
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবরে গোটা দেশ হতবাক ও মর্মাহত হয়ে পড়ে। দুবাইয়ের একটি হোটেলের বাথটাবে দুর্ঘটনাবশত ডুবে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বহু বছর পরেও, শুধুমাত্র তাঁর কাজের জন্য নয়, বরং তাঁর নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের জন্যও শ্রীদেবী আজও স্মরণীয়। এই নিষ্ঠার অন্যতম সেরা উদাহরণ তাঁর শেষ ছবি ‘মম’ (২০১৭)—যেটি ছিল তাঁর ৩০০তম ছবি। সম্প্রতি, ‘মম’ ছবির প্রযোজক ও শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর এই ছবিকে ঘিরে কিছু অজানা তথ্য শেয়ার করেছেন।
এই ছবিতে শ্রীদেবী অভিনয় করেছিলেন এক দৃঢ়চেতা মায়ের চরিত্রে, যিনি নিজের মেয়ের ধর্ষণের বিচার পেতে লড়াই করেন। এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য গভীর আবেগ ও তীব্র মনঃসংযোগের প্রয়োজন ছিল। তাঁর অভিনয় দর্শক ও সমালোচক—উভয়ের কাছ থেকেই বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। বনি কাপুর জানান, শ্রীদেবী স্বেচ্ছায় তাঁর পারিশ্রমিক থেকে ৭০ লক্ষ টাকা কমিয়ে দেন, যাতে ছবির সংগীতের জন্য অস্কারজয়ী সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান-কে নেওয়া যায়। বনি বলেন, “’মম’ ছবির শ্যুটিং চলাকালীন আমরা এ আর রহমানকে নিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাঁর পারিশ্রমিক আমাদের বাজেটের বাইরে ছিল। আমরা শ্রীদেবীর পারিশ্রমিকের জন্য একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক ধার্য করেছিলাম। কিন্তু শ্রীদেবী নিজেই বলেছিলেন, বাকি থাকা ৫০–৭০ লক্ষ টাকা যেন তাঁকে না দেওয়া হয়, বরং সেটা যেন রহমানকে দেওয়া হয়।” শুধু একজন অভিনেত্রী হিসেবে নয়, একজন প্রকৃত শিল্পী হিসেবে যিনি পুরো সিনেমার ভিশনে বিশ্বাস করতেন, এই সিদ্ধান্ত তারই প্রমাণ। তিনি শুধু অভিনয় করেননি, বরং আবেগগত ও আর্থিকভাবে বিনিয়োগ করেছিলেন সিনেমাটির মান বাড়ানোর জন্য।
বনি কাপুর আরেকটি বিস্ময়কর তথ্য জানান। ‘মম’ ছবির শুটিং চলাকালীন, স্বামী-স্ত্রী হয়েও শ্রীদেবী পুরো সময়টাতে বনি কাপুরের সঙ্গে একটি রুম শেয়ার করতে রাজি হননি। বনি বলেন, শ্রীদেবী চরিত্রে এতটাই ডুবে গিয়েছিলেন যে, তিনি চেয়েছিলেন নিজেকে পুরোপুরি সেই মানসিক ভাবনায় রাখতে। বনি কাপুর আরও জানান, ছবির চূড়ান্ত চিত্রনাট্যটি ছিল ২১ নম্বর খসড়া। ছবির বেশিরভাগ শুটিং হয়েছিল উত্তর প্রদেশের নয়ডা এবং জর্জিয়া-তে।