Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Indrani Halder: শ্রীময়ীকে দেখে হিংসে হয়, ওঁর মতো আমারও যদি এক রোহিত সেন থাকত: ইন্দ্রাণী হালদার

তিন বছরে 'শ্রীময়ী' ইন্দ্রাণী হালদারকে দিয়েছে অনেক কিছু। পেয়েছেন ভালবাসা, সম্মান, না পাওয়ার তালিকা কি একেবারেই শূন্য? লাস্ট শট দিতে যাওয়ার ঠিক আগেই টিভিনাইন বাংলার কাছে মনের ঝাঁপি খুললেন অভিনেত্রী। বাইপাসে তখন গাড়ি ছুটেছে। চলন্ত গাড়িতে ফোনালাপে শ্রীময়ী-ইন্দ্রাণী মিলে মিশে এক হয়ে গেল অজান্তেই...

Indrani Halder: শ্রীময়ীকে দেখে হিংসে হয়, ওঁর মতো আমারও যদি এক রোহিত সেন থাকত: ইন্দ্রাণী হালদার
ইন্দ্রাণী হালদার
Follow Us:
| Updated on: Dec 18, 2021 | 2:39 PM

সকাল থেকে কলটাইমের তাড়া নেই আজ। গত তিন বছরের অভ্যেসে যেন খানিক বদল। একটা লম্বা জার্নি শেষ হল অবশেষে। এই তিন বছরে ‘শ্রীময়ী’ ইন্দ্রাণী হালদারকে দিয়েছে অনেক কিছু। পেয়েছেন ভালবাসা, সম্মান, না পাওয়ার তালিকা কি একেবারেই শূন্য? লাস্ট শট দিতে যাওয়ার ঠিক আগেই টিভিনাইন বাংলার কাছে মনের ঝাঁপি খুললেন অভিনেত্রী। বাইপাসে তখন গাড়ি ছুটেছে। চলন্ত গাড়িতে ফোনালাপে শ্রীময়ী-ইন্দ্রাণী মিলে মিশে এক হয়ে গেল অজান্তেই…

অন্যের কথা ভাবব আর নিজে ঘটিহারা হব এমনটা নই আমি
২০১৯-এর ১০ জুন শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকটি। সন্তানের মতো চরিত্রটি লালন করেছিলেন ইন্দ্রাণী। এত লম্বা জার্নির পর রিল-রিয়েল কি মিশে গিয়েছিল অজান্তেই? প্রথম দিকের শ্রীময়ীর সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পান না তিনি। সংসারের জন্য সব কিছু উজাড় করে দিয়ে সর্বহারার দলে নাম লেখানো শ্রীময়ী আর যাই হোক ব্যক্তি ইন্দ্রাণী নন। বলছিলেন, “প্রথম পর্যায়ের শ্রীময়ী মাটির মানুষ, ধরে রাখা নয়, ত্যাগকেই মন্ত্র বলে মেনে নিয়েছিল সে। আমি মানুষটা আবার একেবারেই সেরকম নই। শুধু অন্যের কথা ভাবব আর নিজে ঘটিহারা হব এমনটা নই বাবা”।

নিজেকে কষ্ট দিয়ে অ্যাডজাস্টমেন্টে বিশ্বাস করি না
শ্রীময়ীর চরিত্রের মূল ফাণ্ডা ছিল মানিয়ে নেওয়া, অন্তত প্রথম দিকে তো বটেই। অথচ ইন্দ্রাণী হালদার কষ্ট পেয়ে মানিয়ে নেওয়ার ঘোরতর বিরোধী। জায়গা ছেড়ে দেওয়া বা মুখ বুজে অত্যাচার মেনে নিতে চাননি কোনওদিন। যারা তাঁকে ভালবাসেন তাঁদের কী বলবেন? সংসারে তৃতীয় ব্যক্তির আগমন, ঘোরতর অপমান সহ্য করে মেনে চলা নাকি সপাটে জবাব? কড়া ভাষায় ইন্দ্রাণীর উত্তর, “একটাই জীবন, একজন মানুষের সেই জীবনে সুখী হওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। আমি নিজেকে কষ্ট দিয়ে অ্যাডজাস্টমেন্টে বিশ্বাস করি না।” আর সেই কারণেই বোধহয় শ্রীময়ীর দ্বিতীয় পর্ব অনেক বেশি ইন্দ্রাণী-আখ্যান। হাল্কা হেসে যোগ করলেন, “যে মুহূর্তে শ্রীময়ী বাইরে বের হল, নিজের চোখে জগৎ দেখা শুরু করল, সেই মুহূর্ত থেকেই শ্রীময়ীকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করল ইন্দ্রাণী”।

