Exclusive-Saswata Chattopadhyay: বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়

Saswata Chattopadhyay: ভীষণ ব্যস্ত তিনি এই মুহূর্তে। আজ মুম্বই, তো কাল হায়দ্রবাদ, তো পরশু শ্রীলঙ্কা কিংবা বুদাপেস্ট। দম নেওয়ার সময় নেই। বাংলা-হিন্দি-তেলেগু-ইংরেজি- ছবি করার ক্ষেত্রে ভাষার তালিকাও কম নয়। শহরে থাকলেও কাজ আর কাজ। তাঁর বক্তব্য, “গত দু’বছর যত ছুটি নেওয়ার ছিল, নেওয়া হয়ে গিয়েছে। আর ছুটির দরকার নেই।

Exclusive-Saswata Chattopadhyay: বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
Follow Us:
| Updated on: Mar 28, 2022 | 3:50 PM

শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। ভীষণ ব্যস্ত তিনি এই মুহূর্তে। আজ মুম্বই, তো কাল হায়দ্রবাদ, তো পরশু শ্রীলঙ্কা কিংবা বুদাপেস্ট। দম নেওয়ার সময় নেই। বাংলা-হিন্দি-তেলেগু-ইংরেজি- ছবি করার ক্ষেত্রে ভাষার তালিকাও কম নয়। শহরে থাকলেও কাজ আর কাজ। তাঁর বক্তব্য, “গত দু’বছর যত ছুটি নেওয়ার ছিল, নেওয়া হয়ে গিয়েছে। আর ছুটির দরকার নেই। পুরো নাইটমেয়ার। আমাকে টাকা না দিয়ে শুধু কাজ দিলেও এখন খুশি।” এতে তো পরিবারকে সময় দিতে পারছেন না? “তাঁদেরও কি সময় রয়েছে? স্ত্রী স্কুল, মেয়ে কলেজ নিয়ে ব্যস্ত। আর তাঁরা যে ব্যস্ত তাতে আমিও খুশি। এখন সবার কাজে ব্যস্ত থাকা উচিত। তাহলেই ভাল থাকব আমরা”, এমনই মনে করেন বব বিশ্বাস।

কাহানিছবির ১০ বছর পূর্তি নিয়ে কী বলবেন?

ওটা হয়ে গিয়েছে। ওটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। একটা ছবি নিয়ে পড়ে থাকলে সংসার চলবে? ওই চরিত্রটা ছিল ম্যাজিক। এমন কিছু-কিছু চরিত্র হয়, যেটা হয়ে গিয়েছে মানে হয়ে গিয়েছে, যেমন ‘গব্বর’। ওটা এখন করলে কেমন হত, এমন করলে ভাল হত… এই সব ভাবার কোনও মানে হয় না। যদি বব বিশ্বাস আমার আগে অভিষেক (বচ্চন) করতেন, পরে আমাকে ওই চরিত্র করতে হলে বেগ পেতে হত। যেমন এখন ওঁকে শুনতে হচ্ছে। এটা কারও হাতে নেই।

ওটিটির জন্য ‘নাইট ম্যানেজার’-এর হিন্দি ভার্সানে কাজ করছেন। তাঁর পরবর্তী শুটিং রাজস্থানে। চলতি মাসে ২৬-এ বেরিয়ে যাবেন। তার আগে তাঁর নতুন ছবি ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’ যা মুক্তির অপেক্ষায়, তার প্রচার আর কিছু ব্যক্তিগত কারণে শহরে আসা দিন চারেকের জন্যে।

ছবির নাম আবার কাঞ্চনজঙ্ঘাকেন? সত্যজিৎ রায়-এর কাঞ্চনজঙ্ঘার সঙ্গে কোনও ভাবে…

না, সরাসরি যোগাযোগ নেই। মানে ছবির রিমেক নয়। এই ছবি দেব পরিবারের গল্প। পরিবারের কর্তা সত্যজিৎ রায়ের ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ দেখে দার্জিলিংয়ে বাড়ি করেন। তিনি নেই, তার পরিবার চারিদিকে ছড়িয়ে। কোনও একটা ঘটনায় আবার সকলে কাঞ্চনজঙ্ঘার বাড়িতে একত্রিত হচ্ছে। আমি বাড়ির জামাই। অর্পিতার স্বামী। সম্পর্কের গল্প।

বাংলা সিনেমা সেভাবে চলছে না, এই হতাশা প্রাক-কোভিড পূর্বে ছিল, পরেও তার কোনও পরিবর্তন হয়েছে? এখন তো সকলে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ছবি দেখতে ব্যস্ত। বড় পর্দার জায়গা কি আগামী দিনে ওটিটি নিয়ে নেবে?

