মা হয়েছেন নুসরত জাহান। এ খবর এতক্ষণে জেনে গিয়েছেন সকলেই। নুসরতের মা হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেতা-সাংসদের বিশেষ বন্ধু যশ দাশগুপ্ত ও প্রাক্তন ‘সহবাস সঙ্গী’ নিখিল জৈন। কিন্তু নুসরতের সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনেই যশ ও নিখিলের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে দেখা গেল এক অদ্ভুত মিল। সেই মিল চোখ এড়িয়ে গেল না নেটিজেনদেরও। নেহাতই কাকতালীয়? তা নিয়েও উঠল প্রশ্ন।
গতকালই গোল গলা টি-শার্টে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন যশ। ক্যাপশনে লিখেছিলেন, “শুধু নিজেকে বিশ্বাস কর।” অন্যদিকে একটু রাতের দিকেই বেশ অর্থবহ একটি ক্যাপশন লিখে নিজের এক রঙিন ছবি পোস্ট করেছিলেন নিখিল। লিখেছিলেন, “ধর্মের চাকা ঘোরান। যা কর্ম করেছেন তাঁর অংশীদার হোন। এই সব কিছুর পর আপনি দেখতে পারবেন কর্মই হল একমাত্র ধর্ম।” ভাবছেন তো মিলটি কই। দুজনের ক্যাপশনেই একটি ‘নাম’ এক। সেই নামটি হল সোমনাথ রায়। তিনি পেশায় সেলিব্রিটি ফোটোগ্রাফার। যশ ও নিখিল বৃহস্পতিবার যে দুই ছবি পোস্ট করেছেন তা একই ব্যক্তিরই তোলা। নিছকই কাকতালীয়? নেটিজেনদের ভুরু কুঁচকেছে।
নুসরতের সন্তান জন্ম নেওয়ার পরেই নিখিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল টিভিনাইন বাংলা। টিভিনাইন বাংলার মাধ্যমেই নুসরত ও সদ্যোজাতকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিখিল বলেছিলেন, “নতুন জীবনে প্রবেশ করল ও। মা হল নুসরত। সদ্যোজাতকে মন প্রাণ দিয়ে আশীর্বাদ করছি ওকে। খুব ভাল থাকুক।” দেখতে যাবেন মা ও তাঁর সন্তানকে? খানিক থেমে নিখিলের উত্তর, “না দেখতে যাব না। সত্যি কথা বলতে বাচ্চাটিকেও দেখতে চাই না। তার কারণ একটাই, বিগত কিছু মাস ধরে আমার আর নুসরতের মধ্যে দূরত্ব বাচ্চাটির মধ্যে কোনও প্রভাব ফেলুক তা আমি চাই না। তবে আমি যা চাই তা হল বাচ্চাটি খুব ভাল থাকুক। সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি হয়ে উঠুক। আপনাদের মাধ্যমেই ওদেরকে শুভেচ্ছা। ভগবান আমার শুভকামনা বাচ্চাটিকে পৌঁছে দেবে ঠিক।”
২০১৯ সালে তুরস্কে বিয়ে করেছিলেন নুসরত ও নিখিল। সেই বিয়ের সুন্দর নামকরণ করা হয়েছিল – ‘দ্য এন জে অ্যাফেয়ার’। যদিও মাস কয়েক আগে অবনতি ঘটে সম্পর্কের। এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয় নুসরতের তরফে। সেই বিবৃতিতে নুসরত দাবি করেন, আইনগতভাবে নিখিলের সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হননি তিনি। নিখিল তাঁর ‘লিভ-ইন পার্টনার’ ছিলেন। নুসরতের এই বক্তব্যকে ঘিরে তুলকালাম রাজনৈতিক ময়দান থেকে টলিউড। পাল্টা বিবৃতি দেন নিখিলও।
এরই মধ্যে নুসরতের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই নিখিল জানিয়েছিলেন বাচ্চার বাবা তিনি নন। মাঝে চলেছে ট্রোলিং, একের পর এক নানা মন্তব্য। প্রশ্ন উঠেছিল জন-প্রতিনিধি হিসেবে লোকসভার বায়োপ্রোফাইলে তাহলে ‘বিবাহিত’ এবং স্বামীর নামের জায়গায় নিখিল জৈনের উল্লেখ করলেন কেন? সংসদ ভবনে ‘আমি নুসরত জাহান রুহি জৈন’ বলে সাংসদ হিসাবে নুসরত জাহানের শপথবাক্য পাঠের যে মুহূর্তের ভিডিয়ো টুইটে শেয়ার করেছেন বিজেপির অমিত মালব্য, তাতে আরও জোরদার হয়েছিল এই প্রশ্ন: জন-প্রতিনিধি হিসেবে নুসরত তাঁর ম্যারিটাল স্টেটাস সম্পর্কে যে তথ্য পেশ করেছেন, তা আদৌ নীতিগত বলে বিবেচিত হতে পারে কি না।
তবে এই সব প্রশ্ন, বিতর্ককে বাদ দিয়েই গতকাল নুসরতের নতুন জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন নিখিল। মা ও সন্তান ভাল থাকুক– এই কথাই ছিল তাঁর মুখে।