
প্রভু জগন্নাথ না ডাকলে, তাঁকে দু’ চোখ ভরে দেখা যায় না, এ কথা বিশ্বাস করেন অনেকেই। সিনেমার ক্ষেত্রেও হয়তো সেটা সত্যি। প্রকৃতি না চাইলে পরিচালকের মগজে জন্ম নেওয়া ছবি, হয়তো অপেক্ষা করে থাকে। যেমন হয়েছে ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবির ক্ষেত্রে। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কে এই ছবির জন্ম ছয় বছর আগে। তবে কেন আলমারির তাকে তোলা ছিল এত দিন? প্রকৃতির খেলা। যে ছবিতে তিনটে সময়কাল। কখনও বর্তমান সময়ের এক পরিচালকের গল্প, কখনও গিরীশ ঘোষ-নটী বিনোদিনীর বাস্তব, আবার কখনও শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর লীলা মিলে-মিশে একাকার হয়েছে চিত্রনাট্যে। এক সময়কাল থেকে অন্য সময়কালে মানবজীবনের আবেগ যে একই রকম কড়া। কষ্ট বা আনন্দ যে একই রকম কামড় দেয়। আবার এ কথাও ঠিক, অনেকে বিশ্বাস করেন, পুনর্জন্মে ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। কোন পথে সৃজিত চালিত করেন দর্শকদের, তার জন্য তাঁর অনুরাগীদের তীর্থের কাকের মতোই অপেক্ষা করতে হবে এই বছরের বড়দিন পর্যন্ত।
১৫ জুলাই আর ১৬ জুলাই এই ছবির তারকারা পুরীর সমুদ্রতটে শুটিং করছেন। নিত্যানন্দ প্রভুর বেশে যীশু সেনগুপ্ত, বিনোদিনীর বেশে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় বা গিরীশ রূপে ব্রাত্য বসু, কোনও তারকার দিক থেকেই চোখ ফেরানোর উপায় নেই। সঙ্গে উপস্থিত ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, ইশা সাহা, সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়, দেবদূত ঘোষ, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরীতে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন? পরিচালক TV9 বাংলাকে জানালেন, ”দারুণ অভিজ্ঞতা। ছোটবেলার অনেক স্মৃতি আছে পুরীতে। মনে পড়ে পুরীর সমুদ্র ভয়ঙ্কর উত্তাল ছিল। এখনও সমুদ্র ঠিক সেরকম। সেই কারণে সকালে একটা অদ্ভুত উন্মাদনা কাজ করে। প্রথমে দিব্যজ্যোতিকে (দত্ত) নিয়ে শুটিং ছিল। নীলাচলে মহাপ্রভুর আইকনিক দৃশ্য। সেটা শুট করতে গিয়ে সত্যি গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। বাকি দৃশ্যের শুটিংও মনে রাখার মতো। তিনটে শতাব্দীর গল্প বলছি। তিনটে শতাব্দী থেকে যেসব চরিত্র আসছে, সকলের শুটিং ছিল বলেই সবাই মিলে ছবিটা তুলতে পারলাম।”
লক্ষণীয় এই ছবিতে প্রযোজক রাণা সরকার আর যীশু সেনগুপ্তর সঙ্গে আবার কাজ করছেন সৃজিত। এসভিএফ এন্টারটেনমেন্টও রয়েছে ছবির প্রযোজনায়। রাণা-সৃজিত-যীশু ‘জাতিস্মর’-এর টিম। এই ছবি যেমন বহু পুনরাবৃত্তির গল্প বলে, পরিচালকও কি এই ছবির জন্য কোনও পুনরাবৃত্তির মুখে দাঁড়িয়ে? উত্তর সময়ের হাতে। বা হরগৌরী প্রাণনাথ…মাথার উপর যে জগন্নাথ থাকেন, তাঁর হাতে।