টলিউড অভিনেতা রজতাভ দত্ত বরাবরই তাঁর অভিনয়ের দাপটে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়ে থাকেন। পর্দায় চরিত্রের উপস্থাপনায় নিজের একশো শতাংশ উজার করে দেওয়ার চেষ্টাও করে থাকেন তিনি। কখনও সাদামাটা ক্লার্কের চরিত্রে অভিনয়, কখনও আবার খলনায়ক লুকে তিনি বারে-বারে সিনেপাড়ায় চর্চিত। ছবিতে তিনি থাকা মানেই যেন দর্শকদের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। তবে বর্তমানে তাঁর জীবন যতটা রঙিন ছোটবেলায় ঠিক ততটাই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল অভিনেতাকে। সকলের জীবনেই কিছু না কিছু এমন কঠিন অধ্যায় আসে, যা তাঁদের জীবনটাকেই পাল্টে দিয়ে যায়। কেউ তা প্রকাশ্যে আনেন কেউ আবার তা গোপনেই রেখে দেন। সম্প্রতি রজতাভ দত্তের এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতার জীবনে ঘটা এমনই এক ঘটনা দর্শকের সামনে উঠে আসে।
সন্দেশ টিভি-র এক ভিডিয়ো-সাক্ষাৎকার সিরিজ় ‘সোল কানেকশন’-এ উপস্থিত হয়ে নিজের মনের কথা উজার করে জানান অভিনেতা। ভাল খারাপ মিলিয়েই কেটেছে তাঁর ছেলেবেলা। তবে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর অর্থ হঠাৎ করে মাথার ওপর থেকে ছাদ চলে যাওয়া। কীভাবে সামলে ছিলেন অভিনেতা? রজতাভ বলেন, ”ওই পরিস্থিতিতে দুটো প্রান্তিক ব্যাপার হতে পারত। এক প্রথম দারিদ্রতা দেখলাম। ওই ঘটনার কিছুদিন পরেই আমার পাড়ায়, যেখানে আমি গান শিখতাম, সেখানে এক বন্ধু ছিল রূপক চক্রবর্তী, তারও বাবা মারা যায়। এবং আমরা বলতে থাকি আমরা বাবা হারা ক্লাবের সদস্য। আমরা দুজনে মিলে প্রচুর কেওড়াতলা শ্মশানে গিয়ে বসে থাকতা। কত যে বডি ঢুকছে। ওতো শোকের উদযাপন হচ্ছে, তার মাঝখানে থাকতে কোথাও যেন একটা কমফোর্ট জোন তৈরি হতো, এই কষ্টটার মধ্যে আমি একা নই। এটা এর আগেও বহুবার হয়েছে। এর পরেও হবে এবং বিভিন্নভাবে একটা জাগতিক সুঁতো কোথাও কেটে যায়।”
রজতাভ আরও বলেন, ”সেই সময়টা থেকে আমার মনে হয়, আমরা যে প্রত্যেকেই মনে করি পৃথিবী আমায় কেন্দ্র করে ঘুরছে, আমি না থাকলে সব থেমে যাবে। একটা পাতাও এদিক ওদিক হয় না। সেই বোধটা তৈরি হয়ে যায় আজীবনের জন্যে। ফলে আর কোনও শোকই আমায় পরবর্তীতে নাড়া দেয় না। কেবল শোক নয়, কোনও সাফল্যও নাড়া দেয় না।”