 

 

সন্তান নিইনি, সেটাও আমাদের ব্যক্তিগত চয়েজ
সম্পর্কে ঝগড়া স্বাভাবিক। অভিনেত্রীরও দীর্ঘ ২৪ বছরের দাম্পত্যে ঝগড়া হয়েছে বহুবার। কিন্তু সম্মানহানি? তা হয়নি। আর সেটাই বোধহয় ২৪ বছরের দাম্পত্যের ইউএসপি। বললেন, “ভাস্করের সঙ্গে বহুবার ঝগড়া হয়েছে। ছোট বয়সে ভাবতাম ডিভোর্স করে দেব, তার পর ভাবতাম ডিভোর্স করে করবটা কী? আর একটা বিয়ে? সেও যে ঝগড়া করবে না তার কি নিশ্চয়তা রয়েছে? সেই অ্যাডজাস্টমেন্টটা কিন্তু ফ্রেন্ডলি অ্যাডজাস্টমেন্ট। আবার সব ঠিক হয়ে যেত। আমরা খুব ভাল বন্ধু যে।” সন্তান নেননি সেটাও নিজেদের ইচ্ছেতে। নিজেদের সিদ্ধান্তে। কেন? উত্তর, “একটু বেশি বয়সে বিয়ে হয়েছিল। সময় ক্যালকুলেট করে ঠিক করলাম সন্তান নেব না। সেটাও কিন্ত আমাদের চয়েজ। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।” এরপরেই দরাজ হেসে মজার ছলে অভিনেত্রীর কৌতুক, “শ্রীময়ীকে দেখে হিংসে হয়, ওঁর মতো আমারও যদি এক রোহিত সেন থাকত”। এটাই বোধহয় ওঁদের দাম্পত্যের ইউএসপি, সহজ সরল ইকুয়েশন।

শ্রীময়ীর বিয়েতে জোর দিয়েছিলাম আমিই
বাংলা ধারাবাহিকে নায়কের তিনটে বউ, চারটে সম্পর্ক — এ জলভাত। কিন্তু মধ্যবয়স্কা নায়িকার দুটো বিয়ে। রোহিত সেনের গলায় শ্রীময়ী মালা দিতেই রে-রে করে উঠেছিল নেটিজেনদের একটা বড় অংশ। ধারাবাহিকের শেষে সে সব কথা যেন বড় বেশি মনে পড়ছে ইন্দ্রাণীর। মনে পড়ছে শ্রীময়ীর আবার বিয়ে দেওয়া নিয়ে ইন্দ্রাণীর গুরুদায়িত্বের কথা। বলছিলেন, “শ্রীময়ীর বিয়ের জন্য আমি খুব জোর দিয়েছিলাম। লীনাদি সাপোর্ট করেছিলেন, কিন্তু জোর দিয়েছিলাম আমিই।” সে এক দক্ষযজ্ঞ। বলছিলেন, “শ্রীময়ী বিয়ে করে ঠিক করছে না ভুল করছে এই নিয়ে যখন তোলপাড় তখন আমার বন্ধুদের জনে জনে বলেছি, তোদের ভিউজ রেকর্ড করে পাঠা। ওঁরা পাঠিয়েছে। স্টেজ শো করতে গেছি প্রত্যন্ত এলাকায় সেখানে মানুষকে জিজ্ঞাসা করেছি। বিয়েবাড়িতে গিয়েছি সেখানেও জিজ্ঞাসা করেছি শ্রীময়ী বিয়ে করে ঠিক করছে কিনা। কেউ হ্যাঁ বলেছে, আবার কেউ বা বলেছে কী দরকার ছিল?” সেই সব রেকর্ড করে আপলোডও করেছিলেন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে। হাসতে হাসতে বললেন, “আসলে আমি অর্ধেক গোয়েন্দা তো, তাই প্রমাণ ছাড়া কিছু করি না”।

