কিশোর কুমারের পরপর বিয়ে ভাঙার কারণ অদ্ভুত! গায়কের স্বরূপটাই নাকি…

Kishore Kumar Secrets: প্রবাদপ্রতিম গায়ক কিশোর কুমার মনে করতেন মহিলাদের জায়গা রান্নাঘরে। ঘটনাচক্রে তিনি যে চারটি বিয়ে করেছিলেন, প্রত্যেক স্ত্রীই নিজ-নিজ কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। কিশোরকুমারের প্রথম স্ত্রী রুমা গুহঠাকুরতা সুগায়িকা এবং অসম্ভব ভাল অভিনেত্রী। 'সারাক্ষণ কেরিয়ার, কেরিয়া করবে না, ঘরে মন দাও'--ধারণা নিয়ে চলা কিশোর কুমার তাঁর এই স্বরূপটা দেখিয়ে ফেলেছিলেন...

কিশোর কুমারের পরপর বিয়ে ভাঙার কারণ অদ্ভুত! গায়কের স্বরূপটাই নাকি...
কিশোর কুমার।
Follow Us:
| Updated on: Apr 24, 2024 | 1:47 PM

‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে’–শোনা যায়, এটাই বিশ্বাস করতেন সুরের সম্রাট কিশোর কুমার। তাই নিজের প্রথম স্ত্রী প্রতিভাময়ী গায়িকা এবং অভিনেত্রী রুমা গুহঠাকুরতাকে কিছুতেই উঠতে দিতে চাননি তিনি। রুমা তাঁর পেশাদার জীবনে এগিয়ে যাবেন, একদম চাইতেন না কিশোর। তাঁকে পিছনে টেনে ধরতে চাইতেন। এই নিয়েই নাকি সংসারে যাবতীয় অশান্তি ছিল কিশোর-রুমার। সেই কারণেই নাকি বিয়েটা টেকেনি তাঁদের।

ভাবতে পারছেন! শোনা যায়, প্রবাদপ্রতিম গায়ক কিশোর কুমার মনে করতেন মহিলাদের জায়গা রান্নাঘরে। ঘটনাচক্রে তিনি যে চারটি বিয়ে করেছিলেন, প্রত্যেক স্ত্রীই নিজ-নিজ কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। কিশোরকুমারের প্রথম স্ত্রী রুমা গুহঠাকুরতা সুগায়িকা এবং অসম্ভব ভাল অভিনেত্রী। ‘সারাক্ষণ কেরিয়ার, কেরিয়া করবে না, ঘরে মন দাও’–ধারণা নিয়ে চলা কিশোর কুমার তাঁর এই স্বরূপটা দেখিয়ে ফেলেছিলেন রুমাকে। অচিরেই ভেঙে গিয়েছিল ৭ বছরের সংসার। তার ছিঁড়ে গিয়েছিল।

ভাব-ভালবাসা করে বিয়ে করেছিলেন কিশোর-রুমা। সেই ১৯৫১ সালের কথা। কিশোরের চেয়ে বেশি খ্যাতি ছিল রুমার। সঙ্গীত তো বটেই, অভিনয়েও নিজের ছাপ ফেলতে শুরু করেছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রোতা-দর্শকের মনে নিজের একটা পাকাপাকি জায়গা দখল করে নিয়েছিলেন এই বঙ্গতনয়া। বাংলা এবং মুম্বই–দুই জায়গার শিল্প জগতেই কদর তৈরি হয়েছিল অভিনেত্রী-গায়িকার। সেই সময় আবার গান জানা অভিনেত্রীদের বিশেষ খাতির ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে।

এই খবরটিও পড়ুন

আর স্ত্রীর এই জনপ্রিয়তা কিছুতেই সইতে পারতেন না কিশোর। মেল-ইগো ছোট হচ্ছিল তাঁর। একে স্ত্রী বেশি জনপ্রিয়, তার উপর ঘরকন্যার যাবতীয় কাজ ফেলে বউ বাড়ির বাইরে নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করতে ব্যস্ত–কিছুই সহ্য করতে পারতেন না কিশোর। যে মানুষটাকে ভালবেসে হাত ধরে বিবাহের মতো বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন রুমা, সেই মানুষটার এই মূর্তি দেখে মনে-মনে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি শিল্পী মানুষ। স্পর্শকাতর তাঁর মন। মানিয়ে নিতে খুব কষ্ট হত। অশান্তি যখন চরমে, কিশোরের সাজানো সংসার থেকে ছিটকে বেরিয়ে যান রুমা। পথ আলাদা করে দিয়েছিলেন। যে প্রেমকে ভেবেছিলেন স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে, ইট-কাঠ-পাথরের নিষ্ঠুরতা তাঁকে পীড়া দিত অহোরাত্র। সবটাই ছিল নরকের মতো!

ব্যাস, এইটুকুই ছিল কিশোর-রুমার পথচলা। শোনা যায়, তাঁদের সন্তান অমিতের প্রতি যদিও দায়িত্বপালন করেছিলেন বিখ্যাত পিতা-মাতা দু’জনেই। কিশোরের জীবনে আবারও প্রেম আসে। বিবাহ আসে। সেই সঙ্গে বিচ্ছেদও। মধুবালা, যোগিতা বালির সঙ্গে প্রেম এবং বিয়ে করেন। মধুবালার প্রয়াণ ঘটে অল্প বয়সেই। সুন্দরী অভিনেত্রীর হৃদয়ের একটা ছোট্ট ছিদ্র শূন্য করে দেয় কিশোরের জীবনটাকে। অভিনেত্রী যোগিতা বালির সঙ্গে বিয়ের পর বিচ্ছেদ হয় খুব তাড়াতাড়ি। পরবর্তীকালে যোগিতা বিয়ে করেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে। তাঁর এখনও পর্যন্ত সুখে সংসার করছেন। একাকী কিশোর ৫৬ বছর বয়সে এসে বিয়ে করেন ২১ বছরের ছোট ভারতীয় অভিনেত্রী লীনা চন্দ্রভারকরকে। ১৯৮০ সালে বিয়ে করেন তাঁরা। কিশোরের সেই বিয়েটা টিকেছিল। ১৯৮৭ সালে কিশোরের মৃত্যু হয়।

আর রুমা। বাকি জীবনটা তিনি কাটিয়েছিলেন গুহ ঠাকুরতা পরিচয়ে। কিশোরের সঙ্গে বিয়ে ভাঙার পর তিনিও বিয়ে করেছিলেন পরিচালক অরূপ গুহঠাকুরতাকে।