AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Dipankar Dey Exclusive Interview: ‘আমি ওঁর সংসার ভাঙিনি’, দীপঙ্করের প্রথম স্ত্রী সম্পর্কে অকপট দোলন

Exclusive: সম্প্রতি TV9 বাংলাকে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে কিছু মনের কথা অকপট শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী দোলন রায়। নিজের চেয়ে বয়সে অনেকটাই বড় দীপঙ্কর দে'কে বছর খানেক আগে সইসাবুদ করে বিয়ে করেছিলেন দোলন। প্রায় বাবার বয়সি দীপঙ্কর আগেও বিয়ে করেছিলেন এক খ্রিস্টান মহিলাকে। সংসারের কিছু গোপন কথা গভীর রাতে শেয়ার করেছেন দোলন। যে কথাগুলো এতদিন নিজের মধ্যে চেপে রেখেছিলেন অভিনেত্রী।

Dipankar Dey Exclusive Interview: ‘আমি ওঁর সংসার ভাঙিনি’, দীপঙ্করের প্রথম স্ত্রী সম্পর্কে অকপট দোলন
দীপঙ্কর দে এবং দোলন রায়।
| Updated on: Dec 07, 2023 | 10:21 AM
Share

#পর্ব ২

প্রায় বাবার বয়সি এক ব্যক্তিকে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ভালবেসেছেন দোলন রায়। বিয়েও করেছেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ঝড়ে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল দোলনের বাড়িতে। অভিনেত্রীর কণ্ঠেও সেই ঝড়ের তোলপাড়ের স্মৃতি উঁকি দিল, “যখন দীপঙ্করের সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানিয়েছিলাম, বাবা-মা দু’জনেই চিৎকার করে উঠেছিলেন। বাবা যদিও শিল্পী দীপঙ্কর দে’কে আগে থেকেই সমীহ করতেন। কিন্তু মেয়ের স্বামী করবেন কখনওই ভাবেননি (হাসি)। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে, দীপঙ্করও নিজেকে প্রমাণ করেছেন যে, তিনিই আমার আদর্শ স্বামী হতে পেরেছেন। কোনওদিনও বাবা-মায়ের সঙ্গে বচসা হয়নি। জীবনেও তাঁদের অসম্মান করেননি। উল্টে বলেছিলেন, ‘দ্যাখো, আমার মতো একজন বুড়ো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক করলে বাড়ি থেকে তো এমনই প্রতিক্রিয়া পাবে!’ আমার ভাইয়ের সঙ্গে যেমন শুরু থেকেই ওঁর একাত্মতার সম্পর্ক। আমার ভাই ওঁকে পাগলের মতো ভালবাসে এবং তিনিও আমার ভাইকে।”

দীপঙ্করের পরিবারের সঙ্গে দোলনের সম্পর্ক:

আগে একটি বিয়ে রয়েছে দীপঙ্করের। দুই কন্যা সন্তানও আছে। ঘটনাচক্রে সেই দুই কন্যাই দোলনের চেয়ে বয়সে বড়। এমন একটি পরিবারের মেরুদণ্ড হয়ে ওঠা কম কথা নয়। যদিও কঠোর লড়াই করতে হয়েছে। যে লড়াইয়ের দৃশ্যগুলো অনেক রাতে ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে-ফিরে আসে দোলনের কাছে। তিনি বলে চলেন, “আমার সঙ্গে ওদের সম্পর্ক ভালই। আগে কিন্তু ততটা ভাল ছিল না। সময়ই সব ঠিক করে দিয়েছে একে-একে। দীপঙ্করের বড় মেয়ে টিটির (২০২৩ সালের মাঝামাঝি মৃত্যু হয়েছে তাঁর) সঙ্গে আমার সম্পর্ক কোনও কালেই মধুর ছিল না। কিন্তু তাঁর ছোট মেয়ে রুমির সঙ্গে ভালই সম্পর্ক আমার। রুমি আমার চেয়ে এক বছরের বড়। তিনি আমাকে মায়ের জায়গা দিয়েছেন এবং আমরা বন্ধুর মতো। রুমি বলেছেন, ‘তুমি সত্যিই আমার বাবাকে ভালবেসে তাঁর দেখভাল করো। আমার সেটা দেখতে সত্যিই ভাল লাগে।’ একটা কথা আজ স্বীকার না করে পারছি না যে, দীপঙ্করের সঙ্গে যখন তাঁর প্রথম স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি হয়, রুমিই ওঁর মাকে বুঝিয়েছিলেন আমাদের সম্পর্কটার বিষয়ে।”

