
প্রয়াত শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুর শুধু ৩০,০০০ কোটি টাকার সম্পদই রেখে যাননি, বরং রেখে গিয়েছেন এক উত্তপ্ত উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিবাদও, যা চলছে তাঁর তৃতীয় স্ত্রী প্রিয়া সচদেব কাপুর এবং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী অভিনেত্রী করিশ্মা কাপুরের সন্তানদের মধ্যে। এই আইনি লড়াই এখনও বিচারাধীন থাকলেও, সঞ্জয়ের বোন মন্দিরা কাপুর এক খোলামেলা কথোপকথনে মুখ খুলেছেন। তিনি প্রিয়াকে সঞ্জয় ও করিশ্মার দাম্পত্য ভাঙনের জন্য দায়ী করেছেন।
মন্দিরা বলেন, “আমি ওদের (প্রিয়া ও সঞ্জয়) সম্পর্কে জানতাম সেই ফ্লাইট থেকেই, যেদিন ওদের প্রথম দেখা হয়। আর আমি এতে খুশি ছিলাম না। লোলো (করিশ্মা) ও আমার ভাই সঞ্জয় তখন একেবারেই ভালো অবস্থানে ছিল। কিয়ান তখন জন্মেছে। আমার ভাই তার সন্তানদের নিয়ে খুবই আবেগপ্রবণ ছিল। আমি মনে করি, কোনও মহিলার সদ্য মা হওয়া এক মহিলার প্রতি উদাসীন থাকা—এটা অত্যন্ত রুচিহীন আচরণ। একটা পরিবার ভাঙা—এটাও রুচিহীন। আমি সেখানেই থেমে যাব। আমি মনে করি, দুনিয়া বুঝতে পারছে আমি কী বলছি। তুমি একটা সুখী সংসার ভেঙো না। আসলে সুখী না-হোক, এমন একটা সংসার ভেঙো না, যেখানে মানুষ চেষ্টা করছে পরিবারটাকে ধরে রাখার। যখন একটা বাচ্চা আছে, সদ্য আরেকটা সন্তান এসেছে, তখন তুমি একপাশে সরে যাও। তুমি একটা সংসার ধ্বংস করো না। আর লোলো এটা ডিজার্ভ করত না। লোলো খুব চেষ্টা করছিল এই সংসারটা টিকিয়ে রাখার। ও যা পেয়েছে, সেটা ওর প্রাপ্য ছিল না।”
মন্দিরা কাপুর স্মিথ আরও জানান, সঞ্জয় ও প্রিয়ার সম্পর্কে তার পুরো পরিবার, এমনকী তাদের প্রয়াত পিতাও, বিরোধিতা করেছিলেন। “সঞ্জয় আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছিল যে, প্রিয়া-ই তার জন্য ঠিক। আমরা একবার গোয়ায় ট্রিপে গিয়েছিলাম—আমি, মা, বাবা, বোন, দুলাভাই। বাবা একেবারেই প্রিয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ওকে বিয়ে করতে পারবে না। আমি ওর মুখ দেখতে চাই না।’ এটা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল। সত্যি বলতে, আমাদের পরিবারে কেউ এই সম্পর্ককে সমর্থন করেনি। কেউ ওদের বিয়ের পক্ষে ছিল না। আমিও শুধু আমার ভাইকে ভালোবাসতাম বলে পাশে ছিলাম”, খোলসা করেন সঞ্জয়ের বোন।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমিও, আমার বোনও সঞ্জয় ও প্রিয়ার ২০১৭ সালের বিয়েতে যাইনি। আমরা নিউ ইয়র্কেও যাইনি। আমি স্পষ্ট ছিলাম—আমার বাবা এই বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন। আমি এটা সমর্থন করতে পারতাম না। যদি বাবা বেঁচে থাকতেন, এই বিয়েটা হতোই না। প্রিয়া কখনও আমাদের পরিবারের অংশ হতে পারত না। আমার মা গিয়েছিলেন, কারণ তিনি তখন ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। তিনি খুব কষ্ট পেয়েছিলেন, আমরা যাইনি বলে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট ছিলাম—আমরা এটা সমর্থন করতে পারি না। কারণ বাবা সঞ্জয়কে একটাই কথা বলেছিলেন: ‘বিয়ে করো না, সন্তান নিও না।’”
করিশ্মা কাপুর সেই সময়ে কোনও যোগাযোগ করেছিলেন কি না—এই প্রশ্নের উত্তরে মন্দিরা বলেন, “সেই সময়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়নি… কারণ আমার মনে হয়, করিশ্মাও তখন আমার ওপর বিরক্ত ছিল। আমি ওকে দোষ দিই না। পুরো পরিবারের মধ্যে যা হয়েছে, সেটা ভয়াবহ। আমি এখনও খারাপ লাগা অনুভব করি, কারণ ও ছিল আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। আমি চাইতাম ওর পাশে দাঁড়াতে। দাঁড়ানো উচিত ছিল। আমি জানি না আমি আর কী করতে পারতাম।”