এবারে গণেশ চতুর্থীতে আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো। করোনা সময় কাটিয়ে দীর্ঘ দু’বছর সব কিছু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে। আর ফিরেছে দ্বিগুণ আনন্দকে সঙ্গী করে। গত দু’বছরে মানুষ যা করতে পারেননি, তাই এবার তাঁরা আঁশ মিটিয়ে সবটাই পালন করছেন। এই আনন্দ করতে গিয়ে কারও-কারও ক্ষেত্রে নিরানন্দও ডেকে আনছে। এই নিরানন্দে থাকা প্রাণীরা নিষ্পাপ পথ পশু। যে কোনও বড় উৎসবে বাজি ফাটানো হয়ে ওঠে উদযাপনের মস্ত বড় অংশ। এই বাজি ফাটানোর ফলে অতিরিক্ত শব্দ তৈরি হয়, যা পশুদের কাছে ভয় তৈরি করে। তারা নির্বাক প্রাণী, যদিও তাঁদের শ্রবণশক্তি আমাদের মানুষদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। তাই যে কোনও আওয়াজ আমাদের কান পর্যন্ত আসার অনেক আগে চলে যায় এই প্রাণীদের কানে। আমরা যতটা না আওয়াজ শুনি, তার চেয়ে অনেকবেশি আওয়াজ শোনে এই প্রাণীরাই। এবারে মুম্বইয়ে গণেশ চতুর্থীতে যেভাবে বাজি ফাটানো হয়েছে, তাতে ভয়ে রাস্তায় বের হয়নি কুকুর-বিড়ালরা। তারা লুকিয়ে পড়েছে। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো মারফত তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী কিটু গিডওয়ানি। কেবল তুলেই ধরেননি, তীব্র নিন্দা করেছেন ঘটনার। আঙুল তুলেছেন ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির দিকে। তাঁকে কলকাতা থেকে সমর্থন জানিয়েছেন আর এক পশুপ্রেমী অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
কিটু তাঁর ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, “আমি আমার রাস্তার বিড়ালদের রোজ খেতে দিই। ওদের কাউকে আজ দেখতে পাইনি। ওরা কেউ বাইরে বের হয়নি। কেন না চারদিকে প্রচুর বাজি ফাটছে। আওয়াজ় হচ্ছে খুব। ওরা খুব ভয় পেয়েছে। আমি লজ্জিত। আপনারা কি জানেন, এই ধরনের ঘটনায় কত বিড়াল ছানা তাঁদের মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যায়। ভয়ে লুকোতে শুরু করে যেখানে-সেখানে। গাড়ির চাকার নীচে লুকোয়। তারপর গাড়ি চাপা পড়ে মারা যায়। এটা কি আমাদের সভ্যতা। আমরা যে ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে এত বড়-বড় কথা বলি, ঈশ্বরের আরাধনা করি, এটা তা হলে কী! গণেশজি কি এসব দেখলে খুশি হবেন বলুন!”
কিটুর এই ভিডিয়োটি নিজের ফেসবুকে ওয়ালে শেয়ার করেছেন শ্রীলেখা মিত্র। কিটুর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “কিটু গিডওয়ানি বলছেন, শুনুন দয়া করে। আপনারা তো ভাবেন আমরা পাগল। নির্বাক বন্ধু ও সন্তানদের জন্য আমরা পাগল। আমার দয়া হয় তাঁদের জন্য যাঁদের মধ্যে এই পাগলামি নেই।”