দক্ষিণী ছবির জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে বলিউড। অন্যদিকে বাংলা ছবির অবস্থাও ততটাই খারাপ। করোনা পরবর্তী সময়ে টনিক ছাড়া আর কোনও ছবিকেই সেভাবে হিটের পর্যায়ে ফেলা যায় না। প্রতি শুক্রবারেই মুক্তি পায় ছবি। প্রথম কয়দিন হাউজফুল হলেও তারপর থেকেই চলতে থাকা ভাঁটা। অথচ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়– প্রায় একজোট হয়ে এখানকার পরিচালকদের বলতে শোনা যায়, ‘বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচান’। এবার এই কথাকেই শিশুসুলভ বলে ইন্ডাস্ট্রির দ্বিচারিতা নিয়ে সোজাসাপটা ধারালো মন্তব্য অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর।
ফেসবুকে একটি পোস্ট লিখেছেন সুদীপ্তা। সরাসরি বিঁধেছেন ইন্ডাস্ট্রির কিছু মানুষকে। তিনি লেখেন, “বাংলা সিনেমা কে সাপোর্ট করুন”, বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি কে বাঁচান… এই কথাগুলো খুব শিশুসুলভ লাগে আজকাল। খালি মনে হয়, একজন গৃহবধূ বা রান্নার লোক বা রেস্টুরেন্টের cook যে রান্না টা করেন, সেটাও তাঁরা কষ্ট করেই করেন। তবু খেতে খারাপ হলে আমরা খাই না, reject করি, পয়সা দিয়ে খেলে দু কথা শুনিয়েও আসি, service ভাল না হলে সোশ্যাল মিডিয়া এ বদনাম করি, বন্ধু দের না খেতে/যেতে অনুরোধ করি। তাহলে সিনেমাই বা বাদ যাবে কেন ? সিনেমা ভাল লাগলে লোকে দেখবে, না লাগলে দেখবে না।” এখানেই থামেননি সুদীপ্তা। তাঁর উক্তি, “অন্যদের বলব “বাংলা ইন্ডাস্ট্রি কে বাঁচান”, আর ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে থেকে একে অন্যের পা ধরে টানবো, দুটো একসঙ্গে তো হয় না !!!”
ছোট পরিচালকদের ঠুকে পোস্ট ও বড় প্রযোজকদের চায়ের আড্ডায় সমালোচনা– ইণ্ডাস্ট্রির এই মনোভাবের কারণেই বাংলা ইণ্ডাস্ট্রির অবস্থা তলানিতে এমনটাই মনে করছেন তিনি। কার দিকে ইঙ্গিত তাঁর? তিনি যোগ করেন, “ছোটবেলায় শিখেছিলাম, “ভাল লাগলে সবার সামনে বল, খারাপ লাগলে আলাদা করে ডেকে বল”। তাতে দুজনের সম্মান ই বাঁচে। আমরা না অন্য কে সম্মান জানাতে পারছি, না নিজের সম্মান ধরে রাখতে পারছি। আমাদের বাঁচিয়ে রাখার দায় অন্য কারও নেই, কোনওদিন ছিল ও না। ওটা আমাদেরই দায়িত্ব।” যেভাবে টলিউড একে অন্যের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে তাতেই যে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, এমনটাই মনে করছেন অভিনেত্রী। শুধু সুদীপ্তাই বা কেন, ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও একই কথা। লবিবাজির অভিযোগ বারেবারেই প্রকাশ্যে এসেছে। সাম্প্রতিক কালে এক প্রযোজক সরাসরি আঙুল তুলেছেন ইণ্ডাস্ট্রির মাথার দিকেই। সুদীপ্তার ওই পোস্টেও এই নেতিবাচক মনোভাব ও দ্বিচারিতার প্রসঙ্গের সঙ্গে সম্মত হয়েছেন অনেকেই। সঙ্কটকালে একজোট নাকি নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণের অপরিসীম চাহিদা– পোস্টের মাধ্যমে এক জটিল প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন অভিনেত্রী।