আমার এতদিনের দীর্ঘ কেরিয়ারে তরুণ মজুমদারের সঙ্গে আমি কোনও ছবি করিনি। তবে চিনতাম মানুষটিকে। সামনাসামনি দেখা হলে কথাও হয়েছে বহুবার। একটু রাশভারী, কিন্তু একই সঙ্গে বড়ই সজ্জন একজন ব্যক্তি। কিছু দিন ধরেই শুনছিলাম তাঁর শরীর ভাল যাচ্ছে না। কিন্তু তারপর শুনলাম তিনি নাকি সুস্থও হচ্ছেন। কিন্তু এর মাঝে কী এমন হল যে একেবারে মৃত্যুসংবাদ! আমাদের তো এখন চলে যাওয়ারই পালা। তবু মৃত্যু আর কে-ই বা চায়।
আমি কেন তরুণবাবুর ছবিতে কাজ করিনি, সে প্রশ্নের উত্তর না হয় আজকের দিনে না বলাই ভাল। একবার এক চরিত্র তিনি আমায় অফার করেছিলেন। কিন্তু মুখ্য চরিত্রে আমি ছিলাম না। সন্ধ্যা অভিনয় করেছিলেন। আমাকে অন্য চরিত্রের জন্য ভাবা হয়েছিল। সেই চরিত্রে অভিনয় যদিও পরে আমার করা হয়ে ওঠেনি। আমারই এক সহকর্মী অভিনয় করেছিলেন। তবে আমার পছন্দের খুব পরিচালক ছিলেন উনি। ভাল-ভাল ছবি বানিয়েছেন, সে কথা তো অস্বীকার করার জায়গা নেই। কত নায়কের উত্থান হয়েছে শুধুমাত্র তাঁর হাত ধরেই। সন্ধ্যার কথা খুব মনে পড়ছে হঠাৎ। এতদিন মানুষটার সঙ্গে ঘর করেছে, জানি না কী অবস্থার মধ্যে রয়েছে এখন।
আজ আমাকে তরুণবাবুর চলে যাওয়ার স্মৃতি ভাগ করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর পর আমিও হয়তো কোনওদিন চলে যাব। তখন এভাবেই স্মৃতি ভাগ করে নেবেন অন্য কেউ। জীবন তো থেমে থাকে না। চলে যাওয়ার বয়স তো প্রায় চলেই এল আমারও। কিন্তু চলে যেতে কে-ই বা চায়? তরুণবাবুও কি চেয়েছিলেন?