Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

পাত্তা দেননি মোটে! কৌশিককে ৫ বছর অপেক্ষা করান স্ত্রী চূর্ণী, পরিচালক বলেন, ‘ওর অন্যত্র বিয়ে হলে, আমি পাশের বাড়িতে…’

Kaushik-Churni Love Story: প্রেম প্রস্তাব দেওয়ার পর চূর্ণী নাকি কৌশিককে পাত্তাই দেননি! জীবনের সেই অধ্যায়ের কথা ব্যক্ত করেছেন দুই প্রতিভাবান শিল্পী। চূর্ণীকেই জীবনের ধ্রুবতারা করে এগিয়ে গিয়েছেন কৌশিক। সেই ধ্রুবতারা কীভাবে ধরা দিলেন তাঁর নাছোড়বান্দা প্রেমিকের কাছে, জানতে চান?

পাত্তা দেননি মোটে! কৌশিককে ৫ বছর অপেক্ষা করান স্ত্রী চূর্ণী, পরিচালক বলেন, 'ওর অন্যত্র বিয়ে হলে, আমি পাশের বাড়িতে...'
চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় এবং কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Updated on: Jun 24, 2024 | 11:13 AM

বাংলা বিনোদন জগতের অন্যতম সফল তারকা জুটির নাম কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়। দুই অভিনেতা পরিচালক একই সঙ্গে লেখাপড়া করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা বিভাগের ছাত্র। চূর্ণী পড়েছিলেন ইংরেজি সাহিত্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের মেইন বিল্ডিংয়েই দেখা-সাক্ষাৎ, ক্লাস হত তাঁদের। সেই কলেজের প্রেম চিরকালীন হয়ে থাকল তাঁদের জীবনে। কীভাবে কাছাকাছি এসেছিলেন চূর্ণী-কৌশিক? প্রেম প্রস্তাব দেওয়ার পর চূর্ণী নাকি কৌশিককে পাত্তাই দেননি! জীবনের সেই অধ্যায়ের কথা ব্যক্ত করেছেন দুই প্রতিভাবান শিল্পী। চূর্ণীকেই জীবনের ধ্রুবতারা করে এগিয়ে গিয়েছেন কৌশিক। সেই ধ্রুবতারা কীভাবে ধরা দিলেন তাঁর নাছোড়বান্দা প্রেমিকের কাছে, জানতে চান?

৯০-এর গোড়ার দিকে ইটিভিতে সম্প্রচারিত হত ‘শুধু তোমারই জন্য’ সিরিজ়। প্রতি রবিবার বিকেল পাঁচটায় একঘণ্টার এক প্রেমের কাহিনি দেখানো হত। প্রত্যেক গল্পই ছিল মিষ্টি প্রেমের। যে প্রেম মনে হিল্লোল তুলেছিল বয়ঃসন্ধি ছুঁইছুঁই ছেলেমেয়েদের। কৌশিক-চূর্ণীর বাস্তব জীবনের প্রেমটা অনেকটা সেরকমই। ইউটিউব চ্যানেল টলিউড ফোকাস কলকাতাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৌশিক বলেছিলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করার সময় চূর্ণীকে দেখে মন গলে গিয়েছিল কৌশিকের। মনে-মনে তাঁকে আস্ত হৃদয়টা দিয়ে ফেলেছিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই পরিচালক। ভালবাসায় কোনও খাদ ছিল না তাঁর। তাই অল্পদিনের আলাপেই ইউনিভার্সিটির ডাকসাইটে সুন্দরী চূর্ণীকে অকপট বলতে পেরেছিলেন, “দেখিস তোকেই আমি একদিন বিয়ে করব।” এমন এক কথা শুনে প্রায় ছিটকে যাওয়ার মতো অবস্থা চূর্ণীর। ওই বয়সের মেয়েদের যা হয় আর কী! কেরিয়ার নিয়েই চিন্তাভাবনা থাকে বেশি। অধিকাংশ সময়ই তাঁরা এমন নাছোড় প্রেমিককে তোয়াক্কা করেন না। তোয়াক্কা করেননি চূর্ণীও। কিন্তু সেই নাছোড়বান্দা কৌশিক যে আদতে চূর্ণীকে জীবনের ধ্রুবতারা করে তুলেছেন, চূর্ণী আঁচ পাননি। ফলে প্রেমপ্রস্তাব পাওয়ার পরও চট করে ধরা দেননি। প্রেমিকার পিছু-পিছু টানা ৫ বছর ঘুরেছিলেন কৌশিক। এই সোশাল মিডিয়া, হোয়াটসঅ্যাপের যুগে প্রেম যেখানে ক্ষণে-ক্ষণে পাল্টায়, কোনও মেয়ের জন্য কেউ পাঁচ বছর অপেক্ষা করবে? কিন্তু সেই সময়টা অন্য ছিল। প্রেমিক হৃদয় পরিপূর্ণ ছিল অপেক্ষায়। প্রহর গুনেছিলেন কৌশিক।

