AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

বাবার ঘৃণা, দিদি ছলে লিখিয়ে নেয় সমস্ত সম্পত্তি; লরির দালালি করেন হারিয়ে যাওয়া অভিনেতা লোকেশ ঘোষ

Lokesh Ghosh: বাবা ইন্ডাস্ট্রির অনেক বড় প্রযোজক। ছেলেকে এক্কেবারেই সাহায্য করেননি তিনি। তাই চেনা-পরিচিতি থাকলেও, ইন্ডাস্ট্রির কোনও 'কাকু-জেঠু' কাজ দেননি লোকেশকে। এদিকে দিদি কৌশলে সমস্ত সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েছিলেন নিজের নামে। এ হেন লোকেশকে পেট চালানোর জন্য লরির দালালি করতে হয়েছিল। কঠিন ছিল সেই জার্নি। জানিয়েছেন নিজে মুখেই।

বাবার ঘৃণা, দিদি ছলে লিখিয়ে নেয় সমস্ত সম্পত্তি; লরির দালালি করেন হারিয়ে যাওয়া অভিনেতা লোকেশ ঘোষ
লোকেশ ঘোষ।
| Updated on: Mar 04, 2024 | 12:40 PM
Share

বাবা ছিলেন বিখ্যাত প্রযোজক। তাঁর প্রযোজনায় অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে উত্তমকুমার সকলেই। সেই প্রযোজকের পুত্রের নাম লোকেশ ঘোষ। যেই লোকেশকে চূড়ান্ত অবহেলায় থাকতে হয়েছে একটা সময়। ৯০ দশকের শেষের দিকে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয় করতে এসেছিলেন লোকেশ। তাঁকে প্রথম ব্রেক দিয়েছিলেন প্রযোজক অঞ্জন চৌধুরী। ছবির নাম ছিল ‘মুখ্যমন্ত্রী’। মুখ্যমন্ত্রী ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের। কিন্তু শুটিং শুরুর ঠিক আগে চিকেন পক্স হয়ে যাওয়ার কারণে, সেই ছবি থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। তাঁর অনুপস্থিতিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয়ের অফার যায় লোকেশের কাছে। তারপরই ঘুরে যায় লোকেশের ভাগ্যের চাকা। কিন্তু তাঁর আগে বেশ কয়েক বছর লরির দালালি করেছিলেন এই অভিনেতা।

বাবা প্রখ্যাত প্রযোজক। মা অভিনেত্রী। ক্লাস নাইনে পড়ার সময় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে বাবা-মায়ের। মনে দুঃখ চাপা রেখে লোকেশ বলেছেন, “আমার মা ছিলেন উত্তমকুমারের নায়িকা। বিয়ের পর সবটা বন্ধ করে দিয়েছিলেন বাবা। মায়ের ইচ্ছাকে গলা টিপে মেরে দেন।”

লোকেশ বড় হয়েছেন দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলস স্কুলে। কলকাতায় ফিরে সেন্ট জ়েভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছিলেন। অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা ছিল মনে। বাবাকে সটান বলে দিয়েছিলেন, তাঁর কোনও সাহায্যই নেবেন না। যা করবেন নিজের দমে। আত্মাভিমানী বাবা ছেলের এই ‘ঔদ্ধত্য’ মেনে নিতে পারেননি। লোকেশ বলেছেন, “আমার বাবা একটা সময় পরিচালক-প্রযোজকদের জনে-জনে বলেছিলেন, ‘আমার ছেলেকে কাজ দেবে না’। ফলে চেনা-পরিচিতি থাকলেও, ইন্ডাস্ট্রির কোনও ‘কাকু-জেঠু’ কাজ দেয়নি লোকেশকে। একমাত্র অঞ্জন চৌধুরী ছিলেন ব্যতিক্রম। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের চিকেন পক্স হওয়ার কারণে ‘মুখ্যমন্ত্রী’ ছবিতে অভিনয়ের সুবর্ণ সুযোগ করে দেন লোকেশকে। তারপর ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় অভিনেতার। সেই সময়ই অঞ্জন চৌধুরীর ‘নাচ নাগিনী নাচ’ ছবিতেও অভিনয় করার কথা ছিল লোকেশের।

একটা সময় পর ইন্ডাস্ট্রি থেকে ডাক আসা বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। একদিকে যেমন বাণিজ্যিক ছবি হারিয়ে যায়। অন্যদিকে তেমনই বন্ধ হতে থাকে একের পর এক সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল। নিজের প্রযোজনাতে নিজেই ছবি তৈরি করছেন লোকেশ। কিন্তু সেই সমস্ত ছবি তেমন সাড়া ফেলছে না বক্স অফিসে। কিন্তু তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কোটিপতি বাড়ির ছেলে। বাবার বিপুল ব্যবসা। অনেক টাকা। তাঁর কানাকড়িও নাকি পাননি লোকেশ, তেমনটাই দাবি করেছেন। এক সংবাদ মাধ্যমিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লোকেশ অনেক দুঃখেই বলেছেন, “আমার বাবার উপার্জিত এক পয়সাও আমি পাইনি। ছল-কৌশল করে আমার দিদি সবটা নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছে। আমাকে নিজের লড়াইটা নিজেকেই লড়তে হয়েছে কঠিনভাবে।”