TV9 বাংলা ডিজিটাল: ২০১০। ছবির নাম ‘অ্যাপার্টমেন্ট’। সেখানেই তিনি শেষ অভিনয় করেছিলেন। তারপর ১০ বছরে অনেক জল গড়িয়েছে। বিতর্ক সঙ্গী হয়েছে তাঁর। তিনি অর্থাৎ বলিউড অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত (Tanushree Dutta)। হ্যাশট্যাগ ‘মিটু’ (me too movement) যাঁর হাত ধরে আছড়ে পড়ল আরব সাগরের তীরে বলি ইন্ডাস্ট্রিতে। তারপর অনেকেই নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন। সামনে এল অনেক অভিযোগ। কয়েক বছর আগে কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তনুশ্রী। তাঁর অভিযোগের তির ছিল অভিনেতা নানা পটেকর (nana patekar), কোরিওগ্রাফার গণেশ আচারিয়ার দিকে। অভিনয় থেকে পুরোপুরি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। বলা ভাল, বলিউড থেকে আর তেমন অফার পেতেন না। সেই তনুশ্রী ১০ বছর পরে ফের ফিরছেন সিলভার স্ক্রিনে।
বলিউডে কামব্যাকের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন তনুশ্রী। তিনি লিখেছেন, “লস অ্যাঞ্জেলসে আমার আইটি ট্রেনিং নেওয়ার কিছু পুরনো খবর ঘুরছে। আমি সত্যিই আইটি ট্রেনিং নিয়েছিলাম। মার্কিন সরকারের সেনা বিভাগে আইটির চাকরিও পেয়েছিলাম। খুবই সম্মানীয় পদ। কিন্তু আমি ওই অফার গ্রহণ করিনি। কারণ পেশাদার শিল্পী হিসেবে কেরিয়ারে নতুন কিছু করতে চাই আমি।” তিনি আরও জানান, ওই অফার গ্রহণ করলে তাঁকে অন্তত তিন বছরের জন্য আমেরিকা যেতে হত, তা তিনি এই মুহূর্তে চাননি।
বলিউডে ওয়েব সিরিজে নাকি ভাল অফার রয়েছে তনুশ্রীর কাছে। তাঁর কথায়, “কিছু খারাপ লোকের জন্য আমি পেশা বদল করব না। বরং আমার কাছে বলিউডের যে সব অপশন রয়েছে, সেগুলো ভেবে দেখব। মুম্বইতে আমার অনেক শুভাকাঙ্খীও রয়েছেন। আমার তো মনে হচ্ছে, শত্রুদের তুলনায় আমাকে কাস্ট করতে বলিউড অনেক বেশি উৎসাহী। ”
আরও পড়ুন, যদি অভিষেক ‘বচ্চন’ না হতেন, ট্রোলিংয়ের জবাবে কী বললেন অভিনেতা?
এই মুহূর্তে হাতে দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বেশ কিছু প্রজেক্ট রয়েছে তনুশ্রীর। রয়েছে বিজ্ঞাপনের কাজও। নিজেকে পর্দায় ফেরাতে ১৫ কিলো ওজন কমিয়ে ফেলেছেন। সব মিলিয়ে কামব্যাকের জন্য প্রস্তুত তিনি। দর্শক ফের তাঁকে পর্দায় দেখতে প্রস্তুত তো?
আরও পড়ুন, আত্মপ্রকাশ করল বাংলার নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘ক্লিক’
এক নজরে তনুশ্রী এবং #মিটু
২০০৮- প্রথম অভিনেতা নানা পটেকরের বিরুদ্ধে সিনে অ্যান্ড টিভি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেন তনুশ্রী। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০১৩- একটি সাক্ষাৎকারে ফের একই অভিযোগ করেন তনুশ্রী। কিন্তু তখনও বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় সব মহল থেকেই।
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮- এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ফের নানা পটেকরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন তনুশ্রী। ২০০৯-এর ছবি ‘হর্ন ওকে প্লিজ’-এর শুটিংয়ে তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ করেন নায়িকা।
২০১৮- তনুশ্রীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে সিনে অ্যান্ড টিভি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু সেই অভিযোগের কোনও সুরাহা হয়নি।
২০১৮- নানা পটেকরের তরফ থেকে তনুশ্রীর কাছে আইনি নোটিস যায়। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা তনুশ্রীর বিরুদ্ধের মানহানির মামলা করে।
৬ অক্টোবর, ২০১৮- তনুশ্রী ওশিয়ারা থানায় নানা, ‘হর্ন ওকে প্লিজ’-এর পরিচালক রাকেশ সারং, কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্য এবং প্রযোদন স্যামি সিদ্দিকির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
১৩ অক্টোবর, ২০১৮- তনুশ্রীর আইনজীবী নীতিন সতপতে ওশিওয়ারা থানায় অভিযুক্ত চারজনের নারকো অ্যানালিসিস, ব্রেন ম্যাপিং এবং লাই ডিটেক্টর টেস্টের আবেদন জানান।
জুন, ২০১৯- যৌন হেনস্থার অভিযোগ থেকে মুক্তি পান নানা। ওশিওয়ারা থানার তরফে বলা হয়, প্রতিশোধ নিতে অভিযোগ করেছিলেন তনুশ্রী।