
বলিউড ‘বাদশা’ শাহরুখ খান এবার পা রাখলেন ৬০-এ। বার্ধক্যের গণ্ডিতে রোম্যান্স কিং, মেনে নিতে অস্বস্তি হলেও এটাই সত্যি। একের পর এক ফ্লপ, মাঝে বিরতি। তারপর অ্যাকশন জ্যঁরে ব্লকবাস্টার হয়ে সিনেজগতে কামব্যাক করলেন বাদশা। প্রমাণ করলেন, পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে। সব ক্ষেত্রে এই প্রবাদ সত্যি না হলেও শাহরুখ ব্যতিক্রমী হলেন না। ওই যে, নিজেই এক সাক্ষাৎকারে শাহরুখ জানিয়েছিলেন, তিনি মুম্বইয়ে রাজত্ব করতে চান। আজ তিনি গোটা বিশ্বে রাজ করছেন।
তাঁর আগামী ছবি কিং-এও তিনিও অধিকাংশ অ্যাকশন নিজেই করছেন। ৬০ পেরোলেও আজও তাঁর ফিটনেস, এনার্জি এবং উপস্থিতি তরুণদের টেক্কা দেয়। পর্দায় ‘পাঠান’ কিংবা ‘জওয়ান’-এর অ্যাকশন দৃশ্যে তাঁর অ্যাবস আর ফ্লেক্স দেখে যে কেউ অবাক হয়েছেন। কিন্তু এই অসাধারণ শরীরের গঠনের পিছনে রয়েছে কঠোর অনুশাসন, বিশেষ খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা— যা শাহরুখকে করে তুলেছে ফিটনেস আইকন।
কড়া ডায়েট: চিনি ও কার্বোহাইড্রেট-এ সাফ না
শাহরুখ খান বহু বছর ধরেই সম্পূর্ণ চিনি-মুক্ত ডায়েট অনুসরণ করেন। তিনি বলেন, “আমি এক চামচ চিনি খেলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়।” তাঁর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ভাত, রুটি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার। পরিবর্তে ডায়েটে থাকে ডিমের সাদা অংশ, গ্রিলড চিকেন, মাছ, সবুজ সবজি, সালাদ ও প্রোটিন শেক। দিনে পাঁচবার ছোট ছোট মিলে খান তিনি, যাতে বিপাক প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকে। জল পান করেন প্রচুর— দিনে অন্তত ৩.৫ লিটার।
কঠোর শরীরচর্চা: সপ্তাহে পাঁচ দিন অনুশীলন
শাহরুখ খান প্রতিদিন অন্তত ৬০ থেকে ৯০ মিনিট সময় দেন শরীরচর্চায়। তাঁর ট্রেনিং রুটিনে থাকে কার্ডিও, ওয়েট ট্রেনিং, কোর এক্সারসাইজ ও ফাংশনাল ফিটনেস।
প্রশিক্ষক প্রভাল মেদার সঙ্গে তিনি কাজ করেন দীর্ঘদিন। সপ্তাহে পাঁচ দিন অনুশীলন করেন তিনি, তবে রবিবারে সম্পূর্ণ পরিবারের জন্যে বরাদ্দ রাখেন তিনি। ‘জওয়ান’-এর শুটিংয়ের সময়ও তিনি শুটিং শুরুর আগে প্রতিদিন সকালে ওয়ার্কআউট করতেন। প্রতিদিন ট্রেনিং শেষে খান এক বাটি ফল ও প্রোটিন শেক।
মানসিক ফিটনেস ও ঘুম
শাহরুখ বলেন, “ফিটনেস শুধু শরীরের জন্য নয়, মনকেও শান্ত রাখতে হয়।” তাই তিনি প্রতিদিন কিছু সময় ধ্যান ও প্রার্থনায় নজর দেন। যদিও তাঁর ঘুমের সময় খুব কম— গড়ে ৫ ঘণ্টা, তবু বলেন, ‘ঘুমের মানই আসল চাবিকাঠি’।
শাহরুখের কাছে বয়স শুধু সংখ্যা
৬০ বছর বয়সেও শাহরুখের শরীর ও আত্মবিশ্বাস প্রমাণ করে— বয়স আসলে শুধু একটা সংখ্যা। নিয়মিত শরীরচর্চা, নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক শৃঙ্খলাই তাঁকে প্রাণবন্ত রেখেছে। নিজের ফিটনেস মন্ত্র নিয়েই একবার তিনি বলেছিলেন, “যখনই আয়নায় তাকাই, মনে হয় আমি এখনও সেই দিলওয়ালে শাহরুখ।”
চিনি-মুক্ত জীবন, নিয়মিত ব্যায়াম ও অগাধ আত্মবিশ্বাস— এই তিন সূত্রেই গাঁথা শাহরুখ খানের ফিটনেস মন্ত্র।