আমি ভবিষ্যতদ্রষ্টা নই। তাই আগামিদিনে কী হবে বলতে পারব না। তবে ভাল ছবি দিতে না পারলে দর্শক হলে যাবেন না, এটা বলতে পারি। বাঙালি কুঁড়ে। হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছেন ভাল কনটেন্ট, তাই সিনেমাহলমুখী হচ্ছেন না। আর কোভিডের আগে থেকেই ওটিটি নিজস্ব জায়গা তৈরি করছিল। সেটা লকডাউনে বিস্তার বাড়িয়েছে। তবে বড়পর্দা, বড়পর্দাই। তার জায়গা কেউ নিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস হয় না। টেলিভিশনের পর্দায় আমরা খেলা দেখি ঠিকই। কিন্তু মাঠে গিয়ে খেলা দেখার যে আনন্দ, তা কি এতে হয়!

সিনেমার ক্ষেত্রেও তাই। তবে হ্যাঁ, তার জন্য অবশ্যই আমাদের সেই ক্যানভাসে ছবি করতে হবে। যাতে দর্শক হলমুখী হন। এই ‘কাঞ্চনজঙ্গা’ ছবির কথাই যদি ধরা হয়, কাঞ্চনজঙ্গার ল্যান্ডস্কেপ কি টিভি বা ফোনে দেখে শান্তি পাওয়া যাবে? কিংবা ‘জগ্গা জাসুস’-এ যে নানা ক্যানভাস অনুরাগ (বসু) দেখিয়েছেন, তা বড়পর্দা ছাড়া ভাল লাগবে? দর্শক আর সিনেমা নির্মাতা—দু’তরফকেই একে-অপরকে বুঝতে হবে। তবেই এই শিল্প নিজের জায়গা ধরে রাখবে। দক্ষিণকেই ধরা যাক, সেখানে দর্শক সিনেমা দেখতে যান। ভাল লাগলে পাঁচবার দেখেন, অন্যকে দেখার জন্য বলেন। তাই সেখানে বড় বাজেটের ছবি তৈরি করার কথা ভাবতে পারেন প্রযোজক-পরিচালকরা। আমরা এখানেও সেই চেষ্টা করতে পারি। আমাদের ভাবতে হবে দর্শক কী চাইছেন।

বাংলায় ঘাটতি কোথায়?

ছবির গল্পে। উত্তম-সুচিত্রার ছবির কথা বলেন সবাই, মনে রাখতে হবে তাঁরা যে ছবি করতেন তার কাহিনি হত সাহিত্যনির্ভর। তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, বনফুল, প্রেমেন্দ্র মিত্র… আরে বাংলায় তো খনি রয়েছে। সেই খনি অন্যরা নিচ্ছেন, আর আমরা পাকামো করছি। ফেস্টিভ্যালের জন্য ছবি করছি। যার মাথা-মুণ্ড কেউ বুঝতে পারছে না। একটা ছবি করে বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে সেই ছবি নিয়ে যাওয়া, ভাল হোটেলে থেকে যোগাযোগ বাড়ানো। একটা দল এই করছে। দর্শক কী চান, তা ভাবার কিছু নেই। নিজেদের ভাবনাকে চাপিয়ে দেওয়া, ফল: সিনেমা চলছে না বলে কান্নাকাটি। কই, দক্ষিণে তো এমন হচ্ছে না। মুম্বইও করছে। আমরা কেন পিছিয়ে যাচ্ছি, এটা কি কেউ ভাবছি? যতক্ষণ সেটা না ভাবব, ততক্ষণ একে-অপরকে এমন দোষারোপ চলতেই থাকবে।

এখন তো টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে রং লেগেছে। আপনাকে কোনও রঙে দেখা যায় না কেন?

যায় না, যাবেও না। আমি অভিনেতা, অভিনয় করব। রং আমার জন্য নয়। যাঁদের কাজ নেই, তাঁরা রঙে যোগ দিচ্ছেন। আমায় অনেক কাজ করতে হবে।

দলে যোগ না দিলে কাজ পাবেন না তো…

আমি না খেতে পেয়ে মরে গেলেও রাজনীতি করব না। সেটা যাঁদের কাজ, তাঁরা করুন। আমার কাজ অভিনয় করা, দর্শকদের মনোরঞ্জন করা, তা-ই করছি, করব।

বাংলাতে তো আপনাকে এখন নাকি পাওয়াই যাচ্ছে না?

