স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়– ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি পরিচিত ঠোঁটকাটা হিসেবে। যদিও তাঁর পরিচিতদের মতে তাঁর ডাকনামের সঙ্গে নাকি তাঁর আচরণের মিল রয়েছে অনেক। ডাকনাম ‘ভেবলি’ আর বাস্তবিকই তিনি নাকি বেজায় সাদামাঠা। খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল স্বস্তিকার। পরিবারের ইচ্ছেতেই বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী প্রমিত সেন, সঙ্গীতশিল্পী সাগর সেনের ছেলে। এত কম বয়সে বিয়ে, বিচ্ছেদ… জীবনের এতগুলো অধ্যায় পেরিয়ে এসে আজ কি আক্ষেপ হয় স্বস্তিকার? এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে করা হয়েছিল এই প্রশ্ন। স্বস্তিকা যা উত্তর দিলেন তা অবাক করাবে আপনাকে। না তাঁর আক্ষেপ হয় না। কেন? নেপথ্যে রয়েছে এক বিশেষ কারণ। স্বস্তিকার কথায়, “যদি কখনও মনেও আসে যে বিয়ে ছাড়াও তো থাকতে পারতাম। তখনই মনে হয় মেয়েটাকে তো পেতাম না। আমার গোটা অস্তিত্বটাই যে অবলুপ্ত হয়ে যেত। আমি পাগল হয়ে যেতাম।” মেয়ে অন্বেষার সঙ্গে তাঁর বয়সের ফারাক খুব বেশি নয়। কিন্তু দুজনের মধ্যে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। মেয়েকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই ছবি পোস্ট করেন তিনি। মেয়েই তাঁর শক্তি, সে কথা বহু সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি। সিরিয়াল দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার শুরু করেন স্বস্তিকা। এরপর একের পর এক ছবি করেছেন তিনি। কখনও হিন্দি আবার কখনও বাংলা– এই দুই মাধ্যমেই কাজ করেছেন চুটিয়ে। হয়েছেন কমার্শিয়াল ছবির হিরোইন, আবার বেছে নিয়েছেন আর্ট ফিল্মও। তাঁর কেরিয়ার গ্রাফ বেশ উঁচুতে। সম্প্রতি নেটফ্লিক্স সিরিজ ‘কলা’তে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেই সিরিজও বেশ হিট। স্বস্তিকার অভিনয়ও বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
তবে বিতর্ক তাঁকে ঘিরে চলতেই থাকে। গত বছর পুজোর সময়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি শেয়ার করে নেটিজেনদের একটা বড় অংশের রোষের মুখে পড়েছিলেন স্বস্তিকা। যদিও কটাক্ষের পাল্টা উত্তর সে সময়ও দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। স্বস্তিকা বলেছিলেন, “আমি একটা ক্লাবের সাথে কার্নিভ্যালে গিয়েছিলাম, এই প্রথমবার। ৯৫ টার ও বেশি ক্লাব যেখানে অংশগ্রহণ করেছে, সেই সমস্ত প্যান্ডেলে হাজার হাজার মানুষ ঠাকুর দেখতে গেছেন, সেই সমস্ত ক্লাব আমাদের রাজ্যের। কালকেও উপচে পরা ভীড় ছিল। রাজ্যের কি খারাপ অবস্থা সেটা ভেবে কেউ বাড়িতে বসে পুজো বয়কট করেনি”।
যোগ করেছিলেন, “সিএম-এর সঙ্গে দেখা হওয়ায় তাঁকে নমস্কার করে বিজয়া জানানোটা ভদ্রতা, সৌজন্য। আমায় দুটো চকলেট দেওয়াটা ওনার ইচ্ছে, সেটা খেয়ে নেওয়াটা আমার। চকলেট নিয়েছি ইলেকশন টিকিট নয়, চকলেট খেয়েছি মোটা টাকার ঘুষ নয়।” অভিনেত্রীর দাবি, ভবিষ্যতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হলেও তিনি একই ভাবে নমস্কার করবেন। সাফ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিত্বকে তিনি শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু তাই বলে রাজনৈতিক মতোবিরোধিতার সঙ্গে আপস তিনি মোটেও করবেন না। অন্যায় হলে আবারও মুখ খুলবেন। তবে রয়েছে এক ‘কিন্তু’। স্বস্তিকার কথায়, “পৃথিবীর সমস্ত বিষয় নিয়ে আমায় জিহাদ ঘোষনা করতেই হবে নাহলেই আমার মেরুদন্ড ধ্বসে পরবে এমন কোনো দাসখত আমি লিখিনি। আর আমার ধ্যান ধারণা বিবেক বিচার আপনাদের কথায় ওঠা নামা করে না।”