কিংবদন্তীর জীবনাবসান। প্রয়াত শাঁওলি মিত্র। রবিবার দুপুর ৩টে ৪০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবার সূত্রে খবর, হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। শেষযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন পরিবারের প্রিয়জনেরা। মৃত্যুর আগে এক ইচ্ছাপত্র লিখে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী-নাট্যব্যক্তিত্ব। লিখেছিলেন, বাবা শম্ভু মিত্রের মতোই তাঁর ইচ্ছে সকলের অগোচরে যেন তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। হয়েছেও তেমনটাই। তাঁর ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে সিরিটি শ্মশানে এ দিন শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। নিভৃতেই চলে গেলেন কিংবদন্তী। সাক্ষী রইলেন হাতে গোনা কিছু মানুষ।
তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে কার্যত স্তব্ধ শিল্পীমহল। নেমে এসেছে শোকের ছায়া। টিভিনাইন বাংলাকে বিভাস চক্রবর্তী বলেন, ““আমি তো ভাবতেই পারছি না শাঁওলি নেই। কোনও আভাসও পাইনি যে শাঁওলি অসুস্থ। শাঁওলির সঙ্গে তো আজকের পরিচয় নয়। আমি যখন বহুরূপীতে ছিলাম কিছুদিনের জন্য, সেই সময় শাঁওলিকে বাচ্চা দেখেছিলাম। কী উৎসাহী, ছুটে বেড়াচ্ছে। ও অসম্ভব গুণী মেয়ে। একসঙ্গে টেলিভিশনে ট্রেনিংয়ে ছিলাম। পরে ও অসুস্থ হয়ে পড়ায় ফিরে এল। পরে আর টেলিভিশনে থাকেনি। আমরা ছিলাম। শাঁওলির সঙ্গে নাটক, থিয়েটারে যুক্ত থেকেছি। আমি ভাবতেই পারছি না ও নেই। কী হয়েছিল তাও জানি না। আমি যে কী প্রতিক্রিয়া দেব জানি না।”
নাট্যকার শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রর মেয়ে ছিলেন শাঁওলি। তবে এটিই তাঁর একমাত্র পরিচয় নয়। তিনি পরিচালক, নাট্যকার, বেতার নাটকের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন আজীবন। বাংলা থিয়েটারের একনিষ্ঠ কর্মী এই মানুষটি পদ্মশ্রী (২০০৯), বঙ্গ বিভূষণ (২০১২), সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরস্কারে (২০০৩) পুরস্কৃত হয়েছিলেন। তাঁর চলে যাওয়ায় নাট্য জগতে তৈরি হল এক অদ্ভুত শূন্যতা। যে শূন্যতা পূর্ণ হওয়ার নয়।