কেন পাওয়া যাবে না। ভাল চরিত্রের জন্য বললেই পাবে। এই তো অরিন্দমের (শীল) ‘তীরন্দাজ শবর’ করলাম। একটা সিরিজ়ের কথা চলছে। গোয়েন্দা সিরিজ়। সাহিত্যধর্মী। প্রিয়াঙ্কার চোট পাওয়ায়, যে কাজটি আটকে ছিল, সেটা করছি।

আবার নতুন গোয়েন্দা রূপে পাওয়া যাবে আপনাকে? কোন গোয়েন্দা?

নামটা এখনই বলতে পারব না। আমার এই গোয়েন্দা কাহিনি পড়া নেই। তাই বইটা পেলে, পড়ব আগে। তারপর বলতে পারব।

এবার শবরের গল্প শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আবার লিখেছেন তো?

মনে হয়। তবে শবর এমন একটা চরিত্র, যে সিনেমায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর বই হিসেবে বেশি বিক্রি হয়েছে। এটা একেবারেই সিনেমার চিত্রনাট্যের মত ছিল না। তাই তো নতুন করে এখন সিনেমার মতো করে লিখতে হচ্ছে।

আপনি তোপসে আর অজিত করেছেন। কখনও ইচ্ছে হয়নি মূল গোয়েন্দা করার? এখন যখন প্রায় সব অভিনেতাই ব্যোমকেশ আর ফেলুদা হয়ে গিয়েছেন…

(হেসে) পুরো গুলিয়ে গিয়েছে। কে যে কোন গোয়েন্দা, মনে রাখাই যাচ্ছে না। তবে আমি ফেলুদা হতে পারব না। বইয়ের ফেলুদা চরিত্রের বর্ণনা অনুযায়ী, সেই চোখ নেই, কণ্ঠস্বরও নেই। সৌমিত্রজেঠুর (চট্টোপাধ্যায়) ফেলুদা আইকনিক। তবে ‘বাদশাহী আংটি’ বইতে ফেলুদার যে স্কেচ সত্যজিৎ রায় করেছিলেন বা চরিত্রের বজ্রকণ্ঠের কথা বলেছিলেন, তার সঙ্গে কেবল বেনুদাকেই (সব্যসাচী চক্রবর্তী) মানায়। আর আজকাল ছবির গল্প নিয়ে যা হচ্ছে, এগুলো থেকে দূরে থাকাই ভাল। এর চেয়ে আমি শবরই ভাল। একটা ঘটনার কথা বলি। একজন পরিচালক এসেছিলেন—নাম বলছি না—আমার কাছে ব্যোমকেশ চরিত্রটি করার প্রস্তাব নিয়ে। সেখানে তিনি আমায় জানান, তাঁর ব্যোমকেশ দাদু। ছেলে রয়েছে। শুনে জানতে চাইলাম কে লিখেছে? বলেন, ‘আমি। বোঝেনই তো সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন করতে হয়।’ আমি বললাম, ব্যোমকেশ কেন? বললেন, ‘নামের জন্য’। মানে তিনি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বড় বোদ্ধা। আমি না করে দিই। তো এই সব পাকামো করা বন্ধ না হলে, বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।

তাহলে বাংলার বাইরের কথা শোনা যাক। মুম্বইয়ের পর দক্ষিণে পা…

(হেসে) হ্যাঁ, করছি। তেলেগু-হিন্দি ভাষার ছবি। নাগ অশ্বিন পরিচালিত ‘প্রজেক্ট কে’। এর আগেও একবার একটা দক্ষিণী ছবির কথা হয়েছিল। কিন্তু ‘জগ্গা জাসুস’-এর শুটিংয়ের সঙ্গে একই সময় হওয়ায় সেই প্রজেক্ট করতে পারিনি।

প্রজেক্ট কেমানে তো প্রভাস?

হ্যাঁ, প্রভাস, দীপিকা (পাড়ুকোন) এবং মিস্টার বচ্চন (অমিতাভ বচ্চন) রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত দু’দিন শুট হয়েছে দীপিকার সঙ্গে। আবার এপ্রিলে শুট হবে। প্রচুর সময় নিয়ে কাজ চলছে। কবে শেষ হবে জানি না। যাঁর যেমন সময় পাওয়া যাচ্ছে, তেমনভাবে শুট করছেন পরিচালক। কোনও তাড়াহুড়ো নেই। দক্ষিণে কাজ হয় হলিউডের মত। সময় নিয়ে ধীরে-সুস্থে একটা ভাল ছবি করেন। তা-ই তো এখন ওই ইন্ডাস্ট্রি সবার চেয়ে এগিয়ে গিয়েছে।

