মন ভাঙলে কাঁদিস, পাশের ঘরে আইসক্রিম আর গল্প নিয়ে মা তোর অপেক্ষায় থাকবে : ছেলেকে দেবশ্রী

Deboshree: এ চিঠিতে আছে প্রেমে ব্যথা পাওয়া সন্তানের পাশে মা হিসেবে থাকার বার্তা, ইঁদুর দৌড়ে সামিল না হয়ে হাসির বার্তা। চিঠিজুড়ে আবেগের ফুলঝুড়ি, মন উজাড় করা এক মিষ্টি কথন।

মন ভাঙলে কাঁদিস, পাশের ঘরে আইসক্রিম আর গল্প নিয়ে মা তোর অপেক্ষায় থাকবে : ছেলেকে দেবশ্রী
ছেলের সঙ্গে দেবশ্রী।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 11, 2021 | 4:50 PM

কবি লিখেছিলেন আঠারো বছরের দুঃসাহসের কথা। লিখেছিলেন স্পর্ধার কথা…ছেলে আঠেরোতে পড়ার মাস তিনেক আগে খোলাচিঠি লিখলেন দেবশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের, তবে এ চিঠি আঠেরোর জয়গান নয়। তাতে বিরাট দুঃসাহসের উঁকি দেওয়ার কথাও লেখা নেই। এ চিঠিতে আছে প্রেমে ব্যথা পাওয়া সন্তানের পাশে মা হিসেবে থাকার বার্তা, ইঁদুর দৌড়ে সামিল না হয়ে হাসির বার্তা। চিঠিজুড়ে আবেগের ফুলঝুড়ি, মন উজাড় করা এক মিষ্টি কথন।

দেবশ্রী লিখছেন,

“আজ থেকে তিন মাস পর তোমার ১৮ হবে। সন্দেহ নেই, বয়সটি বড়ই জটিল। তবে তোমার বয়স যতই হোক না কেন, মা এবং বাবা হিসেবে আমার আলিঙ্গন সবসময় তোমার জন্য উন্মুক্ত। কিছু কথা আজ তোমায় বলতে চাই, ১৮ বছরে পরীক্ষার নম্বর অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ইঁদুর দৌড়ে দৌড়তে দৌড়তে এতটাও অন্ধ হয়ে যেও না যে হাসতে ভুলে যাও। তোমার যখন ১৯ হবে তোমার প্রেমিকা যদি কোনও রাতে মেসেজ না-ও পাঠায় না ঘুমিয়ে কাটিয়ো না যেন, এত দুঃখর জন্য তুমি যে বড্ড ছোট। বয়স যখন কুড়ি হবে তখন তুমি বা সে, দুজনেই দুজনের মন ভাঙতে পারো। কান্না পাবে জানি। পাশের ঘরে মা অপেক্ষা করবে আইসক্রিম আর ছোটবেলার একগুচ্ছ গল্প নিয়ে।

যখন ২২-এ পড়বে আবার ভালবাসা তোমার কাছে আসবে। ওকে বাড়িতে ডিনারের জন্য ডেকো। ও জানুক যদি খারাপ কিছু হয়, ও শুধু তোমাকে একা নয়, আমাকেও কষ্ট দেবে। যখন ২৫ হবে তুমি চাকরি করবে। কাজের জায়গায় হয়তো টক্সিক পরিবেশের সম্মুখীন হতে হবে তোমায়। রিপোর্ট করবে। আওয়াজ তুলবে। তোমার মানসিক শান্তির থেকে বড় তো আর কিছুই হতে পারে না।

এরকম করেই ২৮-এর পড়বে তুমি। হয় কোনো মেয়ে, কোনও ছেলে বা কোনও ইউনিকর্নের সঙ্গে তোমার দেখা হবে। তোমার যা কিছু রয়েছে তার প্রত্যেকটি দিয়ে তাঁকে তুমি ভালবাসবে। কারণ, তুমি তো জান ইউনিকর্নদের সহজে পাওয়া যায় না, ওঁরা দুষ্প্রাপ্য। এ সব কিছুর পরে আমি যখন খুব বুড়ি হয়ে যাব, যেন, মা তোমার সঙ্গেই আছে… সব সময় থাকবে…।”

ছেলে বড় হচ্ছে। নিজের সাংসারিক জীবনে দিন কয়েক আগে ঝড় উঠেছে দেবশ্রীর। তিনি চান ছেলের গায়ে যেন এ সবের আঁচ না পড়ে। টিভিনাইন বাংলাকে বলছিলেন, “এক জায়গা থেকে কনসেপ্টটা পেয়েছিলাম। তারপর নিজেই লিখে ফেললাম। একেবারে মন থেকে। ও জানুক, যাই হয়ে যাক না কেন, মা সব সময় ওর সঙ্গে আছে।”

ব্যক্তিগত অশান্তি, আইন আদালতের মধ্যেই টলিপাড়াতেও নিজের স্বতন্ত্র পরিচিতি বানাতে শুরু করেছেন তিনি। রাজর্ষি দে’র ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। শোনা যাচ্ছে, পরিচালকের পরের ছবিতেও দেখা যাবে তাঁকে।