ভাস্বতী ঘোষ
‘ফ্রাইডে’ প্ল্যাটফর্মে নতুন ওটিটি প্রোজেক্টে দেখা যাচ্ছে অরুণিমা ঘোষকে। কাজ থেকে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে TV9 বাংলা-র সঙ্গে কথা বললেন অভিনেত্রী।
Tv 9 বাংলা: আপনি ‘সাহেব বিবি জোকার’-এ কাজ করলেন। প্রধানত রূপা দত্ত আর নীল রতন দত্ত প্রযোজিত কাজেই আপনাকে দেখা যাচ্ছে। সেটা কেন? অন্য প্রযোজনা সংস্থা কাজ দিচ্ছে না?
অরুণিমা: কাজের ক্ষেত্রে আমি ভীষণ চুজি। ১৫ বছর বয়স থেকে কাজ করছি। তাই শুধু নতুন বউয়ের চরিত্র দিলে করতে ইচ্ছা করে না। ‘সাহেব বিবি জোকার’-এ যেমন চরিত্রটা জটিল। সেরকম না হলে করার তাগিদ অনুভব করি না। বাবা চলে যাওয়ার পরই কাজটা শুরু করি। মানসিকভাবে জোর পাচ্ছিলাম না। তা-ও কাজটা করেছি, চরিত্রটা পছন্দ বলে। আগের বছর শুধু একটা কাজ করেছি। টলিউডের দু’টো প্রযোজনা সংস্থা থেকে কাজের অফার পাই না। সেটা অবাক হওয়ার মতো। এগুলোর কোনও ব্যাখ্যা নেই। একবার ডাকা হয়েছিল একটা নামী প্রযোজনা সংস্থা থেকে। চরিত্র পছন্দ হয়নি। তাই করিনি। তারপর আর ডাকা হয়নি। একবার কোনও কাজে না বললে, আর ডাকা হয় না হয়তো। পারিশ্রমিক কম হলেও কাজ করি না।
টলিউডে নাকি পিআর কার কত ভালো, তার উপর কাজ নির্ভর করছে?
আমার পিআর খুব খারাপ। এত খারাপ পিআর নিয়ে টলিউডে এখন আর কাজ পাওয়া যায় কিনা জানি না! সব সময় পার্টিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, গল্প করতে হবে, তবে কাজ পাওয়া যাবে, এটার মধ্যে পড়তে ইচ্ছা করে না।
আপনার নতুন কাজে চুমু খাওয়ার দৃশ্য আছে। পরিচালক অরিন্দম শীল কি চুমুর দৃশ্যে অভিনয় করে দেখিয়েছেন?
আমার কোনও খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি। আমাকে চুমু খেয়ে দৃশ্য বোঝানো হয়নি। তবে এই ঘটনাটা শুনে খারাপ লেগেছে। হয়তো কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
১৫ বছর থেকে কাজ করছেন। যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন কখনও ?
দু’বার এরকম ঘটনা হয়েছিল। যেখানে ঘটনাটা ঘটছে, সেখানেই গালে চড় মেরে এসেছিলাম! একবার আমাকে আর্টিস্টস ফোরামে ডেকে সকলে বাহবা দিয়েছিলেন এরকম চড় কষিয়ে দেওয়ার জন্য। তবে যৌন হেনস্থাটাই টলিউডে কাজের একমাত্র সমস্যা নয়। এখানে থ্রেট কালচার আছে। বহু আগের কথা বলছি। তখন একজন নামী নায়িকা মেকআপ রুমে আর কাউকে বসতে দিতেন না। অথচ তখন বাকিদের বসার মেকআপ রুম ছিল না। আমি দিনের পর দিন গাড়িতে বসে থাকতাম। আর একটা ঘটনা বলি। একবার এক পরিচালক এসে বললেন, টিপ না পরতে। পরে আমি জানতে পারলাম, আর একজন অভিনেত্রী পরিচালককে শিখিয়ে দিয়েছিলেন সেরকম বলার জন্য। পরে সেখানে যিনি অভিনেতা ছিলেন, তিনি আমাকে বলেন, এরকম করা হচ্ছে, কারণ টিপ পরলে আমাকে দেখতে ভালোলাগে। যাতে সেটা না হয়, তাই এরকম করা হচ্ছিল।
টলিউডে সারাক্ষণ এসব চর্চা। এদিকে সিনেমা হলে দর্শক ক্রমশ কমছে। কী মনে হয়?
বাংলায় বাণিজ্যিক ছবি কই? হিন্দিতে ‘জওয়ান’ হচ্ছে। ‘স্ত্রী টু’ ছবি এত দর্শক দেখলেন। তিনজন নায়ক আর তিনজন নায়িকাকে নিয়ে কী করে ইন্ডাস্ট্রি চলবে? ভালো অভিনেতাদের নিয়ে কিছু ছবি তৈরি করতে হবে যাতে দর্শকরা আগ্রহী হন। না হলে টলিউড এমন খারাপ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না।
কাজের জীবন নিয়ে কথা বললেন। ব্যক্তিগত জীবনে কি বিয়ে করতে চান?
সামনের বছর বিয়ে করব। একটা লং ডিসটেন্স রিলেশনশিপে ছিলাম, যেটা টিকল না। আসলে আমি মানসিকভাবে এমন অবস্থায় আছি যে নো ননসেন্স সম্পর্ক পছন্দ। যাঁর সঙ্গে প্রেম করব, তাঁকে পাশে চাই। এমনিও আমার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করার কাজটা সহজ নয়। তাই আমার সঙ্গে মানানসই, এরকম কাউকে বিয়ে করব।