এই ছবির বাজেটও নিশ্চয়ই অনেক? এই যেমন আরআরআর’-এর বাজেট। রাজমৌলি নিজেই নিজের ছবির বাজেটকে টেক্কা দিচ্ছেন।

দিচ্ছেন যেমন, তেমন ব্যবসাও করবে ছবি। বাজেট উঠে আসে বলেই না এত বড় লগ্নি করতে পারেন। তাঁরা জানেন সকলে একবার অন্তত সিনেমাহলে গিয়ে ছবিটি দেখবে। ভাল না হলে দেখবেন না। কিন্তু ভাল হলে পাঁচবার যাবে, অন্যকে যেতে বলবে। ওঁরা সিনেমা শিল্পকে ভালবাসেন। শুধু কথার কচকচানি নেই। আমার নিজের একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি। কেরল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আমার ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দেখানো হয় সেই সময়। প্রিয়দর্শন যুক্ত ছিলেন উৎসবের সঙ্গে। আমাকে কেউ চেনেন না, ভাষা বোঝেন না, সাবটাইটেল দেখে ছবিটি দেখছেন। তাতেই রাত সাড়েটা, সকাল সাড়েটার শো হাউজ়ফুল। মানে কে অভিনেতা, সেটা জানার দরকার নেই, ভাল ছবি হলেই দর্শক ছবি দখতে যান। একটা ইন্ডাস্ট্রির সাফল্যের পিছনে অনেক কারণ থাকে।

তেলেগু কিছু শেখা হল?

হেসে, একেবারেই নয়। তবে আমি লতাজি-আশাজিকে (মঙ্গেশ্বকর) আদর্শ করে চলছি। তাঁরা যেমন ভাষা না জেনেও প্রায় সব ভাষায় গান করেছেন, আমিও তাঁদের পদ্ধতি অনুসরণ করে অন্য ভাষায় কাজ করব। শুধু আমি নই, দীপিকাও খুব টেনশনে থাকে তেলেগু ভাষার শটের সময় (দুই ভাষায় আলাদা শুট হচ্ছে)। আমি ভাষা জানি না শুনে একদিন বললও, ‘ম্যায় হি নেহি, আপ কো ভি তেলেগু নেহি আতি হ্যায়?’ বলে যেন স্বস্তি পেল (হাসি)।

লক ডাউনের আগে রাজকুমার সন্তোষি পরিচালিত ব্যাড বয়’,  যেখানে মিঠুন চক্রবর্তীর ছোট ছেলে ডেবিউ করছেনআপনি যে ছবিতে কাজ করছিলেনসেই ছবি কবে মুক্তি পাবে?

জানি না। এখন এতো ঘাড়ে-ঘাড়ে ছবি, কবে মুক্তি পাবে জানি না। তবে ছবিটা মুক্তি পেলে সকলের ভাল লাগবে। ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায় ঘরানার ছবি।  ওই ‘গোলমাল’ ছবির কথা মনে করাবে। আমার চরিত্রটা উৎপল দত্তের কথা মনে করাবে। রাজকুমার নিজে বলতেন শুটিংয়ের সময়, “ইয়ে মুভি আনেকে বাদ সব আপকো দেখকে উৎপল দত্ত সাবকো ইয়াদ করেঙ্গে”। মিঠুনদার ছেলে নামাশি খুব ভাল কাজ করেছে। দাদার থেকে ভাল নাচে। দাদাকে সে কথা বলতেই হেসে বলেন, “আমার ইউনিক স্টাইল কি কারও হতে পারে!” এটা অবশ্য ঠিকই বলেছেন (হাসি)।

শুধু এটা নয়, অনুরাগ কাশ্যপের ‘দোবারা’-ও তৈরি হয়ে রয়েছে। তাপসী পান্নু রয়েছেন। তবে সেটাও কবে মুক্তি পাবে জানি না। আর একটা ডেনমার্কের ছবি করেছি নাম ‘ইকবাল অ্যান্ড দ্য ইন্ডিয়ান জুয়েল’।  ডেনমার্কে মুক্তি পেয়েছে। হিন্দি ভার্সান এখনও মুক্তি পায়নি।

রাজস্থানে কোন ছবির কাজ করতে যাচ্ছেন?

‘নাইট ম্যানেজার’। এটা একটা সিরিজ়। অনিল কাপুর রয়েছেন মুখ্য চরিত্রে। শ্রীলঙ্কা, সিমলা, মানালির পর এখন রাজস্থানে শুটিং। এরপর রয়েছে মুম্বইতে।

মানে ছবির জন্য ভাল বেড়ানোও হচ্ছে…

(হেসে) এটাই তো আমাদের অভিনেতাদের প্লাস পয়েন্ট।

আর কোন-কোন ছবি রয়েছে পাইপ লাইনে?

