
ছোটবেলা থেকে খুবই অভাবের সংসারে থাকতেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। সেই সংসারে ছিলেন বাবা, মা, দাদা এবং তিনি। টেনেটুনে চলা সংসারে সারা বছরে মোটে দুটো নতুন জামা হত সুদীপ্তার। কিন্তু তিনি ভাল ছিলেন, শান্তিতে ছিলেন। কারণ তাঁর বাবা-মা সবসময় সমর্থন করেছিলেন তাঁকে এবং তাঁর দাদাকে।
একটি প্ল্যাটফর্মে কথা বলতে এসে সুদীপ্তা জানিয়েছিলেন, এমনও সময় গিয়েছিল, যখন তিনি এবং তাঁর দাদা একটি ডিম দু’জনে ভাগ করে খেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা হাল ছাড়েননি। ক্লাস টুয়েলভে পড়ার সময় সিরিয়ালে অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল সুদীপ্তার। তাঁকে খেলা সিরিয়ালে প্রথম সুযোগ দিয়েছিলেন রবি ওঝা। সেই সময় অন্যান্য আর্টিস্টদের সঙ্গে একই মেকআপ রুমও শেয়ার করতে পারতেন না অভিনেত্রী।
বলেছিলেন, “আমি বাকিদের সঙ্গে মেকআপ রুম শেয়ার করতে পারতাম না। একটা চেয়ারে চুপ করে বসে থাকতাম। আমাদের তখন জুনিয়র আর্টিস্ট ভাবা হত। একদিন এক নামকরা আর্টিস্ট আমাকে বলেছিলেন, ‘এই তুই গতকালের এপিসোড দেখেছিল, তুই কিন্তু দারুণ করেছিস’। দেখব কীভাবে, আমার বাড়িতে তো কেবল লাইন কেটে দিয়ে গিয়েছিল।”
হাতে মাত্র ৫০ টাকা নিয়ে স্টুডিয়ো পাড়ায় আসতেন সুদীপ্তা। শাটেলের টাকা বাকি থাকত তাঁর। এক বোতল জল কেনার ক্ষমতা ছিল না। একটা ছাতা ছিল না তাঁর। ‘খেলা’ সিরিয়ালে অভিনয় করে প্রথম পারিশ্রমিক হিসেবে ১,৬০০ টাকা পেয়েছিলেন সুদীপ্তা। সেই টাকা দিয়ে একটি প্যান্ট, একটা টপ, একপাটি জুতো এবং একটা ব্যাগ কিনেছিলেন অভিনেত্রী।
এ সব এখন অতীত। সময়ের সিঁড়ি দিয়ে অনেকটা উপরে উঠে গিয়েছেন সুদীপ্তা। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অভিনেত্রী হিসেবে। খলনায়িকার চরিত্রেই বেশি দেখা গিয়েছে তাঁকে। মনের মানুষকে বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী। বাবাকে হারিয়েছেন কিছুদিন আগেই। বাবার মৃত্যু তাঁকে ভীষণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। নায়িকা চান, বাবাই যেন তাঁর কোলে সন্তান হয়ে ফিরে আসেন…