বাড়ি থেকে শুটিং ফ্লোর। আবার শুটিং ফ্লোর থেকে বাড়ি। অভিনেত্রী অনিন্দিতা রায়চৌধুরির দৈনন্দিনের রুটিন এমনটাই থাকে। দুর্গা পুজো সাময়িক ব্যতিক্রম তৈরি করে বৈকি! সেই ব্যতিক্রমকে এ বার পুরো মাত্রায় কাজে লাগালেন অনিন্দিতা।
আসলে পুজোর কয়েকটা দিন সাধারণত শুটিং বন্ধ থাকে। সেই অবসরে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গেলেন অনিন্দিতা। কখনও মাইথন বাঁধ, কখনও আসানসোল, কখনও গড়পঞ্চকোট। বিভিন্ন ডেস্টিনেশন থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে ছবি শেয়ার করেছেন অনিন্দিতা।
ট্যুর থেকে ফিরে অনিন্দিতা TV9 বাংলাকে বললেন, “গত পাঁচ বছর পর আমার জীবনে একটা পরিবর্তন এসেছে। সেটা কী আমি এখনই বলব না। গত পাঁচ বছর কলকাতায় দুর্গাপুজোর সময় যেমন জীবন কাটিয়েছি, সেটার বদল চেয়েছিলাম। এই বন্ধুরা আরও বেশ কিছু বন্ধু আমাকে এই সময়টা পেরিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। সুদীপ সরকার, আভেরি সিংহ রায়, ঈশানী সেনগুপ্ত ইন্ডাস্ট্রির এই তিন বন্ধু ট্যুরে ছিল। আর মানালি, অভিষেক এবং জয়িতা ট্যুরে যায়নি ঠিকই, কিন্তু এই সময়টা পুরনো অনিন্দিতাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।”
দুর্গা পুজোয় কলকাতায় ভিড় নয়। বরং নিরিবিলিতে একেবারে ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কয়েকটা দিন আনন্দ করলেন অনিন্দিতা। সারা বছর শুটিংয়ের চাপে এই সুযোগ বড় একটা পাওয়া যায় না। তাই ছুটির মুহূর্ত মিস করতে চাননি তিনি। হ্যাঁ, কলকাতাকে মিস করেছেন বটে। কারণ শহরে থাকলে ঘনিষ্ঠদের পুজোতে যাওয়া তাঁর রুটিনের অন্যতম। তবে একেবারে অন্য রকম পুজো কাটানোর সুযোগ তো সব সময় হয় না। তাই এই বেড়ানোর অভিজ্ঞতাও তাঁর সারা জীবনের সঞ্চয় হয়ে থাকবে।
গত ১০ বছর ধরে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন অনিন্দিতা রায় চৌধুরি। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন ক্যামেরার নেপথ্যে। এখন তিনি অভিনেত্রী। বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ধুলোকণা’য় অভিনয় করছেন অনিন্দিতা। এই ‘ধুলোকণা’য় ‘চান্দ্রেয়ী’ চরিত্রটি পুরোপুরি নেগেটিভ। এই ধারাবাহিকেই কিংবদন্তী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে TV9 বাংলাকে আগেই অনিন্দিতা বলেছিলেন, “সাবুদিকে দেখলেই আমার মনে হয়, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘মৌচাক’, ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’, যে জীবনটা সাদা কালো পর্দায় দেখেছি, সেটাতে উনি ছিলেন। ভয়ঙ্কর অভিনেত্রী। একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করলে ভয়ে থাকি। সারাক্ষণ মজা করেন। ফ্লোর মাতিয়ে রাখেন। ওঁর বয়স নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারি না আমরা। নিজেদেরই লজ্জা করে। যে এনার্জি দেখান, আমার তো মনে হয়, নিজে এই বয়সে পৌঁছবই না।”
মার্জিত সাজ, সুন্দর শাড়ি, লম্বা বেনুনির চান্দ্রেয়ী। বাড়ির লোকের সঙ্গে মোটেই ভাল ব্যবহার করেন না তিনি। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিতে ওস্তাদ। বাড়ির লোককেই কথা শোনাতে ছাড়েন না, তো ফুলঝুরি কোন ছাড়! ফুলঝুরিকে মোটেই পছন্দ করেন না। আর সেটা বুঝিয়েও দেন। চোখের জল ফেলে ফুলঝুরি। কষ্ট পায়। অনস্ক্রিন চান্দ্রেয়ী এবং ফুলঝুরি ঠিক এমনই। সৌজন্যে ধারাবাহিক ‘ধুলোকণা’। ফুলঝুরির চরিত্রে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন অভিনেত্রী মানালি মনীষা দে। অনস্ক্রিনে দর্শক চান্দ্রেয়ী এবং ফুলঝুরিকে যেমন দেখেন, অফস্ক্রিনে অনিন্দিতা এবং মানালির সম্পর্কটা ঠিক উল্টো। ২০১৬ থেকে শুরু হয়েছে তাঁদের বন্ধুত্ব। একসঙ্গে পথ চলা। সেই অফস্ক্রিন বন্ধুত্ব আজও অটুট।
‘ধুলোকণা’ ছাড়া এই মুহর্তে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকেও অনিন্দিতার অভিনয় দেখছেন দর্শক। সেখানে তিনি নোয়ার (অভিনেত্রী শ্রুতি দাস) মা। সেই চরিত্রেও ছক ভাঙা কাজ করেছেন অনিন্দিতা। আর পারফরম্যান্স দিয়ে তার যোগ্য মর্যাদা দিচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন, Saptarshi Sohini: মাকে ছাড়া প্রথম পুজো, বাবা এবং সপ্তর্ষির সঙ্গে পাহাড়ে কাটালেন সোহিনী
আরও পড়ুন, Farrukh Jaffar: প্রয়াত ‘গুলাবো সিতাবো’র ‘বেগম’ অভিনেত্রী ফারুখ জাফর