দুর্গাপুজো আসছে। মা আসছেন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের আর বেশি দেরি নেই। করোনা আতঙ্ক এবং লকডাউনের জেরে গত বছরের মতো এ বছরের পরিস্থিতিও বিশেষ ভাল নয়। তবে তার মধ্যেই নিয়ম নীতি মেনে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বাড়ির পুজো ঘিরে থাকেন বহু মানুষ। সকলের সঙ্গেই যেন আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান তিনি। এ বার এমন একজনের সঙ্গে আলাপ ররিয়ে দিলেন, যে নাকি মনে করে সুদীপার সন্তান আদিদেভের জন্মের পর তার আদর কমে গিয়েছে।
একটি ছোট ছেলের সঙ্গে নিজের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন সুদীপা। তিনি লিখেছেন, ‘আলাপ করিয়ে দিই। ও হলো সোমনাথ। এ ছবিখানা প্রায় ৮/৯ বছর আগের তোলা। সোমনাথ আমাদের ঢাকিভাইদের সাথে আসতো। কাঁসর বাজাবে বলে। কিন্তু,কাঁসর বাজানো ছাড়া- অন্য অনেক কিছু ওকে করতে হতো।’ পুজোর দিনে কী কী করত সে দিনের ছোট্ট সোমনাথ? সুদীপা লিখেছেন, ‘অষ্টমীর আসরে- কবিতা বলা,আমার ভাইপো-ভাইঝিদের সাথে তাল মিলিয়ে দুষ্টুমি করা। মাইক্রোফোন ফাঁকা পেলেই- গান জুড়ে দেওয়া, আর কাঁসর লুকিয়ে রাখা। কিন্তু সব কিছুতে বাড়ীর অন্য বাচ্চাদের মতো সুযোগ পেলেও- ‘কাঁসর’ বাজানো তার আর হতো না। হবে কি করে? আর একজন কাঁসর ধরে যদি টানাটানি করে- আর সে যদি হয়, গৃহকর্ত্রী,তাহলে তার ওজর আপত্তি কি টেকে? সোমনাথ হাসিমুখে আমার হাতে কাঁসর দিয়ে দিতো। কেননা, তখন তো আমার আর ওর মনের বয়সের খুব বেশি ফারাক থাকতো না। শেষবার আমাকে এ ভাবেই জড়িয়ে ধরে বলে গিয়েছিলো-“তুমি তোমার নিজের কাঁসর কিনে রাখতে পারো না?” তারপর সোমনাথ আর আসে না।’
আট থেকে নয় বছর আগের সোমনাথের সঙ্গে এখনকার সোমনাথের অনেক তফাৎ। সে দিনের শিশু আজ তরুণ। তার না আসার কারণও জানিয়েছেন সুদীপা। তাঁর কথায়, ‘এক তো পড়াশনার চাপ,তার ওপর ওর নাকি ভীষন লজ্জা করে এখন। সোমনাথ পড়াশনায় ভয়ঙ্কর রকমের ভাল। দারুন বললেও- কম বলা হয়। জানি না,এ বার ওর লজ্জা ভাঙবে কি না। তবে আমি এখন আরও চারটে কাঁসর কিনে নিয়েছি। এ বার থেকে নো কাড়াকাড়ি। ওনলি ট্যাং ট্যাটাং, ট্যাং ট্যাটাং…. পুজোর আর মাত্র ৩৮ দিন বাকি। দ্যাখ সোমনাথ! আমি প্রকাশ্য বলছি- “তোর কাঁসর আমি আর কেড়ে নেবো না। আয় না রে সোনা? কতদিন তোকে দেখিনি!” (আদি হবার পর ওর ধারনা ওর প্রতি আমার ভালবাসা নাকি কমে গিয়েছে..) “ওরে ভালোবাসা কি কখনও কমে রে? বাড়ে.. আয়! এ বার দুজনে মিলে কাঁসর বাজাবো?” মা আসছে…।’ সুদীপার এই মন কেমনে চোখে জল অনুরাগীদেরও।
পরিচালক তথা প্রযোজক অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় এবং সঞ্চালিকা তথা চিত্রনাট্যকার সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো বেশ বিখ্যাত। বহু নামজাদা ব্যক্তিত্ব পুজোর কোনও একটা দিন চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজোতে হাজির হন। গত বছর যদিও ছবিটা আলাদা ছিল। এ বছরও সাধারণের জন্য ব্যবস্থা করা হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু রথের দিন এই পারিবারিক পুজোর কাঠামো পুজো হয়। চলতি বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শিল্পীর স্টুডিওতে গিয়ে সেই কাঠামো পুজো সেরে ফেলেছেন দম্পতি। সঙ্গে ছিল দম্পতির একমাত্র পুত্র আদিদেব চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, এতদিন ছেলের মুখ দেখাননি, অবশেষে ভিডিয়ো প্রকাশ মধুবনীর