
ইচ্ছাকৃত ভাবে কাজ স্তব্ধ করতে চাইছেন ডিরেক্টরস গিল্ড, যে ফেডারেশনের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁদের উচিত নিজের এক্তিয়ারদেখা উচিত। ডিরেক্টররা কর্মবিরতিতে যেতেই কড়া ভাষায় কাল সন্ধে ৭ টার মধ্যে ফেডারেশনের তরফ থেকে কোনও সদুত্তর না পেয়ে, আজ থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল ডিরেক্টরস গিল্ড। সেই মতোই সকাল থেকে বন্ধ টলি পাড়ার কাজ। ফ্লোরে যাননি তারপরেই এই দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস।
তিনি বলেন, “গতকাল আমরা বলেছিলাম যে কোনও সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র বার করা সম্ভব। কিন্ত এটা দ্বিতীয় বার ডিরেক্টরস গিল্ড ইচ্ছাকৃত ভাবে কাজ স্তব্ধ করে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এর আগেও ২দিন কাজ বন্ধ করা হয়েছিল, আজকেও হঠাৎ করে তাঁরা বন্ধ করলেন।”
স্বরূপের কথায়, “অরগানিক, ব্লুস এবং রাজ চক্রবর্তীর প্রোডাকশন হাউস গৃহপ্রবেশে শুটিং বন্ধ আছে। বাদ বাকি সব শুটিং চলছে বলেই খবর রয়েছে আমার কাছে। জি-এর প্রোমো চলছে, সেটের কাজ হচ্ছে।”
আজকেই ফেডারেশন এবং গিল্ডের মধ্যে বৈঠকে কথা রয়েছে। স্বরূপ বলেন, “এটা আকাঙ্ক্ষিত নয়, যদি কোনও সমস্যা হয় তাহলে আমরা তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে নেব। আমরা শুনেছি এবং গতকাল চিঠিও পেয়েছি, পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় মন্ত্রী ও টেলি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান এবং তথ্য প্রযুক্তি দফতরের চেয়ারম্যান দুজনেই আজকে ফেডারেশন ও গিল্ডকে ডেকে পাঠিয়েছেন কী সমস্যা জানার জন্য। তারপরেও যে ভাবে কাজ বন্ধ করা হল তা দুর্ভাগ্যজনক।”
এরপরেই ডিরেক্টরস গিল্ডকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন স্বরূপ বিশ্বাস, তিনি বলেন, “কিন্তু এর পরেও তাঁরা আজ কর্মবিরতিতে গেলেন। এটা সমস্যাটাকে আরও বাড়িয়ে দিল কিন্তু। যে ভাষায় তাঁরা ফেডারেশনের কাছে কৈফিয়ত চাইছেন, ফেডারেশনের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, আমি তাদেঁর কাছে একটাই বলতে পারব যে আপনি আগে নিজের এক্তিয়ার দেখুন। ফেডারেশন ২৮ টি গিল্ডের সমন্বয়, তার মধ্যে একটা গিল্ড আপনারও। আপনার গিল্ড ফেডারেশনের হাত ধরে তৈরি, সমম্ভত আমার হাতেই তৈরি। আমিই সংবিধান লিখেছিলাম। আজকে ওঁনারা বলছেন কেন গিল্ডের সঙ্গে আলোচনা বা পরিকল্পনা করা হল না। তার উত্তরে আমরা এটুকুই বলতে পারি যে এর আগে যে কটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেখানে সভাপতি সুব্রত সেন এবং ম্যাডাম সুদেষ্ণা রায়, জেনেরাল সেক্রেটারি দুজনেই উপস্থিত ছিলেন। এজিমে সেটা পাস হয়েছে, উনি সই করেছেন। তারপরে ইসি কমিটিতে পাস করে, তবেই রাহুল বাবুর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুব্রত সেন নিজে রাহুলবাবুকে নিয়ে এসে ফেডারেশনের সামনে বৈঠক হয়।”
স্বরূপ বাবুর প্রশ্ন, “তারপর কী এমন হল যে রাতের অন্ধকারে সিদ্ধান্ত বদলে গেল। নিজের মত প্রত্যাহার করে নিলেন? ওনারা বলছেন ফেডারেশন জোর করে টেকনিশিয়ানদের চাপিয়ে দিচ্ছেন। একটি শুটিংয়ে নূন্যতম ১০০-১২০ জন লোক থাকে। ফেডারেশনের তরফে থাকে ৩৫-৩৮ জন। তাহলে কত শতাংশ হল? বাকিরা কারা?”
সরূপ বাবু বলেন, “ফেডারেশন তাঁর লেবার অ্যাক্ট খুব ভাল করে জানে। তাঁর কলা কুশলিকে কী ভাবে সুরক্ষা দিতে হবে তাও জানে। আগে ১৮-১৯ ঘন্টা কাজ হতো। আজকে ফেডারেশন লড়াই করে সেটা ১৪ ঘন্টা করেছে। ফেডারেশনে ৮ হাজারের বেশি সদস্য আছে। যারা ফেডারেশনকে চ্যালেঞ্জ করছেন তাঁরা ৮ হাজারের প্রতিনিধিকে চ্যালেঞ্জ করছে। ফেডারেশনে প্রত্যকে বছর ব্যালট পেপারে ভোট হয়। আপনারা ভোটে লড়ুন, তারপর নিয়ম নিধি নির্ধারণ করবেন। আজ ডিরেক্টরস গিল্ডে ৩ বছর ভোট হয়নি। ওখানে ইলেকশন হয়না, সিলেকশন হয়। ফেডারেশন মান্যতা না দিলে, সিলেকশন বন্ধ করে দিতে পারি। ফেডারেশন কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। আমরা ধর্মঘট ডাকিনি। আমরা যদি ধর্মঘট ডাকি তাহলে একটা পাতা নড়বে না।”