ছোট পর্দায় কাজ করছেন বহুদিন। বড় প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছেন একাধিক ধারাবাহিককে। মূলত নেগেটিভ চরিত্রেই দর্শক দেখেছেন তাঁকে। কিন্তু নিশান্তিকা দাসের এই সিরিয়াল জার্নি খুব একটা সুখের ছিল না। পদে-পদে এসেছে বাধা। অনেক চোখের জল ফেলতে হয়েছে তাঁকে। তারপরই দর্শকের মনের ভিতর ঢুকতে পেরেছেন অভিনেত্রী।
চিরকালই কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে নিশান্তিকাকে। বাবা- মায়ের একমাত্র মেয়ে তিনি। যমজ দাদা রয়েছে। দাদাকে ভালবাসেন ঠিকই। তবে ছোট থেকে দাদার সঙ্গে চলেছে তুলনা। তারপর বড় হওয়ার পর ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকে তাঁকে চেহারার কারণে কটূ কথা শোনাতে শুরু করেন। নিশান্তিকা জানেন তিনি প্রেজ়েন্টেবল। এবং তিনি সুন্দরী। যদিও অনেকের কাছে শুনেছেন তিনি তা নন। একবার এক ফটোগ্রাফার দাদা একটি সিরিয়ালের তাঁর ছবি তোলার সময় বলেছিলেন, “তুমি তো সুন্দরী নও, তাই অভিনয়টা ভাল করে করো”। তার উপর একটি সিরিয়ালের এক নায়িকা বলেছিলেন, “এত খারাপ দেখতে একটি মেয়েকে নেগেটিভ চরিত্র তোমরা নিলে কী করে”। এ সবের কারণে আত্মবিশ্বাস হারাতে শুরু করেছিলেন নিশান্তিকা।
একটা সময় নিজের জীবন শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। ঘর বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। টুলের উপর উঠে ফ্যানে ফাঁস ঝুলিয়ে এক ধাক্কায় টুল ফেলে দিতে পারেননি। কারণ, সেই সাহস তাঁর মধ্যে ছিল না। তারপর তিনি অনুভব করেছিলেন, জীবন অনেক বড় এবং একটাই। তিনি ভালোবাসতে চেয়েছিলেন। তিনিও ভালোবেসেও ছিলেন। কিন্তু যাঁকে তিনি মন দিয়েছিলেন, সেই ব্যক্তি বারবার তাঁকে আঘাত করেছেন। কেড়ে নিয়েছিলেন বিশ্বাস। নিশান্তিকা বলেছিলেন, তাঁর প্রেমিকের প্রাক্তন তাঁকে ফোন করে বিশ্বাসঘাতকতার নানা গাঁথা শোনাতেন। একদিন সিনের আগেও বলেছিলেন। সেদিন মেকআপ রুমে বসে অঝোরে কেঁদেছিলেন নিশান্তিকা।
সেই দিন তাঁর সহ-অভিনেত্রী এবং বন্ধু প্রিয়াঙ্কা সিং সাহস জুগিয়েছিলেন নিশান্তিকাকে। বলেছিলেন, “আজই তোর সবচেয়ে ভালো সিন হবে”। হয়েওছিল তাই। অনেক বড় সংলাপ ছিল নিশান্তিকার। শেষ হওয়ার পর গোটা ঘর হাততালি দিয়েছিল সেটে। ৩-৪ সেকেন্ডের আনন্দ পেয়েছিলেন নিশান্তিকা। এবং সেই আনন্দই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। জীবনের সাধ পাইয়েছে।