AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Anamika Saha: বাবার দেওয়া ঘড়িটা তুলতে গেলে জ্ঞানেশদা বলেছিলেন গালে একটা থাপ্পড় মারবেন: অনামিকা ‘বিন্দুমাসি’ সাহা

Anamika Saha: অনামিকা সাহা যখন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন, তাঁরও অনেক হতাশাজনিত সমস্যা তৈরি হয়েছিল। TV9 বাংলার সামনে অকপট অনামিকা কী বললেন?

Anamika Saha: বাবার দেওয়া ঘড়িটা তুলতে গেলে জ্ঞানেশদা বলেছিলেন গালে একটা থাপ্পড় মারবেন: অনামিকা 'বিন্দুমাসি' সাহা
'বিন্দু মাসি' অনামিকা সাহা।
| Updated on: Jul 01, 2022 | 12:32 AM
Share

স্নেহা সেনগুপ্ত

গত মে মাসে পরপর অভিনেত্রী ও মডেলদের মৃত্যু চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কলকাতায়। প্রশ্ন উঠেছে অল্পবয়সী তথা উঠতি অভিনেতা-অভিনেত্রী-মডেলদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে। সমস্যা নির্মূল করতে রাজ্যের মহিলা কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে টলিপাড়ার শুটিং ফ্লোরে গিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের ওয়ার্কশপ করাবে। মঙ্গলবার (২৮.০৬.২০২২) টলিপাড়ার দাসানি স্টুডিয়োয় আয়োজিত প্রথম মানসিক স্বাস্থ্যের ওয়ার্কশপে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শিল্পী ও কলাকুশলীদের অনেকেই খোলাখুলিভাবে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন মনোবিদদের সামনে। ওয়ার্কশপে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শিল্পী অনামিকা সাহা। তিনি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন, তাঁরও অনেক হতাশাজনিত সমস্যা তৈরি হয়েছিল। TV9 বাংলার সামনে অকপট অনামিকা কী বললেন?

অনামিকা উবাচ: “আমাদের সময় এইসব নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা ছিলই না। তবে লীনা (প্রযোজক ও রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়) একটা কথা বলল, সেটা আমার খুবই ভাল লেগেছে। এখন সবাই অডিশন দিচ্ছে। কেউ পাশ করছে না, কেউ করছে। খালি একটা কথা মনে হল: আমাদের সময় আমরা সবই দেখে শিখেছি। বড়-বড় শিল্পীদের কাজ দেখার জন্য অপেক্ষা করতাম। ফ্লোরে বসতে দিত না। পরিচালকের পায়ে ধরতাম। বলতাম, “আমি একটু দেখব, কীরকম করে ওঁরা অভিনয় করেন।” না হলে আমরা শিখতাম কীভাবে। জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায় আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলেন। ওনার ‘ফেরারি ফৈজ’ নাটকে আমি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছিলাম। উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ করেছিলাম সেই সময়। আমার বাবা বাংলাদেশে থাকতেন। কলেজে যাব বলে তিনি আমাকে সোনার ব্যান্ড দেওয়া ঘড়ি পাঠিয়েছিলেন। সেই ঘড়ি পরেই রিহার্সাল দিতে যাই। রিহার্সাল রুমে সংলাপ বলতে-বলতে হাত থেকে ঘড়িটা খুলে পড়ে যায়। আমি সংলাপ থামিয়ে ওটা তুলতে যাই। আমাকে জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায় এসে বললেন, “টেনে গালের মধ্যে একটা থাপ্পড় মারব…”। আর বলেছিলেন, “শোনো, অভিনয় করতে গেলে আর কোনও দিকে খেয়াল রাখবে না।” বলেছিলাম, “আসলে আমার বাবা নতুন ঘড়ি পাঠিয়েছেন।” এই কথা শুনে আমার ঘড়িটা ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন সোফায়।

তো আমরা এই ভাবে, এই পরিবেশের মধ্যে অভিনয় শিখেছি। এখনকার দিনে তো এই শিক্ষা নেই। এখন সব জায়গায় স্কুল তৈরি হচ্ছে। কিন্তু ওটা কি শিক্ষা হচ্ছে? কাজেই নিজে থেকে চেষ্টা না-করলে, কোনও কিছুই হবে না। এখন পজ়িটিভ থিঙ্কিং, নেগেটিভ থিঙ্কিং নিয়ে কত্ত কথা হয়। আমাদের মধ্যেও কিন্তু নেগেটিভ থিঙ্কিং ছিল। খালি মনে হত জীবনে কিছুই করে উঠতে পারব না। তবে আমরা সবটাই সামলে উঠতে পেরেছি। যখন ‘ঘাতক’ ছবিতে আমাকে প্রধান খলনায়িকা ‘বিন্দুমাসি’র চরিত্র করতে বলা হল, আমি ভয়ে পেয়ে গেলাম। কারণ আমাকে তামিল ছবিটা দেখানো হয়েছিল। যে ভদ্রমহিলা চরিত্রটা করেছিলেন অসাধারণ… ভাবলাম, আমি এরকম চোখ-মুখ করতে পারব তো?

ছবিটা হরনাথ চক্রবর্তীর পরিচালনা করার কথা ছিল। ভেঙ্কটেশ ছিল প্রযোজক। হরদা আমাকে ছবিটা ভাল করে দেখে নিতে বলেছিলেন। আমি হরদাকে বলেই দিয়েছিলাম, এই চরিত্র আমার দ্বারা হবে না। হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। পরবর্তীকালে ওই ছবিটাই সুরিন্দর ফিল্মস তৈরি করল। স্বপন সাহা ছিলেন পরিচালক। আমিই ‘বিন্দুমাসি’র চরিত্রে অভিনয় করলাম। আজও গ্রামেগঞ্জে আমি ‘বিন্দুমাসি’ হয়েই আছি। কেউ ‘অনামিকাদি’, ‘অনামিকা মাসিমা’, ‘অনামিকা কাকিমা’ বলেন না। সবাই বলেন ‘বিন্দুমাসি’। এখন নিজেই ভাবি, আমি কী করে করলাম এইসব চরিত্র। সুতরাং, নিজেকে সেইভাবে তৈরি করতে হয়।

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ওয়ার্কশপের চিন্তা খুবই সুন্দর। আমাদের মানসিক দিক যদি ঠিক থাকে, তা হলে সব ঠিক থাকে। সেটার জন্য এই যে প্রচেষ্টা রাজ্যের মহিলা কমিশন করেছে, সত্যিই প্রশংসনীয়। ভাবনা খুবই সুন্দর।”