Rupankar Bagchi Controversy: বাংলা ইন্ডাস্ট্রি আস্তে-আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে, রূপঙ্করের এই বক্তব্য আমি সমর্থন করছি: দ্রোণ আচার্য

Drono Acharya: এই ঘটনার পর সুরকার দ্রোণ আচার্য পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কথা বলেছেন TV9 বাংলার সঙ্গে। কী বলেছেন দ্রোণ?

Rupankar Bagchi Controversy: বাংলা ইন্ডাস্ট্রি আস্তে-আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে, রূপঙ্করের এই বক্তব্য আমি সমর্থন করছি: দ্রোণ আচার্য
রূপঙ্কর বাগচী।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 02, 2022 | 7:10 PM

তীব্রভাবে কটাক্ষের মুখে পড়েছেন বাঙালি গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। শহরে কেকে এসে লাইভ কনসার্ট করেন। তাঁকে উন্মাদনা লক্ষ্য করে কেকের মৃত্যুর আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন রূপঙ্কর। সেখানে নিজের কিছু বক্তব্য রেখেছিলেন রূপঙ্কর। ভিডিয়োটি পোস্ট হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর কেকের মৃত্যু ঘটে। আর তারপরই রূপঙ্করকে ছিছিক্কার করতে শুরু করে বাংলার শ্রোতাগণ। তারকাদের একাংশও তাঁকে ধিক্কার জানিয়েছেন। এই ঘটনার পর সুরকার দ্রোণ আচার্য পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কথা বলেছেন TV9 বাংলার সঙ্গে। কী বলেছেন দ্রোণ?

TV9 বাংলাকে দ্রোণ আচার্য বলেছেন, “আমার বক্তব্য খুবই পরিষ্কার। রূপঙ্কর যে টোনে কথা বলেছেন, যে ভাবে কথা বলেছেন, যে পরিস্থিতিতে কথা বলেছেন, সেটা হয়তো ঠিক নয়। কিন্তু রূপঙ্কর যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন, সেখানে তিনি বলতে চেয়েছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে কিংবা হারিয়ে যাবে… সেটা তিনি ঠিক বলেছেন। আমি সেটা সমর্থন করেছি। আমি বলতে চাই না ‘হু ইজ় কেকে’ কারও প্রতিপক্ষ। এটা বলারই কোনও মানে হয় না। আমার ধারণা সেটা রূপঙ্কর নিজেও সেটা বুঝেছেন। বা সেটা তাঁর বোঝা উচিত। এই ঘটনার পর আমার রূপঙ্করের সঙ্গে কথা হয়নি। আমরা দু’জনেই একটা সিস্টেমের অংশ। আজ আমরা শ্রেয়া ঘোষালকে শ্রেয়া ঘোষাল বলে চিনি কবে থেকে, বাংলায় সাকসেস পাওয়ার পরে। অরিজিৎ সিং, বাবুল সুপ্রিয়, কুমার শানু, সকলেই সাফল্য পেয়েছেন মুম্বইয়ে যাওয়ার পরে। রূপঙ্কররে আমরা বলি না আপনি কথাটা ভুল বলেছেন। আমরা তাঁকে হেনস্থা করছি, তাঁর মৃত্যু কামনা করছি, তাঁকে খুব খারাপ কথা বলছি, তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার কথাও বলছি আমরা। আমরা বলছি রূপঙ্কর ভুল, তাঁকে চারটে গালিগালাজ করছি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে আমরা রূপঙ্করের থেকে কোথায় আলাদা হলাম। এটাই আমার বলার বক্তব্য। যা ইচ্ছা তাই হচ্ছে এখান। জনতন্ত্রে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা থাকে। সকলে আমরা আশা করছি, রূপঙ্কর খুবই মেপে ও মার্জিত ভাবে কথা বলবেন। এবং আমরা যে কথাগুলো বলব, একেবারেই মেপে বলব না…”

ফেসবুক পোস্টে দ্রোণ লিখেছেন: 

“রূপঙ্কর তুমি চাঁদ ধরতে ছেয়েছিলে।

কলকাতায় গানবাজনা করলে অরিজিৎ সিং , কুমার শানু, শ্রেয়া ঘোষাল কিছুতেই এরম গান গাইতেই পারতেন না। ওনারা কলকাতায় থাকাকালীন এমন কিছু গাইতেন যা আমরা ওনারা মুম্বাই যাওয়ার পরে বুঝেছি। কলকাতায় থাকা কেউ-ই ওনাদের মতো ভালো গান গাইতে পারেন না বা ওনাদের মতো কাজ করতে পরে না বলে কলকাতা মনে করে। তাই মেনে নাও দোষ মুম্বাইয়ের, শিল্পীদের নয়, দোষ কলকাতার শিল্পীদের। ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড তো সান্তনা পুরষ্কার।”

