কখনও জয়া, কখনও পর্ণা, পর্দায় বারে বারে বিভিন্ন চরিত্রে ট্রোলের শিকার হতে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রী পল্লবী শর্মাকে। যদিও তাঁর ধারাবাহিক বারে বারে প্রমাণ করেছে তিনি জনপ্রিয়। কে আপন কে পর ধারাবাহিক দীর্ঘদিন ধরে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিল। অন্যদিকে অভিনেত্রীর নতুন ধারাবাহিক নীম ফুলের মধুও ইতিমধ্যেই ট্রোলের শিকার হয়েও টিআরপি-র তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। তবে এই ট্রোল বিষয়টি কীভাবে দেখেন পল্লবী? টিআরপি-র তালিকায় ধারাবাহিকের স্থান নিয়ে TV9 বাংলায় মুখ খুললেন জি বাংলার ‘নিম খুলের মধু’ ধারাবাহিকের পর্ণা।
ধারাবাহিকে যদি পল্লবী ট্রেন্ড ধরে নিতে হয়, ট্রোল কীভাবে দেখ?
আমি এই বিষয়টা দেখি খুব পজেটিভভাবে। মানুষের জীবনে তো প্রচুর কাজ। যখন দেখি মানুষ আমায় নিয়ে ট্রোল করছে, মানুষ আমায় নিয়ে ভাবছে, ট্রোল করছে, আমি তাতেই ভীষণ খুশি। বরাবরই পজেটিভভাবেই দেখে এসেছি ট্রোলিং-কে। কারণ আমি চর্চায় আছি মানেই আমায় নিয়ে সবাই ভাবছে। এটা আমার সিরিয়াল লোকে দেখে বলেই ঘটছে। তাই জানতে পারছে আমি সিরিয়ালে কী করছি না করছি। এবং আমি দর্শকের থেকে প্রচুর ভালবাসা পেয়েছি। যাঁরা ট্রোল করেন আমি তাঁদের কাছেও কৃতজ্ঞ যে তাঁরা আমায় এতোটা ভালবাসা দেয়। আমার সিরিয়ালকে এতোটা ভালবাসা দেয়।
কোনও একটা দৃশ্যে অভিনয় করার সময় বিষয়টা মাথায় ঘোরে না?
আমরা তো দিনের শেষে প্রডাক্টটা তৈরি করি দর্শকদের জন্যই। তাঁদের ভাল লাগার জন্য। আমরা ব্যক্তিগত ভাললাগাকে অগ্রাধিকার দিয়ে তো কোনও কাজ করি না। মূল উদ্দেশ্যই হল দর্শক। দর্শকেরা যদি এই বিষয়গুলোতে মজা পায়, পছন্দ করেন, সেটা করতে আমার কোনও অসুবিধে নেই। দিনের শেষে এমন কিছু কাজ করলাম যেটা আমাদের ভাল লাগছে, অথচ দর্শকদের ভাললাগছে না, তাতে তো কোনও লাভ নেই। যেটা দর্শক নিচ্ছেন সেটা বানানোই ভাল। দর্শকেরা মন দিয়ে দেখছেন বলেই তো দৃশ্য ধরে ধরে ট্রোল করছেন।
টিআরপি-র প্রতিযোগিতায় কতটা চাপ অনুভব করেন?
আমি না কখনও এভাবে ভাবি না। আমি শুধু আমার কাজটুকু করব। আমি মনে করি একটা সিরিয়াল হিট হওয়ার পিছনে, একটা গল্পের অবদান সব থেকে বেশি। দর্শক হয়তো আমায় দেখে টিভিটা খুলছে, কিন্তু গল্পটাকে তো ধরে রাখতে হবে। দর্শকদের ভাল লাগতে হবে। নয়তো আমার মুখ তাঁরা চার-পাঁচদিন দেখবে। নয়তো যখনই একঘেয়ে লাগবে তাঁদের, অপর চ্যানেলে কী ধারাবাহিক হচ্ছে, সেখানে চলে যাবে। এখন মানুষের কাছে অপশন এতো বেশি…। রিমোর্টের একটা বটন টিপলে ১০টা অপশন। কেন দেখবেন তাঁরা যেটা তাঁদের ভাল লাগছে না। আগের চরিত্রকেই বলুন আর এই চরিত্রকেই বলুন, অবশ্যই দর্শক যে আমাকে এতটা ভালবাসা দিয়েছেন, এটা আমার কাছে আশীর্বাদ।
কেরিয়ারের শুরুতেও কী এতটাই সহজভাবে নিতেন ট্রোলিং?
সত্যি বলতে কি কখনই আমি এতোটা ভাবিনি। আর ‘কে আপন কে পর’ ধারাবাহিকের পর তো আর ভাবতেই হয়নি। জবা চরিত্রটাকে দর্শক এতো ভালবাসা গিয়েছেন, আমি কখনও ভাবিনি যে আমায় টিআরপি নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ সব সময় মনে হতো দর্শক পাশে রয়েছে। আমি খুব নিশ্চিন্তে থাকতাম। সত্যি বলতে এখন আমরা অনেক বেশি টিআরপি নিয়ে মাথা ঘামাই, আগে এটা ছিল না। কখনও লিস্টই দেখতাম না। আমরা এখনও এই বিষয় ভাবি না। এটা চ্যানেলের ভাবনা কারণ এটা ব্যবসা। কিন্তু আমরা কাজটা করি আন্তরিকতা দিয়েই। আবেগ দিয়ে। আমি জানি না অন্য শিল্পীরা কীভাবে ভাবেন, তবে আমার মনে হয়, আমি দর্শকদের আবেগগুলোকে বুঝতে পারি। তাঁদের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা কোনও ব্যবসা নয়। এই সম্পর্কটা ভালবাসার।