বৃহস্পতিবার অনেক রাতের চিত্র। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও চাকরি জোটেনি যোগ্য টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের। করুণাময়ীয়ে তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বসেছিলেন। প্রায় গভীর রাতে পুলিশ গিয়ে তাঁদের চ্যাংদোলা করে হটিয়েছে। অসহায় চাকরি না পাওয়া প্রার্থীদের হাহুতাশ ও চোখের জলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে বুদ্ধিজীবী সমাজের একাংশ। সেই ঘটনাকে তীব্র ভাষায় ধিক্কার জানিয়েছেন অভিনেত্রী মানসী সিনহা।
TV9 বাংলাকে কী বললেন মানসী?
“গতকাল টেট আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের যে অত্যাচার চলেছে, সেটা নিয়ে জাস্ট কিছু বলার নেই আমার। নোংরা ভাষা, ঘেন্না, লজ্জা সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে এই ঘটনা। আমাদের রাজ্য যে কত নীচে নামছে, কত কদর্য, অকথ্য এবং ভুল কাজ যে এখানে হতে পারে, এটা তার আর একটা বিরাট বড় প্রমাণ। আর কত প্রমাণ এভাবে পেতে হবে জানি না। এটার প্রতিবাদে যতদূর যেতে হয় আমি যাব। সত্যি কথা বলছি। যতদূর যেতে হয় যাব। কথা বলতে-বলতে আমার ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এত বর্বরতা, এত নগ্ন বর্বরতা বহুদিন পর দেখছে রাজ্যবাসী এবং সব হিসেব রাখছে। সব হিসেব ফেরত যাবে গো… কিচ্ছু ছাড় পাবে না কেউ। পরিষ্কার কথা বললাম।
শুনুন, এই সরকার যদি আবার ফেরে, এতকিছু জানতে পারা সত্ত্বেও, এই সরকার যদি আবার ফেরে… তা হলে আমি বলব সেটা আমাদের রাজ্যবাসী হিসেবে লজ্জা। বুঝে নেব আমরা দু’কান কাটা, আমরা বেহায়া, আমরা ভীতু, আমরা শেষ… আমরা কেন্নো। কেন্নোর মতো হয়ে যাব যদি এই সরকার আবার ফেরে। প্রমাণ হয়ে যাবে যে, আমাদের শিরদাঁড়া বলে কিছু নেই।
আসলে কিছুই বলার নেই। আমার টাকা মেরে আর একজন তার বাড়ি রং করবে। আমার টাকা মেরে আর একজন বিদেশি চশমা পরবে। আমার টাকা মেরে আর একজন নাক-চোখ আর নানাপ্রকার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরীক্ষা করাতে যাবে… আমার টাকা মেরে অন্য একজন মিথ্যা বলে অন্য দলকে আক্রমণ করবে… তবু আমি তাক বরণ করে নেব… কারণ আমি ভীতু।
… প্রমাণিত হবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভীতু। প্রমাণিত হবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের শিরদাঁড়া নেই। রাজ্যবাসী যদি চায় এটা প্রমাণিত হোক, তখনই এই সরকার ফিরবে…
এই কথাগুলো বলতে আমি ভয় পাই না। আজ যদি এই সত্যি কথাগুলো বলি, হয়তো আমাকে জেলে নিয়ে যাবে, হয়তো আমাকে খুব মারবে… তবু আমার ছেলেমেয়ে দুটো আয়নার সামনে মাথা উঁচু করে বলতে পারবে যে, আমার মায়ের শিরদাঁড়াটা শক্ত ছিল। সে প্রতিবাদ করতে পেরেছিল।”