জন্মদিন। বছরের অন্য দিনগুলোর তুলনায় কিছুটা আলাদা তো বটেই। ব্যতিক্রম নন অভিনেতা সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Saugata Bandyopadhyay)। আজ তিনি বার্থডে বয়। বছর ৩৫-এর অভিনেতার এ বছরের জন্মদিনটা একেবারে আলাদা ভাবে কাটছে। গত ১৫ দিন ধরে প্রায় ১৮০ জন মানুষের প্রতিদিন খাবার ব্যবস্থা করছেন তিনি। সঙ্গী স্ত্রী নয়না পালিত বন্দ্যোপাধ্যায়। জন্মদিনেও সেই কাজেই ব্যস্ত সৌগত।
শুধু নিজের জন্মদিন নয়। ৩১মে সৌগতর জীবনে আরও একটা কারণে স্পেশ্যাল। তাঁর কথায়, “আজ আমার মায়েরও জন্মদিন। এই প্রথমবার আমি আর মা আলাদা। চন্দননগরে মা আছেন। আমি এখানে থেকে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছি। যদি কোনও সমস্যা হয়, সেই ভয়ে মা, বাবাকে কলকাতায় নিয়ে আসতে চাইনি। মা বলল, এ বার দেখা হচ্ছে না। সেলিব্রেশন তো আমরা যে কোনও দিনই করতে পারি। কিন্তু এখন যে কাজটা করছি, সেটা এসেনশিয়াল।”
সৌগত জানালেন, গত ১৫ দিন ধরে সকালে ৬০ থেকে ৭০জন, রাতে ১১০ থেকে ১২০ জন মানুষের খাবারের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী নয়না। জন্মদিনের সকালেও কিছু মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। সঙ্গী ছিলেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। রান্না করা খাবার নিয়ে গাড়ি করে বেরিয়ে পড়েন বলে জানালেন অভিনেতা। টালিগঞ্জ ফাঁড়ি ৮১ নম্বর ওয়ার্ড, সাদার্ন এভিনিউতে কয়েকজন করোনা আক্রান্তের বাড়ি, নিউ আলিপুর, মাঝেরহাট ব্রিজ, তারাতলার মতো জায়গায় ঘুরে ঘুরে খাবার পৌঁছে দেন।
এই বছরের জন্মদিনটা সত্যিই অন্যরকম। দু’সপ্তাহের বেশি এই কাজটা করে কেমন লাগছে তাঁর? সৌগত বললেন, “আজ ১৬তম দিন। ভাল লাগছে বলেই বোধহয় লড়ে যাচ্ছি। মানসিক ভাবে ক্লান্ত লাগছে। অজস্র মানুষ সাহায্য করেছেন। প্রচুর সাপোর্ট পেয়েছি ইন্ডাস্ট্রির মানুষের থেকেই। যাদের এখন অনেকেরই রোজগার নেই। যাঁরা ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে চেনেন, তেমন অনেকে সাহায্য করেছেন। একা করলে সাত, আটদিনের বেশি হয়তো সম্ভব হত না। ফান্ডিং আসছে বলেই এখনও কাজটা করতে পারছি।”
‘পান্ডব গোয়েন্দা’, ‘আলো ছায়া’র মতো ধারাবাহিকে সৌগতর অভিনয় দেখেছেন দর্শক। ‘কী করে বলব তোমায়’-এ চমক নিয়ে আসছেন বলে জানালেন। শুটিং ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আপাতত লকডাউনে শুটিং বন্ধ। সব কিছু স্বাভাবিক হলে ফের কাজে ফিরবেন তিনি এবং নয়না। তাঁর কথায়, “আমাদের শুটিংয়ে ফিরতে হবে, সেটাও মাথায় রাখছি। নিজেরা যাতে সুস্থ থেকে শুটিং শুরু করতে পারি, সেটাও ভাবছি। কারণ আমাদেরও তো সংসার আছে, বাবা, মা আছেন। এটুকু বিশ্বাস আছে, এখন যা খরচ হচ্ছে, কাজ করে, পরিশ্রম করে সেই টাকা আবার আমরা রোজগার করতে পারব।”