গত শনিবারের ঘটনা। আচমকা বুকে ব্যথা হতে শুরু করে বাঙালি পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের। একটুও সময় নষ্ট না করে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ভর্তি করেন ইএম বাইপাস সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে। আগে থেকেই হৃদযন্ত্রে ব্লকেজ ছিল কমলেশ্বরের। ২০১৩ সালে ধরা পড়ে সমস্যা। সেই সময় একটা স্টেইন বসানো হয়েছিল। এই সমস্ত ক্ষেত্রে পুরনো সমস্যা ফিরে আসতে পারে। ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল, টানা ৯ বছর সেরকম সমস্যা হয়নি কমলেশ্বরের। ‘ককপিট’, ‘ক্ষত’র মতো একাধিক ছবিও তৈরি করেছেন সেই সময়ই। নিয়মিত নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন। শনিবার ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন কমলেশ্বর। পরিচালকের কন্যা উজানের থেকে জানা গেল তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা।
TV9 বাংলাকে উজান বলেছেন, “বাবা এখন ঠিক আছেন। হার্টের সমস্যা বাবার অনেকদিনের। ২০১৩ সালে বাবার হার্টে ব্লকেজ হয়েছিল। স্টেইন বসানো হয়েছিল। এই ধরনের সমস্যা অনেক সময় ফিরে আসে। বাবার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। এখন আর একটা স্টেইন বসানো হয়েছে।”
এই মুহূর্তে কেমন আছেন কমলেশ্বর? উজান বলেছেন, “অনেকটা সুস্থ অনুভব করছেন বাবা। এখনও তিনি হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসা চলছে। বুধবার হাসপাতাল থেকে বাবাকে বাড়িতে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
প্রথম জীবনে ডাক্তারির ছাত্র ছিলেন কমলেশ্বর। অনেকগুলো বছর চিকিৎসা পেশার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু বরাবরই থিয়েটার ও সিনেমা ছিল প্রিয়। মেডিক্যাল কলেজে লেখাপড়া করার সময় নাটক নির্দেশনা করতেন। পুরোদমে চিকিৎসা করার সময়ও প্যাশন থেকে সরে আসেননি পরিচালক। ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘উড়ো চিঠি’র মতো ছবি পরিচালনা করেছেন কমলেশ্বর।
ফেসবুকে অ্যাক্টিভ কমলেশ্বর শনিবার বেলা ১২.১৩ মিনিটে যে পোস্ট করেছিলেন, সেখানে তিনি লিখেছিলেন, “বাঙালিকে ঠিক করতে হবে অনুপ্রেরণা কে? বন্দ্যোপাধ্য়ায়? ঈশ্বরচন্দ্র না অন্য কেউ?”
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করতেও পিছপা নন কমলেশ্বর। সাম্প্রতিক পোস্টে তিনি লিখেছেন,
“যথেষ্ট পড়াশোনা, কঠিন অধ্যাবসায় ও দৃঢ় সংকল্প না থাকলে
এই সমাজে সহজে কেউ উচ্চপদস্থ আমলা, ডাক্তার, পুলিশ,
শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক বা শিল্পী, সংস্কৃতি কর্মী হয়ে উঠতে পারেন না।
ক্ষমতার দাপট যখন একটা দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনকে বাঁচিয়ে রাখতে
তাঁদের চুপ করে থাকতে বাধ্য করে – তা অসহনীয় হয়ে উঠবেই।”