তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেবের একটা ছোট্ট টুইট। আর তা নিয়ে আপাতত উত্তাল রাজ্য রাজনীতি থেকে শুরু করে টলিপাড়া। দেব ও বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর ছবি ‘প্রজাপতি’ সরকারি প্রেক্ষাগৃহে জায়গা পায়নি। কেন? নেপথ্যে কি রয়েছে রাজনৈতিক কারণ? মিঠুন চক্রবর্তীর রাজনৈতিক পরিচয়ই কি দায়ী এর পিছনে? দেবের রাজনৈতিক পরিচয় কি এ ক্ষেত্রে ব্যাকফুটে? এ নিয়ে যখন চলছে একের পর এক চুলচেরা বিশ্লেষণ, তখন টলিউডের অধিকাংশই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। হাতেগোনা মুখ খুলেছেন যারা তাঁদের মধ্যে একজন কৌশিক সেন। TV9 Bangla-কে তিনি বলেন, “প্রজাপতি নন্দনে মুক্তি না পাওয়ার মধ্যে কোনও রাজনীতি রয়েছে কিনা জানি না, তবে সন্দেহ তো থেকেই যায়।” কৌশিক টেনে এনেছেন ‘অপরাজিত’ ছবির কথা। অনীক দত্তের ওই ছবিও নন্দনে জায়গা পায়নি। সেখানে এক বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষ। অন্যদিকে অনীক বারংবার শাসক দলের নানা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।
কৌশিক যোগ করেন, “মিঠুন বাবু ও দেবের রাজনৈতিক পরিচয় বাদ দিয়েও তাঁদের অন্য পরিচয় রয়েছে। তাই সেই পরিচয়ের খাতিরেই নন্দনে ছবিটা স্ক্রিনিং হলে ভালই হত। সেদিক দিয়ে নিন্দে জানাচ্ছি।” তাঁর সংযোজন, “পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনীতি বহুকাল ধরেই হয়েছে। বাম আমলে কিছু হত না, এখন হচ্ছে… এটা বলা ঠিক নয়। আমার প্রশ্ন হবে কেন? অতীত নিয়ে ঘাঁটতে চাই না। কোনও রাজনৈতিক দলই দাবি করতে পারে না যে আমাদের সময় স্বচ্ছ ছিল…কিন্তু এখনও যে হচ্ছে, যা হচ্ছে, সেটা নিয়েই তো আলোচনা করব। আর যা হচ্ছে তা মোটেও ঠিক নয়।”
প্রসঙ্গত, নন্দনে ছবি দেখাতে না পারায় দেব টুইটে লিখেছিলেন, “এইবার তোমাকে মিস করব ‘নন্দন’। কোনও ব্যাপার না। আবার দেখা হবে। এখানেই গল্পের শেষ।” কিন্তু গল্পের যে শেষ হয়নি সে আঁচ পাওয়া গিয়েছিল গতকাল অর্থাৎ শনিবার রাতেই। নন্দনে ‘প্রজাপতি’ শো না পাওয়ায় শাসকদলকে কটাক্ষ করেছিলেন বিজেপি নেত্রী কেয়া ঘোষ। তৃণমূলকে প্রতিহিংসা পরায়ণ দল বলে আক্রমণ করেন। দেবকে উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি নেত্রী লেখেন, “যে দলের আপনি সাংসদ, সেই দলটি কি ভয়ানক প্রতিহিংসাপরায়ণ এবার বুঝলেন তো? আপনার দলে শিল্পীর ‘রং’ দেখে তবেই তার যোগ্যতার বিচার হয়, তাঁর প্রতিভা দেখে নয়। আর তাই মিঠুন চক্রবর্তী-কে বাদ দেওয়া হয় ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে, আর তাঁর অভিনীত সিনেমা বাদ দেওয়া হয় ‘নন্দন’ থেকে।” আজ অর্থাৎ রবিবার দেবের জন্মদিন। বিশেষ দিনে যদিও সঙ্গী বিতর্ক। দেব যদিও টুইট করেই চুপ, জল কোনদিকে গড়ায় সেটাই দেখার।