শাহরুখ খান ও গৌরী খানের ৩৩ বছরের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাঁদের সম্পর্কের মধ্যে কখনোই ধর্ম বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়নি, এবং দুজনেই বারংবার জানিয়েছেন যে, তাঁদের সম্পর্কের ভিত্তি হলো ভালোবাসা এবং পারস্পরিক সম্মান। ১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর হিন্দু রীতিনীতি মেনে তাঁদের বিয়ে হয়, সেই সময় শাহরুখ ছিলেন এক জন স্ট্রাগলার। কিন্তু গৌরী জানিয়েছেন যে শাহরুখ কখনও তাঁকে ধর্ম পরিবর্তন করতে বলেননি। বরং, শাহরুখের নিজের কথায়, তাঁর পরিবারে ধর্ম নিয়ে কোনো বিভেদ বা ছুত্মার্গ নেই। তিনি নিজের ছেলে, মেয়ে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ধর্মের প্রতি যথাযথ সম্মান দিয়ে চলেন।
তবে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া কিছু ছবি, যেখানে শাহরুখ, গৌরী ও তাঁদের ছেলে আরিয়ান হজ যাত্রায় অংশগ্রহণ করেছেন, তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই জানতে চাইছেন, ৩৩ বছর পর কি ধর্ম পরিবর্তন করলেন গৌরী খান? তবে গৌরী বা শাহরুখ তাঁদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে কখনও কোনো বিতর্কে পড়েননি। বরং, গৌরী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, শাহরুখ ও তিনি কখনও নিজেদের ধর্মের প্রতি অনুগত থেকে একে অপরকে সম্মান করেছেন এবং তাঁদের সন্তানদেরও সেই শিক্ষাই দিয়েছেন।
শাহরুখ ও গৌরী তিন সন্তান—আরিয়ান, সুহানা ও আব্রাম—এর জীবনে ধর্মের কোনো বাধা তৈরি করেননি। তাঁদের সন্তানদের বড় করা হয়েছে একটি ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশে, যেখানে তাঁরা ধর্মকে সম্মান করেন, কিন্তু তাদের জাতীয় পরিচয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শাহরুখ খান বলেছিলেন, তাঁর সন্তানদের জন্য ধর্মের চেয়ে বড় কথা হলো, তাঁরা ভারতীয় এবং সেই পরিচয় নিয়ে গর্বিত হতে শিখেছে। তাঁদের মন্নতে হিন্দু দেবতা এবং কোরান একসঙ্গে রাখা হয়েছে, এবং প্রতি বছর সযত্নে দিওয়ালি ও ঈদ উদযাপন করা হয়।
গৌরী নিজে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আরিয়ান তাঁর বাবার ধর্মে বিশ্বাসী এবং নিয়মিত নামাজ পড়েন। শাহরুখ খানও সর্বদা বিশ্বাস করেছেন যে ধর্মের ভিত্তিতে কোনো পার্থক্য নয়, বরং একজন ভারতীয় হিসেবে তাঁদের পরিচয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গত, যে ছবিটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে তা পুরোটাই ভুয়ো। আদপে যে এমনটা ঘটেনি তা ছবি দেখেই বুঝতে পেরেছেন অনেকে।