‘পাপা কি পরী’ বলা যেতে পারে তাকে। ছটফটে। চুলের সামনেটা চাইনিজ় কাট। মিষ্টি মুখ। বাবাকে হারানোর চরম শোকের মধ্যে রয়েছে ছোট্ট মেয়েটা। বাবা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় মেয়েকে চোখে হারাতেন। সারাক্ষণ তার কথাই বলে যেতেন। এমনকী, মৃ্ত্যুর আগের মুহূর্তেও মেয়ের কথাই জিজ্ঞেস করেছেন বার বার। ২৪ মার্চ প্রয়াত হয়েছেন অভিষেক। কাজ করতে-করতেই। এই শোক ভোলার নয়। পরিবার তো বটেই। অভিষেকের অকাল প্রয়াণের শোক অনেকেই সামলে উঠতে পারছেন না।
রবিবার প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোডের বহুতলে অভিষেকের বাসভবনের কমিউনিটি হলে তখন রজনীগন্ধার সৌরভ। প্রবেশদ্বারে অভিষেকের কেরিয়ারের প্রথম দিকের একটি ছবি বসানো। অগুনতি সাদা ফুলের মালা পরানো। দো-তলায় কমিউনিটি হল। যে কমিউনিটি হলে ফি-বছর ঘটা করে মেয়ে সাইনার (ডাকনাম ডল) জন্মদিন পালন করতেন অভিষেক ও তাঁর স্ত্রী সংযুক্তা। সেই কমিউনিটি হলের চিত্রটাই রবিবার ছিল এক্কেবারে ভিন্ন। সেখানেই অভিনেতার শ্রদ্ধানুষ্ঠান পালিত হল।
ইন্ডাস্ট্রি থেকে আসা নিকট বন্ধু- তারকারা প্রায় সকলেই উপস্থিত। কারও চোখে জল। কেউ বলে যাচ্ছেন অভিষেকের কথাই, ‘আজ মিঠুদা (পড়ুন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়) এখানে থাকলে এসব দেখে এই বলত, ওই বলত…’ হাজির ছিলেন সমসাময়িক শতাব্দী রায়, লাবনী সরকার, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, তাপস পালের স্ত্রী নন্দিনী পাল ও কন্যা সোহিনী, ‘মোহর’ ধারাবাহিকের প্রতীক সেন, সোনামণি, রাজন্যা মিত্ররা। এসেছিলেন রাজ চক্রবর্তী, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, অঙ্কুশ হাজরা, ঐন্দ্রিলা সেনরাও। আর সারা কমিউনিটি হল খুঁজছিল সাইনাকে। সে কেমন আছে? বাবার চলে যাওয়ার শোক ওকে ভুলিয়ে রাখা হয়েছে। বন্ধুদেরও বলা হয়েছে, বাবাকে নিয়ে কোনও কথা নয়। নিজেদের বাবাকে নিয়েও কোনও আলোচনা করা হবে না সাইনার সামনে। তাই ও খানিক শক্ত।
জানা গেল, বাবার মতো সাইনাও অভিনয় করতে চায়। মেয়ে বড় অভিনেত্রী হবে, অভিষেকও তাই চাইতেন। সাইনা TV9 বাংলাকে বলেছে, “আমি অভিনয় করতে পারি। আমি অভিনেত্রী হতে চাই। কিন্তু আমার কাছে এখনও কোনও সুযোগ আসেনি।”
দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী আন্তর্জাতিক স্কুলে পড়ে সাইনা। বাবার মতো মেয়েও অভিনয় করতে চায়, এই প্রসঙ্গে অভিষেকের স্ত্রী সংযুক্তা বলেছেন, “ডলের অভিনয় করারই ইচ্ছে। অভিষেকও তা-ই চাইত। আমি মনে করি, ডল যা চায়, তা-ই যেন হয়। তবে ছোটবেলা থেকেই মেয়ের অভিনয়ের উপরই ন্যাক।”
ডলের প্রাণ তার বাবা চলে গেলেন অকালেই। মা এখন তার একমাত্র সম্বল। TV9 বাংলাকে সংযুক্তা আগেই বলেছেন, “আমাকে ডলই সামলে রাখছে… (পড়ুন: Exclusive-Abhishek Chatterjee Demise: ‘চলে যাওয়ার আগের মুহূর্তেও মেয়ের কথাই জিজ্ঞেস করছিল অভিষেক’, বলেছেন অভিষেকের স্ত্রী সংযুক্তা)” এভাবেই সামলে রাখুক ডল। ওর স্বপ্নপূরণ হোক।
আরও পড়ুন: Abhishek Chatterjee Demise: ‘হয়তো ওঁর মনের মধ্যে অনেক ক্ষোভ ছিল,’ কাঁদতে-কাঁদতে কেন বললেন ঋতুপর্ণা?