Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Sabitri Chatterjee Secrets: উত্তমকুমার ছাড়া আর কাকে মনেপ্রাণে ‘স্বামী’ হিসেবে ভালবেসেছিলেন সাবিত্রী?

Sabitri-Uttam-Sarbendra: উত্তম-সাবিত্রীর প্রেম নিয়ে সকলেই অল্প বিস্তর ওয়াকিবহাল। কিন্তু সাবিত্রীর জীবনে উত্তম-পরবর্তী সময়ে আরও এক প্রেম আসে, যা তাঁকে সব অর্থেই ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সাবিত্রীর সেই প্রেমিকও ছিলেন এক অভিনেতাই। কে সেই অভিনেতা?

Sabitri Chatterjee Secrets: উত্তমকুমার ছাড়া আর কাকে মনেপ্রাণে ‘স্বামী’ হিসেবে ভালবেসেছিলেন সাবিত্রী?
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।
Follow Us:
| Updated on: Dec 13, 2023 | 5:35 PM

বাঙালির ‘ম্যাটিনি আইডল’ উত্তম কুমারের জীবনে প্রেম এসেছে একাধিক। তিনি বিয়ে করেছিলেন গৌরীদেবীকে। সম্পর্কের গুঞ্জন ছিল সহ-অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের সঙ্গে। খোলামেলা ভাবে সংসার থেকে দূরে একসঙ্গে থেকেছিলেন আর এক সহ-অভিনেত্রী সুপ্রিয়াদেবীর সঙ্গে। এবং যে প্রেমের কাছে বারবার ফিরে গিয়েছিলেন, তা হল আরও এক সহ-অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। উত্তমকুমারের প্রেমের কাছে নতজানু হয়ে বিয়ে করা থেকেও বিরত থেকেছিলেন সাবিত্রী। শোনা যায়, উত্তমও বারবার ভেস্তে দিয়েছিলেন সাবিত্রীর বিয়ের প্রস্তাব। তিনি মানতেই পারতেন না প্রাণপ্রিয় ‘সাবু’ (এই আদরের ডাকেই বাংলার গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আজও সম্বোধন করে সাবিত্রী চট্টোপাধ্য়ায়কে) বিয়ে করে সংসার করবেন অন্য কারও সঙ্গে। উত্তম-সাবিত্রীর প্রেম নিয়ে সকলেই অল্প বিস্তর ওয়াকিবহাল। কিন্তু সাবিত্রীর জীবনে উত্তম-পরবর্তী সময়ে আরও এক প্রেম আসে, যা তাঁকে সব অর্থেই ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সাবিত্রীর সেই প্রেমিকও ছিলেন এক অভিনেতাই। কে সেই অভিনেতা?

তবে সেই ব্যক্তি উত্তমকুমারের মতো ততটা খ্যাতি অর্জন করতে পারেননি। তাই তাঁকে নিয়ে হইচইও কম। কিন্তু সাবিত্রীর মনের মণিকোঠায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছিলেন সেই অভিনেতা। একবার এক সাক্ষাৎকারে সাবিত্রী খোলাখুলি জানিয়েওছিলেন, তিনি বিয়ে করতে পারেননি, কারণ তাঁর সঙ্গে যে সব পুরুষ সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন, তাঁদের আগে থেকেই বাড়িতে একজন ‘বউ’ ছিল। এখনকার সময় হলে হয়তো তাঁর প্রেমিকেরা আগের স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে সাবিত্রীকেই বিয়ে করে নিতেন। কিন্তু সাবিত্রী তাতে রাজি হতেন কি না, সেটা লাখ টাকার প্রশ্ন। তিনি কোনওদিনও কারও সংসার ভাঙেননি। তিনি নিজে ভিতরে-ভিতরে ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কার কথা বলা হচ্ছে এক্ষেত্রে?

সর্বেন্দ্র সিং। সাবিত্রীর মনে এতটাই পাকা ছিল এই সর্বেন্দ্রর জায়গা যে, তাঁকেই মনে-মনে ‘স্বামী’ হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছিলেন সাবিত্রী। এবং ‘দুর্ভাগ্যবশত’ উত্তমকুমারের মতো সেই ব্যক্তিও ছিলেন বিবাহিত। সাবিত্রী যে বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েছিলেন, তাঁদের কারও সংসার ‘ভাঙেননি’। সর্বেন্দ্রর বেলাতেও তাই-ই হয়েছিল। দিন-রাত সাবিত্রীর বাড়িতেই পড়ে থাকতেন সর্বেন্দ্র। নেশায় বুঁদ থাকতেন। মদ্যপানের কারণে পেটে তীব্র যন্ত্রণা হত তাঁর। সেই যন্ত্রণা মেটানোর অনেক চেষ্টা করেছিলেন সাবিত্রী। তাঁর অস্ত্রোপচারে সব রকম ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। মুম্বইয়ে হয়েছিল অস্ত্রোপচার। অনেক আশা ছিল সাবিত্রীর, তিনি একটা মাস প্রেমিকের সঙ্গে মুম্বইয়ে কাটাবেন। কিন্তু পারলেন না। ‘বউবাচ্চা’ওয়ালা লোক সর্বেন্দ্র। মুম্বইয়ে যাওয়ার বেলায় স্ত্রীকেই নিয়ে গিয়েছিলেন সঙ্গে। যদিও সর্বেন্দ্র সাবিত্রীকে এবং সাবিত্রী সর্বেন্দ্রকে ‘স্বামী-স্ত্রী’ হিসেবেই গ্রহণ করে নিয়েছিলেন।

তাঁর আত্মজীবনী ‘সত্যি সাবিত্রী’তে অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় সর্বেন্দ্রকে নিজের স্বামীর স্বীকৃতি দিয়ে লিখেছিলেন, “যতই বিনি সুতোর মালার সম্পর্ক হোক না কেন, তবু আমি তো মনেপ্রাণে ওঁকে আমার যত না বন্ধু ভাবি, তার থেকে অনেক বেশি ভাবি—উনি আমার স্বামী। সিঁথিতে না হয় নাই বা সিঁদুর ছোঁয়ানো হল, হাতে না হয় না-ই বা শাঁখা উঠল, না হয় সানাই বাজিয়ে বেনারসি আর ফুলে মালায় সেজে হাতে হাত রেখে বিয়ের মন্ত্র নাই বা উচ্চারণ করা হল, দু’টো হৃদয় কি আগেই তাদের আপন রঙে সাজেনি? দু’টো মন কি নীরবে-নিভৃতে বিবাহমন্ত্র উচ্চারণ করেনি? বাকি সবটুকু তো বাইরের…” এই সর্বেন্দ্রর মৃত্যুর সময়ও সাবিত্রীকে তাঁর ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। ফুলের মালাটুকু পরাতে দেওয়া হয়নি। প্রেমিকা হিসেবে সাবিত্রী কি সেদিন হেরে গিয়েছিলেন? আজও, এই ৮০ পেরিয়ে যাওয়া বয়সেও, সেই প্রশ্নের উত্তরই বারবার খুঁজে চলেন সাবিত্রী। উত্তর মেলে না…