অনীক দত্ত
আমি এখন অক্সফোর্ডে। সকালবেলা উঠে সামাজিক মাধ্যমে দেখলাম এবং শুনলাম তরুণবাবুর মৃত্যু সংবাদ। কতিপয় লোক, যাঁরা এখনও ছিলেন, যাঁদের এখনও শ্রদ্ধা-ভক্তি করা যেত, যাঁরা অভিভাবকের মতো ছিলেন। এবং তরুণবাবু ‘লাস্ট অফ দ্য মোহিকানস’। চিত্র পরিচালকদের যে নামগুলো নিয়ে আমরা গর্ববোধ করতাম, তাঁদের মধ্যে শেষ লোকটি চলে গেলেন।
যে সময় কিলো দরে আনুগত্য বিক্রি হয়, সেই সময় একজন এরকম জেদী, একরোখা লোক কোনও আপোস করেননি। কিছুর বিনিময়ে বিকিয়ে যাননি। শিরদাঁড়া জমা রাখেননি। সেটা চলে যাওয়াতে মনে হচ্ছে, যাঁকে ফোন করে অনেক কিছু বলা যেত, তাঁকে চিরতরে হারালাম।
আমি যেদিন ইংল্যান্ডে চলে আসছিলাম, পিজি হাসপাতালে ওঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সেই সময় ওঁর সেন্স ছিল। কিন্তু কথা বলতে পারছিলেন না। আমি বেশিক্ষণ বিরক্তও করতে চাননি। আমি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে, উনি আমার ছবি ‘অপরাজিত’ সিনেমা হলে গিয়ে দেখেছিলেন। সেটা দেখে অত্যন্ত উৎসাহিত করার মতো কিছু কথাও আমাকে বলেছিলেন। আমি খুবই অভিভূত হয়েছিলাম সেদিন। কোনওটাই আমি আশা করিনি। এটাও বলেছিলেন, বাংলা সিনেমাকে এই পঙ্কিল অবস্থা থেকে নাকি রক্ষা করতে পারবে আমার এই ছবি। কিছু ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন।
আজ আমার মনে হচ্ছে একটা কথাই। আপনার প্রতি যে সম্মান দেখানোর কথা ছিল, সেটা হয়নি। আমি ফেরত গেলে, আরও অনেককে সঙ্গে নিয়ে আমাদের মতো করে সেই সম্মান ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা করব।