‘কমেন্ট এসেছিল তিন বাচ্চার মা, বুড়ি বিয়ে করতে এসেছে, লজ্জা করে না’
এত কিছু করার পরেও খারাপ কথা কিন্তু পিছু ছাড়েনি তাঁর। শুনতে হয়েছিল, ‘তিন বাচ্চার মা, বুড়ি বিয়ে করতে এসেছে, লজ্জা করে না’। তবু বাংলা ধারাবাহিকের ইতিহাসে কোথাও গিয়ে যেন মাইলস্টোন তৈরি করে দিয়েছিল ওই বিয়ের মুহূর্ত। বলছিলেন, “যখন রেকি হচ্ছে বাড়ি এসে মা’কে জিজ্ঞাসা করলাম শ্রীময়ীর যদি বিয়ে দেওয়া যায় কেমন হবে? উত্তর এসেছিল, ‘দারুণ হবে’। ব্যস হয়ে যায় বিয়ে।” সম্পর্কে অখুশি মানেই কি বিয়ে বাধ্যতামূলক? ইন্দ্রাণী জানাচ্ছেন, ‘না’। বললেন, “বিয়ে করতেই হবে এমনটা তো লেখা নেই। যদি কোনও মহিলা মনে করেন তাঁর স্বামী দিনের পর দিন তাঁকে কষ্ট দিয়ে যাচ্ছে তবে সেই মানুষটিকে ছেড়ে দিন। নয় একা থাকুন। নয় তো যে মানুষটার সঙ্গে থাকলে আপনি ভাল থাকবেন তাঁর সঙ্গে থাকুন।”

শ্রীময়ী কি এবার গোয়েন্দা গিন্নি?
এক চরিত্র শেষ হয়। অন্য চরিত্র আসে। বড় পর্দায় তিনি ফিরছেন এ খবর টলিউডে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। আর ধারাবাহিক? ‘গোয়েন্দা গিন্নি’র সিকুয়ালে তাঁকে বহুদিন ধরেই দেখতে চাইছে দর্শক। তিনি কি ফিরছেন? একটু  চুপ করলেন ইন্দ্রাণী। তারপর বললেন, “এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের তরফে আমার সঙ্গে গোয়েন্দা গিন্নি নিয়ে কোনওরকম যোগাযোগ করেননি। তাঁদের তরফে কোনও ফোন কিচ্ছু আসেনি। জানি না হয়তো পরে বলবে। দেখা যাক…”।

গাড়ি ছুটল বাইপাস ধরে…শেষ হল শ্রীময়ী আখ্যান। থেকে গেল ভালবাসা, মেকআপ রুমের আড্ডা, দর্শকের মজার মিম, টিআরপি’র টেনশন আর অনেক না ভোলা টাটকা স্মৃতি।

 

আরও পড়ুন- Miss World 2021: ভারতের মনসাসহ ১৬ জন কোভিড আক্রান্ত, স্থগিত মিস ওয়ার্ল্ডের ফিনালে

আরও পড়ুন- Jacqueline Fernandez: সুকেশ-কাণ্ডে ফেঁসে একের পর এক কাজ হাতছাড়া হচ্ছে জ্যাকলিনের?