Burt Reynolds Photoshoot: ৪০ বছর আগে নগ্ন শরীরে ম্যাগাজিনে বার্ট, ছুটে এসেছিলেন মহিলারা, পরিণাম হয়েছিল মারাত্মক
Hollywood: সাল ১৯৭২। 'কসমোপলিট্যান' ম্যাগাজিনের জন্য নগ্ন দেহে শুটিংয়ের অফার আসে বার্টের কাছে।
৪০ বছর আগের কথা। এক ফটোশুট যেন চমকে দিয়েছিল তামাম বিশ্বকে। নগ্ন নারীদেহ ম্যাগাজিনের কভারে পরিচিত হলেও নগ্ন পুরুষ? হজম করতে সময় লেগেছিল পশ্চিমের দেশগুলিরও। আজ যখন রণবীর সিংয়ের ফটোশুট নিয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে, ঠিক তখনই ওই পুরুষালী চেহারা, পেশীবহুল হাত আর কেশযুক্ত শরীর মনে করিয়ে দিচ্ছে ৮০’র দশকের আর এক ব্যক্তিত্বকে। তিনি বার্ট রেনল্ডস (ফ্যাশন ওয়াচডগ ‘Diet Sabya’ তাদের ইনস্টা হ্যান্ডেলে শেয়ার করে এই তথ্য)। যার সেদিনের ফটোশুটও আজও ভুলে যাওয়া অসম্ভব। অভিনেতা থেকে এক রাতেই হয়ে গিয়েছিলেন ‘সেলিব্রিটি’। ছুটে এসেছিলেন মহিলারা। আর যে ম্যাগাজিনের জন্য শুট, সেই ম্যাগাজিনও যেন হঠাৎ করেই পেয়ে গিয়েছিল ‘সেক্স ম্যাগাজিন’-এর তকমা। কী হয়েছিল সেদিন?
সাল ১৯৭২। ‘কসমোপলিট্যান’ ম্যাগাজিনের জন্য নগ্ন দেহে শুটিংয়ের অফার আসে বার্টের কাছে। তাঁর আগে এই অফার দেওয়া হয়েছিল পল নিউম্যানকে। তিনি রাজি হননি। তবে বার্ট রাজি হয়েছিলেন। মুখে চুরুট, সারা দেহে পোশাক নেই। গা এলিয়ে বসে রয়েছেন বাঘছালের উপর, মুখে রহস্যময় হাসি। যৌনতা যেন গোটা ছবি জুড়েই উপচে পড়ছিল। তবে যে যৌনতায় ছিল না কুৎসিতপূর্ণ ইঙ্গিত। পৌরুষত্বে আকর ছিল দুই বাহুতে ঢাকা। বার্টের এই ছবি প্রকাশ পেয়েছিল ম্যাগাজিনের একেবারে ফ্রন্ট কভারে। আর একই সঙ্গে তিনি তকমা পেয়েছিলেন ‘সেক্স সিম্বল’-এর। শোনা যায়, ম্যাগাজিনটি বের হওয়ার পরেই নাকি তাঁর একটি সই পাওয়ার জন্য রীতিমতো ছেঁকে ধরেছিলেন মহিলারা। আর নীতিপুলিশি? ছাড় পেয়েছিলেন তিনি? পরবর্তীতে আত্মজীবনীতে বার্ট লেখেন, “নাটক দেখতে এসে দেখলাম, সবার ব্যবহার যেন ওই শুটের পরেই কেমন বদলে গেল। দাঁড়িয়ে হাততালির পরিবর্তে শুরু হয়েছিল চিৎকার আর ক্যাটকল।” তবে শুধু কি বার্টের উপরেই নেমে এসেছিল এহেন আচরণ?
