
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা নানা পাটেকর। প্রথম থেকেই তিনি তাঁর অভিনয়গুণে প্রশংসিত। তবে জানেন কি, পর্দায় নানা চরিত্রে ঝড় তোলা এই অভিনেতা একটা সময় দেশের জন্যে সেনায় যোগদান করেছিলেন? শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই সত্যি। নানা পাটেকর তখন ‘প্রহর’ ছবিতে একজন সেনা অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করছেন। কিন্তু তিনি শুধু অভিনয়েই থেমে থাকতে চাননি। সেই চরিত্রকে বাস্তবায়িত করতে তিনি তিন বছর ধরে ‘মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রি’র সঙ্গে সত্যিকারের মিলিটারি ট্রেনিং নিয়েছিলেন। তখনই তাঁর মনে হয়—”অভিনয় তো করছি, কিন্তু দেশের জন্য সত্যি কিছু করা উচিত!”
এরপরই তিনি স্থির করে বসেন, কার্গিলে যাবেন। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ। পুরো দেশ তখন উত্তাল। সেই সময় নানা আর থেমে থাকতে পারেননি। তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। শুরুতে সেনাবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক স্পষ্ট ‘না’ জানিয়ে দেয়। কিন্তু নানা হাল ছাড়েন না। তিনি নিজের প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতার কথা জানান, জানান তিনি জাতীয় স্তরের শ্যুটারও ছিলেন।
অবশেষে তিনি তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজকে ফোন করেন। নিজের ইচ্ছা আর প্রস্তুতির কথা জানাতেই মন্ত্রী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন— “তুমি কবে যেতে চাও?” এরপরই নানা পাটেকরকে “অনারারি ক্যাপ্টেন” হিসেবে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হয়।
নানা নিজের ইউনিফর্ম পরে ড্রাস, কুপওয়ারা, বারামুল্লা, সোপরের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় সেনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে টহল দেন। তিনি সেনা হাসপাতালেও কাজ করেন, সাহায্য করেন আহত সৈনিকদের।
অভিনেতা হলেও তিনি কখনও পিছু ফিরে আসেননি। তিনি বলেন: “শ্রীনগরে যাওয়ার সময় ওজন ছিল ৭৬ কেজি, ফিরে আসার সময় ছিল মাত্র ৫৬ কেজি। কিন্তু মন ভরে গিয়েছিল গর্বে।”
এই অভিজ্ঞতার পর তাঁকে “লেফটেন্যান্ট কর্নেল”-এর সম্মানও দেওয়া হয়। পরে ফিরে এসে তিনি শুধু অভিনয়ই করেননি, NAAM ফাউন্ডেশন তৈরি করে কৃষকদের সাহায্যও করেছেন।