দ্বিতীয় ফেসবুক পোস্টে দ্রোণ লিখেছেন: 

“হু ইজ় রূপঙ্কর? রূপঙ্কর যেভাবে কথা বলেছেন সেটা বাকিদের মতো আমিও আদৌ সমর্থন করছি না। ভাষার প্রয়োগ সমর্থন করছি না। কিন্তু সমস্যা বা বাস্তব কিন্তু তাতে পাল্টাবে না। আসলে রূপঙ্কর বা কেকে বা আমি সবাই এই সিস্টেমের অংশ। পারলে রূপঙ্কর যা করেছেন, বিশ্বাস করুন ,আপনারাও ঠিক তাই করছেন এখন।”

ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিয়োতে রূপঙ্কর বলেছেন, “আজ (৩১.০৫.২০২২) ফেসবুকে ছিলাম আমি। কেকে শো করতে এসেছিলেন। সেটা নিয়ে খুব উত্তেজনা ছিল। ওঁর লাইভ পারফরম্যান্সের কিছু ভিডিয়ো আমি দেখছিলাম। দারুণ লাগল দেখে। উনি দারুণ গান করেন। কেকের ভিডিয়োগুলো দেখার পর মনে হল, আমাদের কলকাতা শহরে যে সমস্ত গায়ক-গায়িকারা কেকের লেভেলে নাম করেছেন (বলতে চাইছি জাতীয় স্তরে কেকের জায়গা), তাঁদের ভিডিয়ো থাকে লাইভ পারফরম্যান্সের। যেমন আমার থাকে, অনুপম রায়ের থাকে, সোমলতার থাকে, ইমন, রাঘব, মনোময়ের মতো গায়ক-গায়িকাদের থাকে সারা সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। আমরা তো কেকের চেয়ে সকলেই ভাল গান করি। আমাদের নিয়ে আপনারা এত উত্তেজনা বোধ করেন না কেন বলুন তো। সেটা কী কারণে? কেকে, কেকে, কেকে, কেকে… কে… কেকে কে ভাই! যে কোনও কেকের চেয়ে আমরা ভাল। আমি যে কজন গায়কের নাম এই মুহূর্তে উচ্চারণ করলাম, তাঁরা প্রত্যেকেই মিস্টার কেকের চেয়ে ভাল গায়ক। আপনারা এত উত্তেজিত কেন মুম্বই নিয়ে? কতদিন মুম্বইয়ের পিছনে এভাবে ঘুরবেন? দক্ষিণ ভারতকে দেখুন, উড়িষ্যাকে দেখুন… বাঙালি হয়ে উঠুন ভাই। প্লিজ়।”

এই ভিডিয়ো পোস্ট করার পরই খবর আসে কেকে আর নেই। ততক্ষণে নেটিজ়েনদের রোষের মুখে পড়েছেন রূপঙ্কর। অনেকে মনে করছেন রূপঙ্করের অভিশাপের কারণে মৃত্যু হয়েছে কেকের। প্রিয় অবাঙালি গায়কের মৃত্যু মন ভেঙেছে বাঙালির। প্রাণ কাঁদছে তাঁদের। তার উপর রূপঙ্করের এই মন্তব্য রাগিয়ে দিয়েছে তাঁদের। অনুরাগী হারাতে শুরু করেছেন রূপঙ্কর। একজন বলেছেন, “উনি চলে গিয়েও থেকে গেলেন, থেকেই যাবেন আর আপনি থেকেও সবার মন থেকে মুছে যাবেন,ছিঃ!” একজন লিখেছেন, “রূপঙ্কর বাগচী সবার মন থেকে মুছে যাবে। লজ্জা করে। কিন্তু কেকে প্রজন্মের পর-প্রজন্ম ধরে রয়ে যাবেন।” একজন লিখেছেন, “আপনি যে নিতান্তই অসভ্য লোক সেটা প্রমান করলেন। উনি মারা গিয়ে লোকের মনে থেকে যাবেন। মাঝখানে আপনি নিজের সম্মান হারালেন।” এই ভিডিয়োর পর রূপঙ্করকে বয়কটের ডাক দিয়েছে বাংলার শ্রোতা।