সেই সময় চূর্ণীর জীবনের পাখির চোখ, তাঁকে একটা বড় চাকরি পেতেই হবে। দৃঢ় সংকল্প করেছিলেন, জীবনে বিয়েই করবেন না। বরং চাকরির উপার্জিত অর্থে গোটা পৃথিবী ঘুরে বেড়াবেন। এদিকে চূর্ণীর পরিবারের ছিল বিপরীত মেরুর। মেয়ের না বিয়ে করা, সংসারী না হওয়ার সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কাই করলেন না তাঁরা। মেয়েকে বোঝাতে শুরু করলেন তাঁর মা। চূর্ণীকে বলা হয়েছিল, সংসারী না হলে একসময় পর সঙ্গীহীনতা গ্রাস করবে তাঁকে। বিয়ের সম্বন্ধও আসা শুরু করে চূর্ণীর জন্য। ততদিনে কৌশিকের যাতায়াত শুরু হয় চূর্ণীর বাড়িতে। কৌশিক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “চূর্ণী যদি বিদেশে বিয়ে করে চলেও যেতেন পাশের বাড়িতে আমি প্রতিবেশী হয়ে থাকতাম। তিনি যদি ইগলুতে থাকতেন, পাশের ইগলুটা আমারই হত। সঙ্গী হিসেবে আমাকে এড়িয়ে চলতে পারবে চূর্ণী। কিন্তু প্রতিবেশী হিসেবে তো পারবে না। কী করব, এই সবই ভাবতাম।”

অগত্যা একদিন ধরা দিলেন চূর্ণী। তাও কৌশিককে ৫ বছর অপেক্ষা করানোর পর। কৌশিককে পাশে বসিয়ে, তাঁর হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় ভরে রসিকতা করে এক সাক্ষাৎকারে চূর্ণী বলেছিলেন, “আমাকে বিয়ে করে ওর আমার পিছনে ঘোরাঘুরিটা আটকাতে পেরেছি।”

এই দাম্পত্যের কয়েক দশক পেরিয়ে গিয়েছে। চূর্ণী-কৌশিকের একসঙ্গে পথাচলা প্রবাহমান। উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে তাঁদের ভালবাসা, নির্ভরতা। একে-অপরকে পরিপূর্ণ হয়েছেন তাঁরা। কৌশিক তাঁর ছবি তৈরির কাজে সবসময় পাশে পেয়েছেন চূর্ণীকে। চূর্ণীর অবদান সম্পর্কে নানা সময়ে নানা কথা স্বীকারও করেছেন গর্বের সঙ্গে। মুম্বইয়ের উজ্জ্বল কেরিয়ারকে জলাঞ্জলি দিয়ে কৌশিকের টানেই কলকাতায় চলে আসেছিলেন চূর্ণী। সংসার জীবনকেই করে তুলেছিলেন জীবনের ধ্রুবতারা। আর কৌশিকের? আজও তাঁর ধ্রুবতারা সেই কলেজের মেয়েটাই, যাঁকে তিনি অস্ফুটে বলতে পেরেছিলেন, “দেখিস তোকেই আমি একদিন বিয়ে করব।”