উত্তর, ‘না’। ‘কসমোপলিট্যান’ ম্যাগাজিনের ভাবমূর্তিও যেন পাল্টে গিয়েছিল রাতারাতি। ম্যাগাজিনের সম্পাদক হেলেন ব্রাউন দেখেছিলেন মানুষের মনে তাঁর ম্যাগাজিন হঠাৎ করেই কেমন সেক্স ম্যাগাজিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গিয়েছিল। ব্রাউন মহিলা, ম্যাগাজিনও মূলত নারীকেন্দ্রিক। আর তারই ফ্রন্ট কভারে নগ্ন পুরুষ… হেলেন বলেছিলেন, “একটা সময় ভাবা হয় নগ্ন নারীর প্রতি আকর্ষণ পুরুষেরই। কিন্তু মহিলারাও যে নগ্ন পুরুষ দেখতে পছন্দ করেন, তা নিয়ে আমার আগে কেউ কথা বলেনি।” মজার ব্যাপার ওই এক শুটই জন্ম দিয়েছিল পৃথিবীর অন্যতম চর্চিত ম্যাগাজিন ‘প্লেগার্ল’-এর। ম্যাগাজিনের মালিক ডগলাস ল্যাম্বার্ট বলেছিলেন, “আমি বুঝতে পেরেছিলাম মহিলার কী চান। তাঁদের কী পছন্দ।”
অথচ ভাগ্য়ের এমনই পরিহাস, শেষ বয়সে ওই শুটের জন্যই লজ্জিত বোধ করতেন বার্ট। জানিয়েছিলেন গোটা ফটোশুট জুড়েই মদ্যপ ছিলেন তিনি। যোগ করেছিলেন, “আমার করার দরকার ছিল না। সবাই ভেবেছিল আমি বিতর্ক তৈরি করতেই ওই শুট করেছিলাম। এবং শুট করার পরপর যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তা আমি উপভোগ করেছিলাম। কিন্তু আমি তা করিনি।” ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় ‘দ্য ম্যান হু লাভড ওম্যান’, ‘দ্য লংগেস্ট ইয়ার্ড’, ‘সেমি টাফ’, ‘বুগি নাইটস’ খ্যাত অভিনেতার। তবে ৪০ বছর আগে অজান্তেই তিনি যা করেছিলেন, তা নিয়ে চর্চা চলে আজও। অনেকেরই মতে, নারী মনের দমিয়ে রাখা কামের উদ্গীরণ ঘটেছিল তাঁরই হাত ধরে। অনেকের মতে, তাঁর ওই শুট ছিল যুগের থেকে এগিয়ে।
রণবীর সিং ‘পেপার ম্যাগাজিন’-এর জন্য যে শুট করেছেন, তাতে অনেকেই দেখতে পাচ্ছে রেনল্ডসের ছায়া। ওই একই পোজ, ওই একই গা এলিয়ে বসে থাকা। চলছে তুলনাও। তবে ২০২২-এ এসে রণবীরকে ক্যাটকলের সম্মুখীন হতে হচ্ছে না বলেই চলে। বরং তাঁর আগুনে শরীর নিয়ে যুবতীর কলম লিখে ফেলছে আস্ত একখানা ফেসবুক পোস্ট। স্ত্রী দীপিকাও বেশ উপভোগ করছেন এই গোটা ব্যাপারটাই। ফটোশুট করে শেষ বয়সে লজ্জিত হয়েছিলেন বার্ট। আর রণবীর? ‘পেপার’ ম্যাগাজ়িনের ফটো-ফিচার ‘রণবীর সিং: দ্য লাস্ট বলিউড সুপারস্টার’-এর লেখক ঐশ্বর্য সুব্রহ্মণ্যম লিখেছেন: ‘‘ওয়ান্স দ্য শুট ইজ় ডান, সিং ওয়াকস অ্যারাউন্ড হাগিং পিপল’’—শুট শেষে রণবীর সেটে উপস্থিত মানুষদের আলিঙ্গন করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম রণবীর নন, এর আগে একাধিক বলিউড অভিনেতাকেও দেখা গিয়েছে এমন নগ্ন ফটোশুটে। তালিকায় আছেন কবীর বেদি, শক্তি কাপুর, নাসিরুদ্দিন শাহ, অনিল কাপুর, আদিত্য পাঞ্চোলি, রঞ্জিত বেদী-র মতো সত্তর দশকের হাইপ্রোফাইল তারকা। ‘রেট্রো বলিউড’ তাদের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছে ওই তারকাদের ছবি। আপাতত সেই ছবিই এখন ইনস্টাগ্রাম জুড়ে ভাইরাল।