পেজ থ্রির ব্রেকিং নিউজ যে ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে কামব্যাক করেছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, সেই ধারাবাহিক অর্থাৎ ‘মেয়েবেলা’কেই বিদায় জানিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, চিত্রনাট্যে যেভাবে বধূ নির্যাতনকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছিল তা তিনি নিতে পারেননি। তবে এবার রূপার বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন ‘মেয়েবেলা’ ধারাবাহিকের এক সদস্য শুভময় বিশ্বাস। কাউকে কিছু না বলে কোনও এক মঙ্গলবার যখন আচমকাই সেট ছেড়ে বেরিয়ে যান রূপা, জানিয়ে দেন আর কাজ করবেন না, কী অবস্থা হয়েছিল টিমের, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ঠিক কী করতে হয়েছিল সকলকে, তা সামনে এনে বিস্ফোরক তিনি। সামাজিক মাধ্যমে রূপার বিরুদ্ধে হাজারও অভিযোগ এনে তিনি লেখেন, “দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ আম জনতার কাছে ভয়ানক শকিং একটি অধ্যায়। আজ থেকে নয়, যুগ যুগ ধরে। কিন্তু সেই দ্রৌপদী যদি নিজেই অনেক মানুষের, শুধু বস্ত্র নয়। মান, সম্মান, পরিচয়, ডিগনিটি, এসব নিয়ে টানাটানি শুরু করেন, তাহলে সেটা কি ভাল দেখায়?” তিনি যোগ করেন, “যিনি মেয়েবেলায় এত দিন অবধি বীথিকা মিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছেন, তাঁকে মেয়েবেলার প্রতিটা সদস্য ভয়ানক সম্মান করে। প্রাণ ঢেলে ভালোবাসে। কিন্তু উনি কী করলেন? এক মঙ্গলবার দুপুরে আচমকা শুটিং এঁর মাঝপথে বললেন ওনার ভালো লাগছে না শুটিং করতে। এটুকু বলে উনি বাড়ি চলে গেলেন। গোটা মেয়েবেলা ইউনিট। তার প্রতিটা সদস্য , কী ভয়ানক বিপদের মুখে পড়লো উনি একবারও ভাবলেন না। সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে আমরা কী জবাব দেবো সে কথা মনেও আনলেন না। যদিও চ্যানেল সব সময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছে। কিন্তু তাদের তো রোজ এপিসোড টেলিকাস্ট করতে হবে। তারাও তো মারাত্বক এক বিপদের মুখে গিয়ে দাঁড়ালো।”
শুভময়ের অভিযোগ কারও কোনও অনুরোধ সেদিন শোনেননি রূপা। প্রযোজক থেকে পরিচালক টিমের প্রায় সকলেই অভিনেত্রীর বাড়িতে গিয়ে ‘ম্যারাথন মিটিং’ করলেও তিনি নাকি জানান, তিনি জানাবেন কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। শুভময় লিখছেন, “আমরা দোলাচলে। উনি জানাবেন বললেন। ওনাকে পরের বেশ কিছু এপিসোড লিখে লিখে পাঠানো হলো, পরের গল্প পাঠানো হলো… এবং এক রাতের মধ্যে পাঠানো হলো, প্রায় যুধ্বকালীন তৎপরতায়। আমিও সেই যুধ্বের একজন সৈনিক। তাই আমি জানি কী ভয়ানক দিন দেখতে হয়েছে আমাদের গোটা ইউনিটকে। এটা আমাদের মত সাধারণ মানুষের কাছে যুদ্ধই, বেঁচে থাকার যুদ্ধ। উনি সবটা পড়ে, সময় নিলেন……আমরা তখন বীথিকা মিত্রকে ছাড়া কীভাবে মেয়েবেলার এপিসোড তৈরি করা যায়, সেই লড়াই করছি। টেলিকাস্ট বন্ধ হয়ে যাবে নাহলে।”
এর পরেই বোমাটা ফাটিয়েছেন শুভময়। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “সমাজ মাধ্যমে যে কথা রটছে, তার পিছনের সত্যিটা অন্তত জানা উচিত সামাজিক মানুষদের। অর্ধ সত্য, মিথ্যার চেয়েও ভয়ঙ্কর। বীথিকা মিত্রের চরিত্রে অভিনয়কারী মানুষটির শুরুর থেকেই তুঘলকি আচরণ ছিল। আজ না, ভালো লাগছে না, আজ না অনেক সিন……… দিদি গো, ৭০/৮০ জন মানুষ, এবং তাদের পরিবার দু বেলা খেতে পায়, এই তোমার মেয়েবেলার জন্য। মুড সুইং এঁর জন্য ইউনিট এর কোন সদস্যের ৩ বছরের বাচ্চার দুধ বন্ধ হয়ে যায় দিদি। আপনি একটা গোটা ইউনিটকে বিপদে ফেলতে পারেন না। আপনি একদিন হঠাত বলতে পারেন না, আমি আর শুট করবো না মেয়েবেলা। এটা একটা কাজ দিদি। এত গুলো মানুষের পেট চলে এটা দিয়ে। আপনি আপনার মর্জি মত চলে গেলেন… ইউনিট এর কী হাল হলো খোঁজ নিয়েছিলেন? গোটা মেয়েবেলা ইউনিট নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছিলো… আমরা কেউ সরকারী চাকরী করি না।এভাবে দুম করে শুট অফ করে চলে যাওয়া যায়?” এই মুহূর্তে রূপার চরিত্রে দেখা যাচ্ছে অনুশ্রী দাসকে। দর্শক তাঁকে কতটা গ্রহণ করলেন, তা জানা যাবে আগামীকাল। ওই দিনই যে টিআরপির তালিকা প্রকাশ্যে আসার কথা।