কিছুদিন আগেই মধ্যরাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন টলিউডের প্রবীণ অভিনেতা দীপঙ্কর দে। সুগার ফল করেছিল তাঁর। একটুও সময় নষ্ট না করে মাঝরাতেই দক্ষিণ কলকাতার বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারী হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করিয়েছিলেন অভিনেতার স্ত্রী দোলন রায় (পেশায় তিনিও বিখ্যাত অভিনেত্রী)। দেড় দিনের মধ্যেই দীপঙ্করকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ডিসচার্জের দিন কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে (৫ নভেম্বর) খেলা হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপের একটি ম্যাচের–ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। সেদিন ১০০ রান করেছিলেন বিরাট কোহলি এবং হাসপাতালে ডিসচার্জ হওয়ার চেয়েও খেলার দিকে ছিল দীপঙ্করের যাবতীয় মনযোগ। কিছুতেই হাসপাতালে থাকতে চাইছিলেন না অভিনেতা। তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করেছিলেন। সেই দীপঙ্করের কাছে ভারতের বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতা নিয়ে অনেক স্বপ্ন এবং আশা তৈরি হয়েছিল।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) আহমেদাবাদে ছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। ভারতের সম্মুখে দাঁড়িয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সক্কাল থেকেই প্রস্তুতি চলছিল দীপঙ্করের বাড়িতে। বাজার থেকে মাংস আনিয়েছিলেন তিনি। দোলনের ভাইরা এসেছিল অভিনেতা দম্পতির সঙ্গে খেলা দেখতে। TV9 বাংলাকে দোলন বলেছেন, “সক্কাল থেকে আমার বাড়িতে তোরজোড় চলছিল খুব। আপনাদের দীপঙ্করদা এক্কেবারে রেডি হয়ে বসেছিলেন টিভির সামনে। মাংসটাংস এল। রান্না করলাম। বেলা ১টার মধ্যে খাওয়াদাওয়া সেরে বসে পড়লেন টিভির সামনে। তারপর একবারও ওঠেননি টিভির সামনে থেকে।”
অনেক প্রত্যাশা ছিল ক্রিকেটভক্ত দীপঙ্করের। গোটা দেশের কোটি-কোটি নাগরিকের মতোই ভেবেছিলেন, ২০০৩-এ অস্ট্রেলিয়ার কাছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ হারার ২০ বছর পর সেই বদলা নিতে পারবে রোহিতের টিম ব্লু। কিন্তু হল না। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম তখন নীলে ভরা। ১১জন হলুদ জার্সি পরা বিদেশি ঘরের মাঠে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ নিয়ে চলে গেল। এ হার যেন বুকে লেগে গিয়েছে দীপঙ্করের। দোলন বলেছেন, “আর বলবেন না। হতাশ হয়েছেন খুব। বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তীব্র কষ্ট পেয়েছেন দীপঙ্কর। ভারতের হার দেখতে-দেখতে নিঝুম হয়ে গিয়েছিলেন। মনে হচ্ছে, কী যেন একটা ঘটে গিয়েছে। থম মেরে বসে আছেন ভারত হারার পর থেকে। মুখে কোনও কথাই নেই। এতটাই কষ্ট পেয়েছেন যে, মাংসটাংস সব থ্রিজে তুলে দিতে বলেছেন। গম্ভীরভাবে বলেছেন, ‘আজ শুধু আলুসেদ্ধ ভাতই খাব’।”