তাঁর। প্রতিক্রিয়া দেওয়ার মতো ভাসা ছিল না তাঁর। শুধু মুখে একটাই কথা, “এটা কী করে হতে পারে”। শুধু শঙ্কর নন, কেকের এই হঠাৎ চলে যাওয়া মানতে পারছে না তামাম বিশ্ব। কলকাতা আসার আগে যে মানুষটা ছিলেন ভীষণ উত্তেজিত সেই মানুষটিই হঠাৎ করে চলে গেলেন এই ভাবে– মানতে অসুবিধে হচ্ছে সকলেরই।
আপাতদৃষ্টিতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেলেও উঠছে আয়োজকদের গাফিলতির অভিযোগও। ভিড় ঠাসা নজরুল মঞ্চে চরম বিশৃঙ্খলা, এসি ঠিকঠাক কাজ না করা, গরমে হাঁসফাঁশ অবস্থার বলিই কি হতে হল মানুষটিকে? কেকে ভক্তরা আজ সরব, উত্তর খুঁজছেন তাঁরা। উত্তর খুঁজছেন তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেও। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩। চলে যাওয়ার বয়স নয়। ইন্ডাস্ট্রির সাতে পাঁচে না থাকা মানুষটি উপহার দিয়েছিলেন কত-শত গান। দেওয়ার বাকি ছিল আরও। আর হল না। তিনি চলে গেলেন। শেষ দিনে কলকাতাকে শুনিয়ে গেলেন তাঁর আইকনিক সব গান।