Exclusive: অরবিন্দ স্বামীর থেকে কী শিখেছিলেন একাবলী? খোলসা করলেন নিজেই
একাবলীর মতে, বিভিন্ন অভিনেতার থেকে অভিনয়ের বিভিন্ন দিক শিখছেন তিনি। কারণ তিনি কোনও ড্রামা স্কুলে অভিনয় শেখেননি। তাই যখনই কোনও অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন, অভিনয়ের নানা কৌশল শিখে নিয়েছেন।

বাংলা তাঁর মননে, বাংলা তাঁর যাপনে। অভিনেত্রী একাবলী খান্না আদতে মনেপ্রাণে বাঙালি। তবে বাংলা ছবির থেকে হিন্দি ছবিতেই তাঁকে বেশি দেখা যায়। আপাতত তিনি কলকাতায় রয়েছেন। তাঁর নতুন দুটি বাংলা ছবির প্রচারে ব্যস্ত। একটি পরিচালক সুমন ঘোষের ‘পুরাতন’ সঙ্গে আরও একটি বাংলা ছবি ‘দুর্গাপুর জংশন’। TV9 বাংলার অফিসে বসেই তাঁর সঙ্গে জমে উঠলো আড্ডা। একাবলী জানালেন, খুব ভালোভাবে তিনি বাংলা পড়তে, লিখতে পারেন। তাঁর স্কুল থেকে শুরু করে শৈশবের বহু স্মৃতিতে জড়িয়ে শহর কলকাতা।
প্রথম তিনি বাংলা সিরিয়াল ‘এখানে আকাশ নীল’ ধারাবাহিক দিয়ে অভিনয় শুরু করেন। একাবলীর ভাষায়, এটাই তাঁর অভিনয়ের হাতেখড়ি। তিনি বলেন, “ওই ধারাবাহিকের কাজের সময় আমার ব্যক্তিগত জীবন ওলটপালট হয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদের যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। আমার সহকর্মীদের জন্য নিজেকে সামলাতে পেরেছি”।
সুমন ঘোষের সঙ্গে এই নিয়ে তাঁর তৃতীয় ছবি। এর আগে তিনি ‘দ্বন্দ’ ও ‘আধার’ ছবিতে কাজ করেন। আফসোস করে বলেন, “এত সুন্দর একটি হিন্দি ছবি ‘আধার’, বুঝতেই পারলাম না কেন মুক্তি পেল না। আমি একজন আই এস অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। দারুণ মজার ছবি ছিল সেটা। খারাপ লাগে। ছবিটা মুক্তি না পাওয়ায় অবাক হয়েছিলাম।”
২০১৪ সালে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নীলা মাধব পাণ্ডার ‘কৌন কিতনে পানি ম্যায়’ ছবির মাধ্যমে একাবলী খান্নার হিন্দি ছবিতে অভিষেক ঘটে। সেই বছর তিনি আরেক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক চন্দ্র প্রকাশ দ্বিবেদীর সঙ্গে ‘জেড প্লাস’ সিনেমায় অভিনেতা আদিল হুসেনের বিপরীতে অভিনয় করেন। এরপর দু’টি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি: সুধীর মিশ্রের ‘ দাসদেব’ এবং আরশাদ সাঈদ পরিচালিত ‘সাতরা কো শাদি হ্যায়’। তিনি আবার কেডি সত্যম পরিচালিত ‘বলিউড ডায়েরিজ’ সিনেমায় এক ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এরপর তাঁর পরবর্তী মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘ডিয়ার ড্যাড’। চরিত্রটি ছিল অরবিন্দ স্বামীর বিপরীতে, পরিচালক তনুজ ব্রহ্মা।
একাবলী বলেন, “অরবিন্দ স্বামীর অনুরাগী আমি। অনেক কিছু শিখেছি। মণিরত্নমের ট্রেনিং পাওয়া অভিনেতা অরবিন্দ, ওর থেকে আমি ক্রিয়েটিভি ও টেকনিক্যালের অনেক কিছু জেনেছি।” একাবলী আরও বলেন, “আমি যখন ২০১৫ সালে ওঁর সঙ্গে কাজ করছি, ভাবছিলাম, আমার স্কুলের বন্ধুদের নিশ্চিত খুব হিংসে হবে।” একাবলীর মতে, বিভিন্ন অভিনেতার থেকে অভিনয়ের বিভিন্ন দিক শিখছেন তিনি। কারণ তিনি কোনও ড্রামা স্কুলে অভিনয় শেখেননি। তাই যখনই কোনও অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন, অভিনয়ের নানা কৌশল শিখে নিয়েছেন।
বহু হিন্দি ছবিতে কাজ করে একাবলী নিজের পরিচিতি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। উল্লেখ্য নাম ছাড়াও আরও বহু ছবিতে একাবলী তাঁর অভিনয় প্রতিভা দেখিয়েছেন। ‘আংরেজি ম্যায় কেহতে হ্যায়’ ছবিতে অভিনয় করেন। এর জন্য তিনি ২০১৮ সালের আইফা অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেন। ২০১৭ সালে তিনি নরওয়েজিয়ান (নরওয়ের ছবি) ছবি ‘হোয়াট উইল পিপল সে’-এ অভিনয় করেন, ইরাম হক পরিচালিত তাঁর ছবি ২০১৯ সালে অস্কারে আনুষ্ঠানিকভাবে জায়গা করে নেয়। এছাড়াও হিন্দি, বাংলা বহু সিনেমা ও সিরিজে অভিনয় করেছেন একাবলী।
“বাংলায় এত কম কেন দেখা যায় তাঁকে?” এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “বাংলা আমার জায়গা, কেউ অভিনয়ের জন্যে ডাকলে আমি সব সময়ই রাজি থাকি। যদি অন্য কাজে আগে থেকে সময় দেওয়া না থাকে, তা হলেই আমি আছি।”
এত কাজের পরেও খবরে খুব বেশি থাকেন না একাবলী, কেন? উত্তর বলেন, “পিআর, স্যোশাল মিডিয়া, এই দুই জায়গাতেই আমি সক্রিয় নই। তবে আমি এরকমই। আমি মনে করি সঠিক সময়ে সঠিক কাজ হবেই। কলকাতা বলো বা মুম্বই, অডিশন দিয়েই কাজ পাই। আর অডিশন দিতে দিয়ে নিজের ১০০ শতাংশ উজার করে দিই।”
তিনি আরও বলেন, “কলকাতা আমায় অনেক ভালবাসা দিয়েছে। ঋতুপর্ণাদি (ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত), বুম্বাদার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) প্রশংসা শুনলে মন ভাল হয়ে যায়, আমি সাহস পাই।” একাবলীর বেশ কিছু হিন্দি প্রজেক্টের কাজ বর্তমানে শেষের পথে। খুব শীঘ্রই বহু সিনেমা ও সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে হয়ে দর্শকদের কাছে হাজির হবেন একাবলী।
