২০২০… বলিউডে অভিশপ্ত বছর। করোনার হানা, লকডাউন… এরই মধ্যে একদিনের ব্যবধানে প্রয়াত হয়েছিলেন ঋষি কাপুর ও ইরফান খান। ইরফানের বড় ছেলে বাবিল ডেবিউ করতে চলেছে বলি দুনিয়ায়। হতে চেয়েছিলেন সিনেমাটোগ্রাফার। কিন্তু নিয়তি কে আটকায়? বাবার মৃত্যুর পরেই ছবির অফার যায় তাঁর কাছে। ছবির নাম ‘কালা’। সেই ছবিই অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে নেটফ্লিক্সে। ছবি নিয়েই সোজাসাপটা বাবিল। তাঁর সাফ কথা তিনি ইরফাম খানের ছেলে বলেই তাঁর ডেবিউ নিয়ে এত কথা হচ্ছে, নচেৎ তাঁর নিজের কোনও কৃতিত্ব নেই। তাঁর কথায়, “একটি নারীচরিত্রের উপর নির্মিত ছবিতে আমি সহ অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করছি। আমার কাছে এ খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি যোগ করেন, “আমি যদি ইরফান খানের ছেলে না হতাম তাহলে আমার ডেবিউ নিয়ে কারও কিচ্ছু যায় আসত না। আর পাঁচজনের মত অডিশনের পর অডিশন দিয়ে যেতাম। হয়তো তারপর গিয়ে কাজ পেতাম। নিজের কাজ দিয়ে পরিচিতি পাওয়ার মধ্যে অনেক বেশি মহত্ব রয়েছে। ডেবিউ, লঞ্চ এই সব কথাগুলো আমার কাছে স্পেশ্যাল নয়। আমার মনে হয় এই সব কথার মধ্যে দিয়ে একটি গল্পের থেকে একটি মানুষের গুরুত্ব বেশি বোঝানো হয়।”
কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে তবে বাবার চলে যাওয়া যে আজও মেনে নিতে পারেন না বাবিল তা লিখেছিলেন কিছু নাস আগেই। বাবিল লিখেছিলেন, “প্রিয় বাবা, আমি মনে করার চেষ্টা করছি তুমি যে পারফিউমটি ব্যবহার করতে, তার কথা। যখন আমরা উত্তরে ভ্রমণ করতে গিয়েছি নরওয়েতে আলোর নাচ দেখার জন্য। মনে পড়ছে সেই কথা। আমার এখনও মনে আছে, তোমার গায়ের গন্ধের অনুভূতি, কিন্তু আমি এর দেহাত্মবাদ মনে করতে পারি না। আমি অনুভব করতে পারি যখন তুমি আমার ভাগ্য বলার জন্য আমার হাতের তালু ধরেছিলে, কিন্তু আমার নাকে তোমার কৌতুকপূর্ণ চিমটি ভুলে যেতে ভয় পাই। আমি মিনতি করছি আমার শরীরকে যেন সে এই সব না ভুলে যায়। কারণ আমার আত্মা এই সব হারাতে প্রস্তুত নয়। আমি জীবনের পথা এগিয়ে যাওয়ার জন্য এখনও প্রস্তুত নই।”
এই টুকুতেই থামেননি বাবিল। তিনি আরও যোগ করেছেন, “তুমি এবং আমি, এই মহাজাগতিকে অনন্যসাধারণ। সবই আছে, কিন্তু কোথাও যেন সব ফাঁকা। তুমি এখনো নিঃশ্বাস ফেলো আমার ভাবনায় এবং আজও আমার পাগলামিতে। আমার সব যুদ্ধে, নীরবতায় তোমায় খুঁজি, আমি তো তোমারই সৃষ্টি, বাবিল”। বাবিলের এই পোস্টে অনুরাগীরা অস্ফুটেই ফেলেছিল চোখের জল। ভক্তদের বিশ্বাস ছেলের সাফল্যে খুশিই বাবা। ছেলে নিজেকে কতটা যোগ্য উত্তরসূরী প্রমাণ করেন, এখন সেটাই দেখার।