আইনি জটে মনোজ বাজপেয়ীর ছবি ‘সির্ফ এক বান্দা কাফি হ্যায়’ ছবিটি। ট্রেলার মুক্তি পেতেই শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। ছবিটিতে যে ধর্মগুরুকে দেখানো হয়েছে তার সঙ্গে মিল রয়েছে জেলবন্দি ধর্মগুরু আসারাম বাপুর– এমনটাই মনে করছেন অনেকে। এবার ভাবমূর্তি খারাপ করার অভিযোগে মনোজের ওই ছবির টিমকে আইনি নোটিস পাঠাল আসারাম বাপুর ট্রাস্ট। আইনি নোটিসে দাবি করা হয়েছে, “ছবিটি অত্যন্ত আপত্তিকর ও তাঁর ভাবমূর্তির পক্ষে ক্ষতিকর।” প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে সুরটের এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে আপাতত জেল খাটছেন আসারাম। অন্যদিকে এই ছবিতে দেখানো হয়েছে এক নাবালিকার যৌন হেনস্থার করুণ কাহিনী। যৌন হেনস্থাকারী হিসেবে এখানেও দেখানো হয়েছে এক ধর্মগুরুকে। চেহারাগত দিক দিয়ে যার সঙ্গে আসারামের বেশ মিল রয়েছে। মনোজ বাজপেয়ীর চরিত্রটি একজন আইনজীবীর। যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন, সত্য সামনে আনতেও যিনি তৎপর। তাঁর চরিত্রের নাম পিসি শোলাঙ্কি। উল্লেখ্য আইনি নোটিস পেয়ে মুখ খুলেছেন ছবিটির প্রযোজক আসিফ শেখ। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমরা নোটিস পেয়েছি। এর পরের পদক্ষেপ কী হয়, তা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেই আলোচনা করব। যদি কারও মনে হয় ছবিটি তাঁকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে, তবে সেটি তাঁর ব্যাপার। আমরা তো আর ওই ভাবনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারি না। শুধুমাত্র এই ছবিটি সত্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবে।”
ফিরে দেখা আসারামের কাহিনী
২০১৩ সালে উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরের এক ১৬ বছরের নাবালিকা প্রথম এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ করেছিল। রাজস্থানের যোধপুরের কাছে মানাই গ্রামে অবস্থিত আশ্রমে তাকে ধর্ষণ করেছিল বাবাজি, এমনটাই দাবি করেছিল ওই নাবালিকা। এরপরই যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আসারামকে। অবৈধভাবে আটকে রাখা, ধর্ষণ, অপরাধমূলক হুমকি, মহিলাদের সম্ভ্রম নষ্ট-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় এবং পকসো আইনের উপযুক্ত ধারায় মামলা দায়ের করা হয় তার বিরুদ্ধে। আসারাম কারাবন্দি থাকাকালীন, তার মামলার একাধিক সঙ্গীর উপর হামলা হয়। অনেকে নিরুদ্দেশও হয়ে গিয়েছিলেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসককে গুলি করা হয়েছিল। তিনি বেঁচে গেলেও, রাঁধুনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে তো যোধপুর আদালত চত্বরেই মামলার আরও দুই সাক্ষীকে গুলি করা হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর আসারাম কারাবন্দি থাকাকালীনই, সুরাট থেকে তার আরেক শিষ্যা তার বিরুদ্ধে জোর করে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ জানান। এই মুহূর্তে জোধপুর জেলে রয়েছেন ৮১ বছরের স্বঘোষিত ধর্মগুরু।