দীপঙ্করের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দোলনের সম্পর্ক:

দেখতে গেলে দীপঙ্করের প্রথম স্ত্রী দোলনের সতীন। মায়ের বয়সি এক অ্যাঙ্গলো-ইন্ডিয়ান মহিলা। তাঁকেই প্রথমজীবনে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন দীপঙ্কর। সেই মানুষটার সঙ্গে কেমন রসায়ন দোলনের? না-বলা কথাগুলো TV9 বাংলাকে বলেছেন দোলন। থেমে-থেমে যাচ্ছিল তাঁর কণ্ঠ, “টিটির মৃত্যুর পরই প্রথম তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়। তার আগে আমার সঙ্গে তাঁর দেখা-কথা কিছুই হয়নি। আমাদের মধ্যে কোনও তিক্ততা নেই। কারণ আমি তাঁর সংসার ভাঙিনি। দীপঙ্করের সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ির অনেকগুলি বছর পর আমি ওঁর জীবনে আসি। ফলে আমাকে নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যাই নেই। বরং টিটির মৃত্যুর সময় এই দুই বয়স্ক বাবা-মাকে (দীপঙ্কর এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী) আমিই সামলেছিলাম হাসপাতালে। ডাক্তারকে ফোন করে দু’জনের জন্যেই ওষুধ আনিয়ে আগে থেকে খাইয়ে দিয়েছিলাম, যাতে কন্যা হারানোর শোক তাঁদের দু’জনের কারওই কোনও শারীরিক ক্ষতি না করতে পারে।”

নিঃসন্তান দোলনের আক্ষেপ:

এত ঝড় সামলাতে গিয়ে নারী হিসেবে এক সত্ত্বা অপূর্ণ থেকে গিয়েছে দোলনের। তিনি মা হতে পারেননি। সেই আক্ষেপও তাড়া করে বেড়িয়েছে দোলনকে। বলেন, “প্রথম-প্রথম খুব কষ্ট হত। শুরুর দিকে এই অভাবটা আমার সত্যিই ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আমি সেই কষ্টটাও কাটিয়ে উঠেছি।” এবং সেই কষ্ট মিটিয়েছে দোলনের ভাইয়ের ছেলে। যার সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে দোলন বলেন, “তবে আমার ভাইয়ের এক পুত্র সন্তান আছে। ওকে নিয়েই আমাদের কেটে যাচ্ছে দিব্যি। দীপঙ্কর পুঁচকেটাকে ভীষণই ভালবাসেন। দুই ‘শিশু’র মধ্যে রঙ্গরসিকতা দেখলে হাসতে-হাসতে পেটে খিল ধরে যাবে।”

আমিই দীপঙ্করের সায়রাবানু:

নিজেকে সায়রাবানুর জায়গায় বসিয়ে এরপর দোলন বলেন, “মানুষটা আমাকে জীবনে অনেক কিছুই দিয়েছে। ভালবাসা-প্রেম-স্নেহ-আদর। বয়সে বড় হওয়ার কারণে শাসনও করেছেন। আমি সবটাই সাদরে গ্রহণ করেছি। যত গ্রহণ করেছি, একে-অপরের কাছে ততই ঋণি হয়েছি। ওঁর সব দায়িত্ব আমার। আমি চাই মানুষটা সুস্থভাবে থাকুক। জমিয়ে কাজ করুক। অমিতাভ পারলে আমার দীপঙ্কর পারবেন না কেন? দিলীপ কুমার-সায়রাবানু আমার আদর্শ। ঠিক যেভাবে দিলীপ কুমারকে ৯৮ পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলেন সায়রা, আমিও সেটাই চাই। আমি দীপঙ্করের জীবনে সায়রা বানু হয়ে থাকতে চাই… ওঁর সব শোক আমার হোক, পরিবর্তে আমার আনন্দ হোক ওর… এর চেয়ে বেশি আমার চাহিদা নেই।”

সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু ছবিতে ইতিমধ্যেই কাজ করে ফেলেছেন দীপঙ্কর। চলতি কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্য়ালে ৭ ডিসেম্বর দেখানো হবে তাঁর অভিনীত ছবি ‘বিজয়ার পরে’। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘অসুখ’-এর ডাবিং বাকি। নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায়ের ‘দাবাড়ু’তেও অভিনয় করেছেন। আর দোলন? তিনিও ব্য়স্ত আছেন সিরিয়ালের কাজ নিয়ে।