তাঁর স্বামী দীপঙ্কর দে’র ভাগ্য় যতখানি মসৃণ ছিল, অভিনেত্রী দোলন রায়ের ততখানি ছিল না। তিনি নিজে মুখে স্বীকার করেছিলেন যে, অভিনয় পেশায় তাঁর ভাগ্য সুপ্রসন্ন নয়। বারবার সুযোগ এসে ফসকে গিয়েছে যাকে বলে। সেই বেদনার কথাই একবার টেলিভিশনের পর্দায় বলেছিলেন দোলন। আফসোস যে মারাত্মক হয়েছিল, তা তাঁর কথাতেই টের পাওয়া গিয়েছিল সেই সময়।
দোলন রায়কে একবার অভিনয়ের অফার দিয়েছিলেন খোদ সত্যজিৎ রায়। কিন্তু সেই কাজ আর করা হয়নি দোলনের। কেন জানেন? দোলন বলেছেন, “যেদিন তিনি আমাকে ছবিটি অফার করেছিলেন, তারপরেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আর ফিরে আসেননি।”
কেবল সত্যজিৎ রায় নন। একই ঘটনা ঘটেছিল দোলন এবং তরুণ মজুমদারের মধ্যেও। দোলন অভিনীত একটি ছবি শেষই করতে পারেননি তরুণ মজুমদার এবং ছবি মুক্তি পায়নি কোনওদিন। দোলন মস্করা করেই বলেছেন, “এটাই বোধহয় তরুণ মজুমদারের কেরিয়ারের একটি মাত্র ছবি যেটি তিনি অর্ধেক শেষ করেছিলেন আমার সঙ্গে এবং ছবিটি রিলিজ় করেনি।”
এদিকে দোলেনের একদা প্রেমিক এবং বর্তমান স্বামী দীপঙ্কর দে’কে অভিনয়ের প্রথম সুযোগ দিয়েছিলেন সত্য়জিৎ রায়ই। তাঁকে তিনি লঞ্চ করেছিলেন ‘সীমাবদ্ধ’ ছবিতে। ১৯৭১ সালে সেই প্রথম সুযোগ। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি দীপঙ্করকে। পরবর্তীকালেও ‘গণশত্রু’, ‘শাখা প্রশাখা’, ‘আগন্তুক’-এর মতো ছবিতে দীপঙ্কর সত্যজিতের পরিচালনায় কাজ করেছিলেন। কিন্তু সেই ভাগ্য হয়নি দোলনের। সেই দুঃখ তাঁর বুকে ভীষণরকম জ্যান্ত।