কঙ্গনা রানাওয়াতের সঙ্গে ‘ধাকড়’ শেষ করলাম। হলিউড লেভেলে কাজ হয়েছে। পারফরম্যান্সের কথা ছেড়েই দিচ্ছি, সকলে অসাধারণ কাজ করেছেন। আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছি। এই ছবিতে দিব্যা দত্তা, অর্জুন রামপালও রয়েছেন। দাবি করে বলতে পারি, অর্জুন এই ছবিতে যে চরিত্রে কাজ করছেন, দর্শক তাঁকে আগে এমন ভাবে দেখেননি। কঙ্গনার অভিনয় নিয়ে কথা না বলাই ভাল। আমার বেশির ভাগ কাজই ওঁর সঙ্গে।

মুম্বইতে তো অনেক সুন্দরী নায়িকাদের সঙ্গে কাজ করলেন। আপনি নিজেও দিন দিন হট হচ্ছেন। কী করছেন?

(হো-হো করে হাসি) আরে ওঁদের পাশে ছবি তুলতে হবে না? কিছু না, শুধু খাওয়া কমিয়েছি। তা-ও ওই ভয়ঙ্কর ডায়েট নয়, সবই খাচ্ছি। তবে ভাত-রুটি-আলু একটু কমিয়েছি। তবে মটন খেলে আলু ছাড়া খাওয়া যায়! আমি ওই ৬৫ বছরের ভদ্রলোকের মতো জিম করতে পারব না।

কে?

অনিল কাপুর। আমি ঘুম থেকে উঠে চা হাতে ঘর থেকে বেরোচ্ছি, আর উনি জিম থেকে। হেসে বললেন, “আরে ইয়ার, কভি তো জিম যায়া করো”। বাব্বাহ্, উনিই করুন। আমার দরকার নেই। আমিও ওঁকে বলি, ‘তোমাকে তো সোনমের (কাপুর) বড় ভাই লাগে’। এটা অবশ্য কথার কথা নয়, সত্যিই তা-ই লাগে। কী ফিটনেস ফ্রিক রে বাবা!

শেষ প্রশ্ন: এত নায়িকাদের সঙ্গে কাজ করলেন বাংলার বাইরে, এক কথায় তাঁদের বিবরণ দিতে বললে-

মাধুরী: 

অসম্ভব ডেডিকেশন। একটা বিজ্ঞাপনই করেছি। সারাদিন দেখেছি সামনে থেকে। ড্রেস চেঞ্জ করা ছাড়া ভ্যানে নয়, ফ্লোরে থাকা পছন্দ।

দীপিকা:  

কোনও ট্যানট্রাম নেই। দ্বিতীয় দিন শুটিং। সকাল সাড়ে ৯টায় এসে মেক-আপ করে বসে আছে। প্রথম শট পাঁচটায় হয়েছে। কোনও বিরক্তি নেই। ও-ও মেকআপ ভ্যানের বদলে বাইরে টেবিল পেতে ফোন করা বা আড্ডা দিতে ভালবাসে। আমায় শটে ডাকছে দেখে খালি বলেছে, “ফির আপকো বুলা রহেঁ হ্যায় দাদা, হমে নেহি, কেয়া কর রহে হ্যায়”। ব্যাস, ওইটুকু।

এখানে একটা সিরিয়াল হিট করলে কফি-চা পছন্দ না হলে ছুড়ে মারে! এটাই পার্থক্য।

ক্যাটরিনা: 

এমনি খুব মিষ্টি মেয়ে। কোনও সমস্যা নেই জীবনে। শুধু ড্রেস নিয়ে খুবই খুঁতখুঁতে। ড্রেসের মাপ ঠিক না হলে, পরিচালকের কাছে কেঁদে-কেটে একশা হবে, কিন্তু শট দেবে না।

তাপসী: 

খুব মিষ্টি মেয়ে। ফ্লোরে চুপচাপই থাকে। কথা প্রায় বলেই না। চোখাচুখি হলে মুচকি হাসি।

কঙ্গনা: 

ভীষণ ইনভলভড ছবির সঙ্গে। শট নিয়ে চারবার আলোচনা না করলে হবেই না। পরিচালককে বারবার জিজ্ঞাসা করবে, ‘কেন এটা করব আমি, কেন এটা বলব’। কাজের জন্য নিবেদিত প্রাণ।