
বহুদিন ধরেই চলছে দড়ি টানাটানির খেলা টলিপাড়ার অন্দর মহলে। একদিকে রয়েছে পরিচালকের, অন্যদিকে রয়েছে ফেডারেশন অর্থাৎ ছবির টেকনিশিয়ান টিম। মাঝে মধ্যেই খবরের শিরোনামে উঠে আসে এই দুই পক্ষের মধ্যে নানা সমস্যার কথা। আর সেখান থেকেই টলিপাড়ায় দেখা যায় অচলাবস্থা। সেই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে হয় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কখনও পরিচালকেরা দাবি করেন, ফেডারেশনের সমস্যা আবার কখনও বেঁকে বসেন উল্টো দিকে থাকা কলাকুশলীরা। এমনকি এই দুই পক্ষের লড়াই কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে।
টলিউডে শিল্পীদের কাজ করতে বাধা দেওয়া যাবে না— এই মর্মে সোমবার কড়া বার্তা দিলেন এবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য-সহ একাধিক টলিউড অভিনেতা ও পরিচালকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছিল, তাঁদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বলেন, “কারও জীবিকা, কাজ বা ব্যবসা করতে বাধা দেওয়া যায় না। যদি কেউ সমস্যায় পড়ে, তাহলে স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিতে হবে। রাজ্য এ নিয়ে চুপ করে বসে থাকতে পারে না।”
মামলাকারীদের আইনজীবী অভ্রতোষ মজুমদার আদালতে জানান, আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে তাঁদের কাজে বাধা না দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। তিনি বলেন, “মেসেজ পাঠিয়ে বলা হচ্ছে— আদালতের নির্দেশ মানার দরকার নেই। মামলাকারীদের আলাদা করে দেওয়া হয়েছে, কাজের সুযোগ বন্ধ। এমনকি শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকটাই পচন ধরেছে। ফেডারেশন যেন কোনওভাবেই কাজের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে— এই মর্মে আদালতের রুল জারি করা প্রয়োজন।”
বিচারপতি আরও প্রশ্ন তোলেন, “জীবনের অধিকার যেখানে প্রশ্নে, সেখানে রাজ্য কেন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না? রাজ্য আমাদের রক্ষাকারী— তারা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না।” তিনি আরও বলেন, “শুধু পুলিশ দিয়ে সব হবে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর কোথায়? তারাই বা কিছু করছে না কেন?” অন্যদিকে, মামলায় অভিযুক্ত ফেডারেশন এদিন আদালতে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।