‘মেরে পাস বংলা হ্যাঁয়, গাড়ি হ্যাঁয়, মকান হ্যাঁয়…তুমহারে পাস কেয়া হ্যাঁয়?
ছবির নাম ‘দিওয়ার’। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অমিতাভ বচ্চন এবং শশী কাপুর। উত্তরে শশী বলেন, ‘মেরা পাস মা হ্যাঁয়’। বলিউড ছবির ইতিহাস বলে দু’ভাইয়ের এমন জোরদার দৃশ্য খুব বেশি লেখা হয়নি। অমিতাভ-শশীর সেই কথোপকথন যেন বাংলায় অনুবাদ করে পোস্ট করলেন অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। তবে তাতে রয়েছে এক টুইস্ট। পোস্টে কী লিখলেন তারকা? লিখলেন ‘কারও কাছে বাংলো আছে। গাড়ি আছে। আর কারও কাছে কান্তি আছে।’
আরও পড়ুন ‘প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেই কলকাতা থেকেও বাঁকুড়ার মানুষের পাশে দাঁড়ান সহজ হল’
শেষের বাক্যেই রয়েছে সেই টুইস্ট। ‘কান্তি’ শব্দ শুনতে প্রথমেই মাথায় আসে সিপিআইএম নেতা কান্তি গাঙ্গুলির নাম। তাঁর কথাই কি বলতে চাইছেন অভিনেতা? না সে বিষয়ে খোলসা করেননি তিনি। তবে, পোস্টের কমেন্ট বক্সে চোখ রাখলে পরিষ্কার হয়ে যায় যে নেটিজেন গত তিন বিধানসভার ভোটে হেরে যাওয়া সিপিআইএম নেতার কথাই বারবার উল্লেখ করে চলেছেন। তবে, কান্তির কথা উঠছেই বা কেন, এখন এ সময়ে?
কারণ ‘গোহারা’ হেরেও বর্ষীয়ান নেতা এখনও মানুষের পাশে সমানভাবে রয়েছেন। এখনও সরকারে না থেকেও দরকারে মানুষের জন্য খেটে চলেছেন। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির মাঝে কান্তিবাবু একটি ঝাঁ চকচকে কোভিড হাসপাতাল খুলেছেন। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালের ছবি দেখে রাজ্যবাসী চমকে দিয়েছেন। সিপিআইএম দলটা দশ বছর সরকারে নেই। এখন তাঁরা বিধানসভায় শূন্য। সেই দলের প্রবীণ নেতার কোভিড হাসপাতালের চমক সোশ্যাল সাইটে ঝড় তুলে দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে হাসপাতাল।
২০ মে-র ফেসবুক পোস্টে সেই হাসপাতালের ছবিও পোস্ট করেন কান্তিবাবু। ক্যাপশনে লেখেন, ‘আজ বিকেল ৪ ঘটিকায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর (মুকুন্দপুর প্রতিবন্ধী ভিলেজ) উদ্যোগে ৫০ বেড (দ্রুত লক্ষ্য ১০০ বেড ) সম্পন্ন এক ত্রাণ কেন্দ্র খোলা হবে। ঠিকানা: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী, ১৪৭, বরাখোলা, কৃষকপল্লী, মুকুন্দপুর, কলকাতা- ৭০০০৯৯। আপনাদের আর্থিক সাহায্য পেলে আমরা এই প্রকল্পকে আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে পারবো, QR কোড দেওয়া হল। সমস্ত অনুদান-এর বিবরণ ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট-এর মারফত আপনাদের সামনে তুলে ধরা হবে।‘
‘ঝড়ের আগে কান্তি আসে’—এটাই ছিল জনপ্রিয় রাজনৈতিক স্লোগান। কান্তি অর্থাৎ সেই কান্তি গাঙ্গুলি। আমফান কিংবা বুলবুলে গোটা সুন্দরবন যখন একেবারে বিপর্যস্ত তখনও এই কান্তি গাঙ্গুলিকে দেখা গিয়েছে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বিপদের দিনগুলোয় কান্তি সুন্দরবনের বন্ধু। আবার সেই বন্ধুত্বের প্রমাণ দিলেন কান্তি গাঙ্গুলি। আর তাঁর এই মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগকেই বোধ হয় কুর্ণিশ জানালেন অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।