‘তিন বলে তিন ছক্কা মারো, তবেই আমায় পাবে,’ তাঁকে শর্ত দিয়েছিলেন শর্মিলা…
Sharmila Tagore: ঠাকুর পরিবারের আদুরে রিঙ্কু। সিনেমা-টিনেমায় কাজ করে ফেলেছেন। যে সে ব্যাপার না। সত্যজিতের নায়িকা তিনি। সেই সুন্দরী আবার বিকিনি পরা সাহসিনী! শাড়ির আঁচল ঠিক করতে-করতেই যখন হাঁপিয়ে পড়তেন রমণীরা। রিঙ্কুর পরতেন বিকিনি। সেই রিঙ্কুই এমন শর্ত দিয়েছিলেন একজনকে। কে সেই ব্যক্তি? ব্যক্তি কি রাখতে পেরেছিলেন কথা? পেয়েছিলেন রিঙ্কুকে?
আজকের কথা নাকি। সেই কোন আমলের কথা। অনেকের জন্মই হয়তো হয়নি তখন। গালে ডিম্পল পরা ফুলের মতো মেয়েটাকে কলকাতা থেকে উড়িয়ে নিয়ে গেলেন এক রাজপুত্র। মেয়েটাও হাইফাই। ঠাকুর পরিবারের আদুরে রিঙ্কু। সিনেমা-টিনেমায় কাজ করে ফেলেছেন। যে সে ব্যাপার না। সত্যজিতের নায়িকা তিনি। সেই সুন্দরী আবার বিকিনি পরা সাহসিনী! শাড়ির আঁচল ঠিক করতে-করতেই যখন হাঁপিয়ে পড়তেন রমণীরা। সেই সময় খোলামেলা বিকিনি কীভাবে ক্যারি (পড়ুন স্বাচ্ছন্দ্য) করতে হয়, শিখিয়েছিলেন তিনি। আজও রূপচর্চায় তাঁকে হারাতে পারে না কেউই। বাংলার পাশাপাশি মুম্বইতেও যাঁর চাহিদা প্রচুর।
সেই সুন্দরী শর্মিলা ঠাকুর। তাঁর আদরের ডাক নাম রিঙ্কু। প্রেম করতেন নবাব পরিবারের মনসুর আলি খান পতৌদির সঙ্গে। মনসুরকে সকলে টাইগার পতৌদি বলেই ডাকতেন। একদা ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি অধিনায়ক। শর্মিলার সঙ্গে দেখা কমন বন্ধু মারফত। সেই থেকে মেলামেশা, ঘনিষ্ঠতা এবং প্রেম। সবশেষে বিয়ে। কিন্তু মনসুরকে বিয়ের আগে এক শর্ত দিয়েছিলেন শর্মিলা।
মনসুরের ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতেন না শর্মিলা। মনসুরও শর্মিলার ছবি প্রায় দেখেনইনি। তবে ক্রিকেট ময়দানে খেলা দেখতে যেতেন শর্মিলা। দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মনসুর। আর শর্মিলা তাঁকে দিয়েছিলেন শর্ত। বলেছিলেন, “তুমি যদি এই ম্যাচে তিনটে বলে পরপর তিনটে ছক্কা মারতে পারো, আমি তোমাকেই বিয়ে করব।” শর্তটা খুবই সিরিয়াসভাবে নিয়ে নিয়েছিলেন মনসুর। পরের ম্যাচে পরপর তিনটে বলে তিনটে ছক্কা মেরে শর্মিলাকে চিরকালের মতো নিজের করে নিয়েছিলেন নবাব। ধুমধাম করে বিয়ে করেন তাঁরা। সেই রাজকীয় বিয়েতে হাজির ছিলেন ফিল্ম এবং ক্রিকেট দুনিয়ার বহু তারকা।
মনসুর আর নেই। কিন্তু তাঁর ‘আয়েশা বেগম’ (মুসলমান মনসুরকে বিয়ে করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত শর্মিলার ওটাই হয় নাম, কিন্তু ওই নামে তিনি পরিচিত ছিলেন না) শর্মিলা ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিকে নিয়ে জমিয়ে আছেন। গোটা পরিবারটাকে আগলে রেখেছেন। এখনও তিনি সেই গালে টোল পরা সাহসিনীই। ক্যানসারের মতো মারণরোগকে জয় করেছেন রিঙ্কু, যিনি অবলীলায় বলতে পারতেন, ‘আমার জন্য তিনটে বলে তিনটে ছক্কা মারতে পারবে তো?’